কলকাতা, 3 সেপ্টেম্বর : বাড়িতে রয়ে গেছে বৃদ্ধ দাদু-ঠাকুমার ওষুধ ৷ বের করতে আনতে পারেনি মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী বোনের বই ৷ সঙ্গে রয়েছে বছর পাঁচেকের ভাই ৷ আর তাদের নিয়ে অথৈ জলে পড়েছে বছর 20-র প্রিয়াঙ্কা দত্ত ৷ পরিবার সহ হোটেলে উঠলেও দুশ্চিন্তায় ঘুম উড়েছে বেথুন কলেজের ফার্স্ট ইয়ারের ছাত্রীর ৷
শনিবার বউবাজারের দুর্গা পিতুরি লেন ও স্যাঁকরা পাড়া লেনের কয়েকটি বাড়িতে ফাটল দেখা যায় । শনিবার রাত থেকেই সেই বাড়িগুলির বিভিন্ন অংশ ভেঙে পড়তে শুরু করে । ধসে পড়ে কয়েকটি বাড়ি । ক্ষতিগ্রস্ত হয় আরও অনেক । ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায় । জরুরি ভিত্তিতে খালি করে দেওয়া হয় বাড়িগুলি । অনেকেরই ঠাঁই হয় হোটেলে । এমনই একজন প্রিয়াঙ্কা ৷ রবিবার তাদের স্যাঁকরা পাড়া লেনের বাড়ির ভিতরে তিন ইঞ্চি ধসে গিয়েছিল ৷ গতকাল আরও পাঁচ ইঞ্চি জায়গা বসে গেছে ৷ ভেঙে গেছে বাড়ির ফ্লোর ৷ প্রাণভয়ে উঠতে হয়েছে হোটেলে ৷ তবে, সেখানেও ঠিকভাবে পরিষেবা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ প্রিয়াঙ্কার ৷ তার বক্তব্য, "আমাদের গাদা ঘরে ফেলে দেওয়া হয়েছে ৷ 15 জনকে তিনটি ঘরে রাখা হয়েছে ৷ তাহলে বুঝতেই পারছেন, কীভাবে থাকতে হচ্ছে ? " হোটেল থেকে যে খাবার দেওয়া হচ্ছে, তাও নিম্নমানের বলে অভিযোগ প্রিয়াঙ্কার ৷ সে বলে, "হোটেলের খাওয়া-দাওয়া ভালো নয় ৷ আমার ভাই-বোন খাবার খেতে পারছে না ৷ অসুস্থ হয়ে পড়েছে ৷ " বাড়িতে বৃদ্ধ দাদু-ঠাকুমা ছাড়া আর কেউ নেই ৷ অভিভাবক বলতে সেই একা ৷ অথচ মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ ৷ তার বক্তব্য, "মেট্রো কর্তৃপক্ষ পালিয়ে বেড়াচ্ছে ৷ সকালে একটা কাগজ দিয়েছে ৷ তাতে কোনও স্ট্যাম্প বা কিছু নেই ৷ তবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে লেখা আছে ৷ কিন্তু, সাদা কাগজে বিশ্বাস করে কীভাবে এগিয়ে যাই বলুন তো?"