কলকাতা, 18 জানুয়ারি : বাংলা কমিক্সের প্রবাদপ্রতীম স্রষ্টা নারায়ণ দেবনাথ ৷ হাঁদা-ভোঁদা, নন্টে-ফন্টেদের সঙ্গে বাঙালির পরিচয় করিয়েছেন ৷ পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে 2013 সালে ‘বঙ্গবিভূষণ’ সম্মানে ভূষিত করে ৷ এছাড়াও ‘রাষ্ট্রপতি পুরস্কার’, ‘পদ্মশ্রী’, ‘সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার’ ছাড়াও তিনি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্মানিক ‘ডি লিট’ উপাধি পেয়েছেন তাঁর শিল্পী জীবনে (Bengal Literary and film industry in memory of Narayan Debnath) ৷ সেই নারায়ণ দেবনাথকে ঘিরে তৈরি হওয়া স্মৃতিতে ভাসলেন অভিনেতা পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কার্টুনিস্ট দেবাশিস দেব (Narayan Debnath Death Reaction) ৷
বাংলা থিয়েটার এবং চলচ্চিত্র জগতের প্রবীণ অভিনেতা পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘‘নারায়ণ দেবনাথ এবং তাঁর সৃষ্টি তো শুধু শৈশবের জন্য নয়, আমার আগের প্রজন্ম, পরের প্রজন্ম সবার কাছে সমাদৃত (Paran Bandopadhyay on Narayan Debnath) ৷ শৈশব তো বটেই কিশোর, যুবক, প্রৌঢ় ৷ যাঁদের মধ্যে আজও শৈশব বেঁচে আছে, তারা নন্টে-ফন্টে, হাঁদা-ভোঁদা, বাঁটুল দি গ্রেট নিয়েই বেঁচে আছে ৷ দীর্ঘদিন ধরে অদ্ভুত ধরনের লেখা ও কার্টুনের মধ্যে দিয়ে যে মজার সৃষ্টি তিনি করেছিলেন তা চিরকালীন হয়ে রইল। ভাল মানুষ ছিলেন। খুব কম কথা বলতেন। খুব নরম সুরে কথা বলতেন সকলের সঙ্গে। তাঁর সৃষ্টির উপর নির্ভর করে ‘নন্টে-ফন্টে’ হল। খুব শিগগিরই মুক্তিও পাবে। ওঁর প্রভাব এতটাই আমাদের প্রজন্মের কাছে ৷ জানি মহাকালের নিয়মে চলে যেতেই হবে আমাদের সকলকে ৷ তবু মেনে নিতে বড় কষ্ট হচ্ছে ৷ দীর্ঘদিনের পরিশ্রম তাঁর ৷ আর তাঁর সেই পরিশ্রমের শিকড় মানুষের গভীরে চলে গিয়েছে ৷ সেই গভীর থেকে রস সিঞ্চন করে তিনি মানুষকে আনন্দ দিয়েছেন ৷ এঁদের মতো মানুষদের চলে যাওয়া মেনে নিতে কষ্ট হয় ৷ মনে হয়, যদি খবরটা মিথ্যে হত বড় ভাল হত ৷ আগামী প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের অভিভাবকরা যদি নারায়ণ দেবনাথের মতো মানুষদের চিনিয়ে দেন, তা হলে ওরাও জানবে, চিনবে হাঁদা-ভোঁদা, নন্টে-ফন্টেদের ৷’’
আরও পড়ুন : new version of Narayan Debnath creations: অভিভাবকহীন বাঁটুল, হাঁদা-ভোঁদারা; নতুন সংখ্যা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা
প্রয়াত শিল্পীর স্মৃতিতে আরেক কার্টুনিস্ট দেবাশিস দেব বলেন, ‘‘আমার দেখা নারায়ণবাবুর প্রথম কাজ হল, ইলাস্ট্রেশন। শুকতারাতে কিংবা দেব সাহিত্য কুটির থেকে যে সব পুজো সংখ্যা বেরোত, আমি ওই ইলাস্ট্রেশনগুলির ভীষণ ভক্ত ছিলাম (Cartoonist Debashis Deb on Narayan Debnath) । রিয়েলিস্টিক রোমাঞ্চ সিরিজের যে গল্প, তার সঙ্গে যে ছবি আঁকতেন তিনি যেমন শিকার কাহিনি, অ্যাডভেঞ্চার ইত্যাদির উপর ৷ ওটা দারুণ লাগত আমার। ওঁর ভার্সেটাইলিটি ছিল সাংঘাতিক। যেমন মজার ছবি আঁকতে পারতেন, তেমনি রিয়েলিস্টিক ছবিও আঁকতে পারতেন। ওঁর সমসাময়িক প্রতুল বন্দ্যোপাধ্যায়, শৈল চক্রবর্তী, সমর দে, বলাই রায় তাঁরাও খুবই শক্তিশালী ইলাস্ট্রেটেড ছিলেন ৷ কিন্তু, ভার্সেটাইল ছিলেন না সেই অর্থে ৷’’