কলকাতা, 11 জুন : লোহার আঁকশি দিয়ে মর্গ থেকে হিড়হিড় করে টেনে বের করা হচ্ছে একের পর এক পচা গলা মৃতদেহ । তারপর সেগুলি তোলা হচ্ছে কলকাতা পৌরনিগমের একটি গাড়িতে । এরকমই একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সোশাল মিডিয়ায় । আর যেটা নিয়ে এখন রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে রাজনৈতিক মহলে । রাজনৈতিক চাপানউতোর বাড়িয়ে দিয়েছে এই বিষয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের একের পর এক টুইট । বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও ।
ভিডিয়োটি নিয়ে দাবি করা হয় যে, মোট 11 জনের মৃতদেহ কলকাতা পৌরনিগমের ওই গাড়িতে তোলা হয় । ওই মৃতদেহগুলি কোরোনা আক্রান্তদের । তাই চুপিসারে সেগুলিকে NRS থেকে দাহ করার জন্য বোড়াল মহাশ্মশানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে । যদিও তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ওই মৃতদেহগুলি কোরোনা আক্রান্তদের নয় ।
ভিডিয়োটি নিয়ে ইতিমধ্যে একের পর এক টুইট করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় । তিনি টুইটারে লেখেন, "মৃতদেহগুলিকে যেভাবে বের করা হচ্ছিল তা বেদনাদায়ক । ঘটনাটি নির্মম, অবর্ণনীয় ও অসংবেদনশীল ।"
মৃতদেহগুলি যাঁদের কোন হাসপাতালে তাঁদের কীভাবে চিকিৎসা হয়েছে, মৃত্যুর কারণ-সহ যাবতীয় তথ্য জানতে চেয়ে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উল্লেখ করেও একটি টুইট করেন রাজ্যপাল । অপর একটি টুইট করে তিনি জানান, স্বরাষ্ট্র সচিবের এই বিষয়টি নিয়ে উত্তর দিয়েছে । আর তাতে কার্যত স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে যে, মৃতদেহগুলি সৎকারের কাজে অব্যবস্থা ছিল । এরপরেও তিনি ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োটি নিয়ে একাধিক টুইট করেন ।
রাজ্যপালের ধারাবাহিক টুইটের পরই নড়েচড়ে বসে NRS কর্তৃপক্ষ । আভ্যন্তরীণ তদন্তে দেখা যায়, ভিডিয়োটি ভিত্তিহীন । শুধু তাই নয়, NRS-এর অধ্যক্ষ সাফ জানিয়ে দেন, ভিডিয়ো ভুয়ো । তারপরেই লালবাজারে অভিযোগ দায়ের করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ ।
তদন্ত শুরু করার পর আজ কলকাতা পুলিশের টুইটারে জানানো হয়, ভিডিয়োর যে মৃতদেহগুলিকে মর্গ থেকে গাড়িতে তোলা হচ্ছে তাঁরা কেউ কোরোনায় আক্রান্ত ছিলেন না । তবে, মৃতদেহগুলি অজ্ঞাত পরিচয় । বিষয়টি নিশ্চিত করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর । যারা এই ভিডিয়োটিকে নিয়ে ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে । কিন্তু ভিডিয়োটিতে মৃতদেহগুলিকে যেভাবে বের করে আনতে দেখা গেছে তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি কলকাতা পুলিশের তরফে ।