কলকাতা, 6 ডিসেম্বর: মলদ্বারে লুকনো রয়েছে প্রায় সাড়ে 42 লাখ টাকার সোনা । বাংলাদেশ থেকে ভারতে আগত সন্দেহভাজনের উপর তল্লাশি চালায় বিএসএফ । সেই সময় হাতেনাতে ধরে পড়েন পাচারকারী । উত্তর 24 পরগনার বনগাঁ পেট্রাপোল সীমান্তের ঘটনা । বাজেয়াপ্ত সোনা ইতিমধ্যে শুল্ক দফতরে জমা দেওয়া হয়েছে । মঙ্গলবার রাতে ধৃত পাচারকারীকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার পর গ্রেফতার করা হয় । ধৃত জানিয়েছে, আবুধাবি থেকে এই সোনা বাংলাদেশ ঘুরে ভারতের পাচার করা হচ্ছিল ।
বিএসএফ সূত্রে খবর, বাংলাদেশ থেকে আগত যাত্রীদের আইসিপি পেট্রাপোলের যাত্রী টার্মিনালে আগতদের রুটিন তল্লাশির সময় ভারতীয় পাসপোর্ট বহনকারী মোহাম্মদ কুন্হি আদুকাথবাইল কোলিক্কারা নামে একজনকে ফ্রিস্কিং পয়েন্ট আটকানো হয় । মেটাল ডিটেক্টর শরীরের নীচের অংশে একটি ধাতব পদার্থের উপস্থিতি নির্দেশ করে । জওয়ানরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপক তল্লাশির জন্য বছর 63-র ওই বৃদ্ধকে নিয়ে যায় । তার মলদ্বার থেকে নলাকার আকারে 2 পিস সোনা (পেস্ট আকারে) সহ একজন ভারতীয় চোরাকারবারীকে গ্রেফতার করা হয় । বাজেয়াপ্ত সোনার ওজন 666 গ্রাম । যার আনুমানিক বাজারমূল্য 42 লাখ 49 হাজার 271 টাকা ।
জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত কেরলের বাসিন্দা জানায়, কয়েকদিন আগে আবুধাবিতে সোনার বাহক হিসাবে চাকরির জন্য ইব্রাহিম (তার আত্মীয়) নামে একজন তাঁকে 10 হাজার টাকার প্রস্তাব দিয়েছিলেন । তিনি সেই প্রস্তাবটি গ্রহণ করেছিলেন । এরপর তিনি আবুধাবিতে যান । সেখানে এক অজানা ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করেন । ওই ব্যক্তিই পেস্ট আকারে সোনা-সহ 2টি নলাকার আকৃতির প্যাকেট হস্তান্তর করেন । চালানটি পাওয়ার পর, তিনি সোনা দুটি তাঁর পায়ুপথে লুকিয়ে রাখেন । এরপর সোনার চালান নিয়ে আবুধাবি থেকে বাংলাদেশ (ঢাকা) হয়ে ভারতে যাচ্ছিলেন । ঢাকায় পৌঁছে তিনি বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্তে বাসের রুট গ্রহণ করেন । কিন্তু আজ তিনি যখন আইসিপি পেট্রাপোলে নিরাপত্তা চেকিং পয়েন্ট পার হওয়ার চেষ্টা করছিলেন । তখনই তাকে আটক করা হয় ।
এই ঘটনায় দক্ষিণবঙ্গ বিএসএফের জনসংযোগ আধিকারিক ডিআইজি একে অর্ঘ্য এই সাফল্যে খুশি প্রকাশ করে জানান, কুখ্যাত চোরাকারবারিরা গরিব ও নিরীহ মানুষকে অল্প পরিমাণ অর্থের প্রলোভন দিয়ে ফাঁদে ফেলে । কুখ্যাত চোরাচালান চক্র সরাসরি চোরাচালানের মতো অপরাধে জড়িত নয় ৷ তাই তারা গরিব মানুষকে টার্গেট করে । সীমান্তে বসবাসকারী লোকদের কাছে আবেদন, যদি সোনা চোরাচালান সম্পর্কিত কোনও তথ্য পান তবে বিএসএফের বর্ডার সাথী হেল্পলাইন নম্বর 14419-এ তা জানান । এর পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গ সীমান্ত আরও একটি নম্বর 9903472227 রয়েছে । স্বর্ণ চোরাচালান সংক্রান্ত তথ্য হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ বা ভয়েস মেসেজও পাঠানো যেতে পারে । সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রদানকারী ব্যক্তিকে একটি উপযুক্ত পুরস্কারের পুরস্কৃত করা হবে এবং তার পরিচয় গোপন রাখা হবে ।