কলকাতা, 1 ফেব্রুয়ারি: কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মল সীতারমন বাজেট পেশ করার পর সেই বাজেটকে (Union Budget 2023) অমাবস্যার অন্ধকারের সঙ্গে তুলনা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তিনি আরও বলেন যে, এই বাজেট তিনি আধ ঘণ্টার মধ্যেই তৈরি করে দিতে পারতেন । এর পালটা জবাব দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর দলকে একহাত নিল বঙ্গ বিজেপি (Bengal BJP Reacts on Budget)৷
বঙ্গ বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বললেন, ঘরের ভেতর থেকে তিনি যদি চাঁদ দেখতে না পান, যদি ঘরে মোটা পর্দা লাগানো থাকে, তাহলে তার দায়িত্ব বিজেপির নয় । কারণ বিজেপি কারও বাড়ির পর্দা সরিয়ে উঁকি মারতে যায় না । রাজ্যে এত বড় লুট, এত বড় দুর্নীতি হয়েছে যে তা স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে কোনওদিনও কোথাও হয়নি । এই সরকার কার্যত একটা ডাকাত সরকারে পরিণত হয়েছে বলে তোপ দাগেন শমীক ভট্টাচার্য ।
তৃণমূল কংগ্রেস আজকের বাজেটে নিরাশা দেখলেও একে সর্বস্পর্শী বাজেট হিসেবে দেখছে বঙ্গ বিজেপি ৷ তাদের দাবি, এটি শক্তিশালী ও নির্ণায়ক বাজেয় যা আত্মনির্ভর দেশ গড়তে সাহায্য করবে । শমীক ভট্টাচার্য এই নিয়ে বলেন, "কেন্দ্রীয় সরকারের স্বপ্নের প্রকল্প প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় 66 শতাংশ বরাদ্দ বৃদ্ধি হয়েছে । বাজেটে মূলধন খাতে 33 শতাংশ বরাদ্দ বেড়েছে । এই বাজেটে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির জন্য বিনিয়োগ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার । 500টি ব্লকে সরাসরি 50 হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে কেন্দ্রীয় সরকার । এই বাজেটের মধ্যে দিয়ে কৃষকদের ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে ।"
আরও পড়ুন:ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য 9,000 কোটি টাকার ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম চালু করবে কেন্দ্র
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য বাজেটকে কটাক্ষ করায় শমীক ভট্টাচার্য বলেন যে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আজকের এই বাজেটকে দিশাহীন বলেছেন এবং এই বাজেটের মধ্যে তিনি কোনও ভবিষ্যৎ দেখতে পাননি । কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মানুষ আজ তৃণমূলকে চিনেছে ৷ আসলে তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও ভবিষ্যৎ নেই এই বাজেটে । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তাই এটি হতাশা ।
বিজেপি মুখপাত্রের কথায়, "মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, গ্রামীণ মানুষের জন্য কী করা হয়েছে ? তাহলে বলি, 2011 সালে যখন এই রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদল হয়, তখন এই রাজ্যে সেলফ হেল্প গ্রুপের সংখ্যা ছিল 775 আর 2020 সালে সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে 600-তে । রাজ্য সরকার নতুন কোনও সেলফ হেল্প গ্রুপ তৈরি করতে পারেনি ৷ তাদের উৎসাহ জাগাতে পারেনি ৷ গ্রামীণ কোনও পরিকাঠামো তৈরি হয়নি ৷ এই সরকারের একমাত্র উদ্দেশ্য হল খরচ করব কিন্তু হিসাব দেব না ৷ আর টাকা দিলে খরচ করে পারে না ।" দুর্নীতি লুটের রাজনীতি এবং অস্বচতার কারণে পশ্চিমবঙ্গ প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা থেকে বঞ্চিত হয়েছে বলে দাবি করেন শমীক ভট্টাচার্য ।
বাজেটে 100 দিনের কাজের বরাদ্দ কমেছে । এই বিষয়ে শমীক বলেন, "এই মুহূর্তে দেশের মানুষের 100 দিনের কাজে খুব একটা বেশি উৎসাহ নেই। আর মানুষ যেটুকু চায় সেটুকু ব্যবস্থা আছে । পশ্চিমবঙ্গে কোনও ক্ষেত্রেই কোনও উন্নতি নেই ৷ তাই 100 দিনের কাজ নিয়ে কান্নাকাটি করছে । 100 দিনের কাজে যদি হিসেব দিতে পারে রাজ্য সরকার, তাহলে যতটা হিসেব দিয়েছেন ততটাই পাবে ।"