কলকাতা, 18 ফেব্রুয়ারি: ভারতীয় গণনাট্য সংঘের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বিজন ভট্টাচার্য (Bijon Theater)। তাঁর স্মৃতিতে নামাঙ্কিত উত্তর কলকাতার হাতিবাগান এলাকার নাট্য পাড়ার নাট্যমঞ্চ বিজন থিয়েটার । 34 বছর ধরে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছিল ৷ সেবই এখন স্মৃতি ! ভেঙে ফেলা হল বিজন থিয়েটর ৷ সেই জমিতেই উঠবে এবার মাথা তুলে দাঁড়াবে বহুতল ৷ নাট্য জগতের বহু মানুষের কাছেই যা বেদনাদায়ক।
একে একে সব স্মৃতি যেন বিলীন হচ্ছে । এক সময় এই চত্ত্বরে ছিল একাধিক নাট্যমঞ্চ ও প্রেক্ষাগৃহ । হাতিবাগান, শ্যামবাজার, গোয়াবাগান এলাকা জুড়ে ছিল একাধিক থিয়েটার । শ্রী, উত্তরা, রাধা, রঙমহল, বিশ্বরূপা, দর্পনা সব একে একে বিভিন্ন ডিপার্টমন্টাল স্টোর, বহুতল মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে । হয়েছে বিকিকিনির বাজার । এখন সেখানে চলছে স্টার থিয়েটার হল, মিনার, টকিশো হাউজ । বন্ধ হয়েছে রঙ্গনা, শর্কারিনা থিয়েটার । বিজন থিয়েটারের গেটেও অনেকদিন আগেই তালা ঝুলছে ৷ পৌরসভায় বিপুল পরিমাণ কর বাকি পড়ে গিয়েছিল ৷ এবার সেই বিজন থিয়েটার ভেঙে গুড়িয়ে গেল ।
বিজন থিয়েটরের ইতিহাস :বিজন থিয়েটর তৈরির আগে এখানে খাটাল ছিল ৷ 1989 সাল নাগাদ এই জমিতে গড়ে উঠেছিল বিজন থিয়েটার । সায়ক নামের একটি নাটকের দল এই থিয়েটার হলের দেখাশোনা করত । তাঁদের তত্ত্বাধানে চলত এই হল । তবে পরবর্তী সময় লাভ না-হওয়াতে অর্থ কষ্টের মুখে জেরবার হতে হয় এই নাট্যদলকে । কর্মীদের বেতন থেকে শুরু করে বিদ্যুতের খরচও চালানো যেত না এই থিয়েটার হলে এতটাই কম আয় হত ৷ তবে হাল ফেরাতে মাঝেমধ্যে অভিনেতা ও নাট্যকার সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এই হলে তাঁর দলের নাটক মঞ্চস্থ করতেন । তবু লাভের মুখ দেখেনি হলটি । ফলে বারবার টালমাটাল অবস্থার শিকার হতে হয় । এরপর নাটকের দল সায়ক, অন্য থিয়েটার, শোহান ও থিয়েটার ওয়ার্কশপ এই চারদল মিলিতভাবে চালানোর চেষ্টা করে । সেই অভিপ্রায় ব্যর্থ হয় । এই হলে বহু সময় বিশিষ্ট নাট্য ব্যাক্তিত্ব নাটক মঞ্চস্থ করেছেন । একটানা 10 দিন নাটকের উৎসব হত এই হলে ।