পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

Cal High Court: আদালতের নির্দেশের অবমাননা, রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে হাজিরার নির্দেশ হাইকোর্টের - প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ

Cal High Court Issued Rule Against State Election Commissuoner:পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে কলকাতা হাইকোর্টে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছিল ৷ সেই মামলার দীর্ঘ শুনানির পর হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, ভোটকে ঘিরে আদালতের নির্দেশ অমান্য করা হয়েছে। আর সে কারণেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে রুল জারি করল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ ।

Etv Bharat
Etv Bharat

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Oct 13, 2023, 2:45 PM IST

Updated : Oct 13, 2023, 4:13 PM IST

নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে রুল ইস্যু হাইকোর্টের

কলকাতা, 13 অক্টোবর: রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আদালতের নির্দেশ অমান্য করা হয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে কলকাতা হাইকোর্টে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছিল ৷ সেই মামলার দীর্ঘ শুনানির পর হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, ভোটকে ঘিরে আদালতের নির্দেশ অমান্য করা হয়েছে। আর সে কারণেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে রুল জারি করল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ ।

আগামী 24 নভেম্বর এই বিষয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহাকে আদালতে এসে উত্তর দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবাজ্ঞানম ও বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ। কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা থেকে শুরু করে একাধিক বিষয়ে হাইকোর্ট একের পর এক নির্দশ দিলেও নির্বাচন কমিশনার তা পালন করেননি বলে অভিযোগ ওঠে। সেই বিষয়ে দীর্ঘদিন সওয়াল জবাবের পর হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের মনে হয়েছে এই অভিযোগ ভিত্তিহীন নয়। তাই নির্বাচন কমিশনারকে আগামী 24 নভেম্বর আদালতে এসে এই সব প্রশ্নের উত্তর পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট ৷

পঞ্চায়েত নির্বাচনে আদালতের একের পর নির্দেশ রাজ্য নির্বাচন কমিশনার অমান্য করেছেন দাবি করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, অধীর চৌধুরী-সহ অন্যান্য মামলাকারীরা। সেই মামলার দীর্ঘ শুনানি হয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। শুভেন্দু অধিকারীর তরফে আইনজীবী গুরুকৃষ্ণ কুমার বলেন, "শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার কথা ছিল। সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। কিন্তু কোনও নির্দেশই সঠিক ভাবে মানা হয়নি। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটলেও আদালতের নির্দেশ মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে আদালতের নির্দেশের যে স্পিরিট তাকে অগ্রাহ্য করা হয়েছে।"

আদালতের নির্দেশ থাকা সত্বেও প্রত্যেক বুথে একজন করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা দেওয়া হয়নি। বিএসএফের আইজি যে রিপোর্ট দিয়েছেন তাতে পরিস্কার ভোটের দিন গোটা রাজ্যজুড়ে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে সন্ত্রাস চালানো হয়েছে। নির্দেশের মূল জায়গাগুলোই পালন করা হয়নি। সংবেদনশীল বুথে এবং এলাকায় বাহিনী দেওয়া, তাদের আনুসঙ্গিক সহযোগিতা দিতে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। কিন্তু সেই নির্দেশকে একেবারেই মান্যতা দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। পালটা সুপ্রিমকোর্টে আপিল করে রাজ্য। সেখানে তাদের বক্তব্য ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করারই প্রয়োজন নেই। বাহিনী মোতায়েন করার বিষয়ে মুল্যায়ন করতে নির্দেশ দিলেও তা করা হয়নি সময় মতো। বাধ্য হয়ে আদালত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে নির্দেশ দেয়। তারপরও সেই বাহিনীকে তাদের কাজ করতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করে বিরোধীরা।

রাজ্য প্রত্যেকবার কমিশনের নির্দেশকে হালকাভাবে নিয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী আদালতের নির্দেশ মতো মোতায়েন না করে বিষয়টিকে আরও জটিল করা হয়েছে। নির্দেশ মত ইতিবাচক পদক্ষেপ করার ক্ষেত্রে প্রত্যেকবার দেরী করা হয়েছে। এমনকি পর্যবেক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রেও আদালতের নির্দেশ ঠিকঠাক মানা হয়নি। 800 কোম্পানির বেশি বাহিনী চাওয়া হল অথচ কোনও পরিকল্পনা নেই কমিশনের। রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে একাধিক বার তার গা ছাড়া মনোভাবের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে আদালত । তা সত্ত্বেও পরে কমিশন নিজেদের শোধরাবার প্রয়োজন মনে করেনি। আদালত মনে করেছে, এই সামগ্রিক বিষয়গুলি আদতে আদালতের নির্দেশ অবমাননা করা। একই সঙ্গে, আদালতের পর্যবেক্ষণ, একটা সাংবিধানিক সংস্থা স্বাধীন ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার বদলে সম্পুর্ণ রাজ্য সরকারের কথা মতো চলেছে।

উল্টোদিকে বর্ষীয়ান আইনজীবী পিএস রামন এদিন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের হয়ে সোয়াল করতে গিয়ে বলেন, "আদালতের নির্দেশ সময় সময় পালন করা হচ্ছে কি না জানতে চেয়ে আদালত বার বার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের হলফনামা চেয়েছে । আদালতে রেকর্ড রয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যবহার করা নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও রাজ্য সব সময় চেষ্টা করেছে আদালতের নির্দেশ পালন করার। কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা হয়েছে। কিন্তু সেটা একতরফা নয়।"

আরও পড়ুন: সিভিক ভলান্টিয়ারদের বোনাসে বৈষম্যের অভিযোগ শুভেন্দু অধিকারীর

রাজ্যের এডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় যুক্তি দেন, "রুল ইস্যু করার আগে আদালতের উচিত সব পক্ষের বক্তব্য ভালো করে শুনে বিচার করা। নির্বাচনে আদালত যতগুলো নির্দেশ দিয়েছে কমিশন সবগুলো পালন করেছে। একটাও অমান্য করেছে বলা যাবে না। ফলে আলাদা করে রাজ্যের ভুমিকা নিয়ে অভিযোগ ওঠার কথা নয়। বিএসএফ আইজি যে অভিযোগ করেছে তা ভিত্তিহীন।" সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর এদিন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়ে জানিয়েছে, আদালতের নির্দেশ অমান্য করা হয়েছে পঞ্চায়েত ভোটের ক্ষেত্রে।

Last Updated : Oct 13, 2023, 4:13 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details