কলকাতা, 2 সেপ্টেম্বর : বিধানসভা নির্বাচনের আগেই 119টি উদ্বাস্তু কলোনির 20 হাজার বাসিন্দাকে নিঃশর্ত জমির দলিল (FTHD) দেবে রাজ্য সরকার । ইতিমধ্যেই একটি তালিকা তৈরির কাজ চলছে । প্রাথমিকভাবে 15 হাজার জনের তালিকা তৈরি হয়েছে ।
রাজ্য সরকারের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, উদ্বাস্তু কলোনির 15 হাজার বাসিন্দার প্রাথমিক তালিকা তৈরি করা হয়েছে । আরও 6 হাজার 500 জনের একটি তালিকা তৈরি করা হবে । এই 119টি কলোনির বেশিরভাগই শরণার্থী ।
2019-র ডিসেম্বরে পাশ হয় নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন । দেশের ধর্মনিরপেক্ষতাকে এই আইন আঘাত করছে বলে সরব হন বিরোধীরা । দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় বিক্ষোভ দেখান অনেকে । সেই সময়ই রাজ্য সরকারের তরফে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা হয় ।
এরপরই রাজ্য সরকার জানায়, উদ্বাস্তুরা সকলেই নাগরিক । এবং ভূমি ও ভূমি সংস্কার এবং উদ্বাস্তু ত্রাণ ও পুনর্বাসন দপ্তরের তরফে তাদের নিঃশর্ত জমির দলিল প্রদান করতে পদক্ষেপ করা হয় । জানানো হয়, রাজ্যে সব উদ্বাস্তু কলোনিকেই আইনি স্বীকৃতি ও উদ্বাস্তুদের নিঃশর্ত জমির দলিল দেওয়া হবে ।
মার্চে 94টি উদ্বাস্তু কলোনির বাসিন্দাদের নিঃশর্ত জমির দলিল দেন মুখ্যমন্ত্রী । এবং 119টি কলোনির জন্য একই প্রকল্প ঘোষণা করেন । দুই 24 পরগনা, হুগলি, হাওড়া এবং নদিয়ার প্রায় 3 হাজার 500 জন এই সুবিধা পাচ্ছেন । একইসঙ্গে উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, মালদা ও দুই দিনাজপুরের বড় সংখ্যক মানুষ এই সুবিধা পাবে । তবে যারা এই জমি পাচ্ছে তারা আগামী 10 বছরের মধ্যে তা বিক্রি করতে পারবে না বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার ।
কোরোনা সংক্রমণের মাঝেই ভূমি ও ভূমি সংস্কার এবং উদ্বাস্তু ত্রাণ ও পুনর্বাসন দপ্তরের কর্মীরা সমীক্ষা করেন । BJP-র অভিযোগ, তৃণমূল ভোট ব্যাঙ্কের জন্য বাংলাদেশের 'অবৈধ' নাগরিকদের সুরক্ষা দিচ্ছে । তাই যেকোনও মূল্যেই রাজ্যে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি জারি করবে কেন্দ্রীয় সরকার । রাহুল সিনহা বলেন, "তৃণমূল উদ্বাস্তুদের বোকা বানানোর চেষ্টা করছে । ভুল বোঝাচ্ছে । "
গত বছর 31 অগাস্ট অসমে জাতীয় নাগরিকপঞ্জির তালিকা প্রকাশিত হয় । 19.6 লাখ মানুষের নাম সেই তালিকা থেকে বাদ পড়ে । যার মধ্যে 12 লাখই হিন্দু । এর প্রভাব পড়ে এরাজ্যেও ।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় 1971 সালে পূর্ব পাকিস্তান থেকে লাখ লাখ মানুষ পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে পালিয়ে আসে । আশ্রয় নেয় সেখানে । দুই 24 পরগনা, নদিয়া, উত্তর দিনাজপুর, কোচবিহার এবং মালদার সীমান্তবর্তী এলাকায় শরণার্থীর সংখ্যা বেশি ।