গুরুত্বপূর্ণ কিছু আইনের হিন্দি নামকরণের বিরুদ্ধে সরব রাজ্য বার অ্যাসোসিয়েশন কলকাতা, 1 সেপ্টেম্বর:দেশের গুরুত্বপূর্ণ কিছু আইনকে হিন্দি নাম দিয়ে হিন্দি ভাষায় অনুবাদ করার বিরুদ্ধে সরব হল রাজ্য হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশন । শুক্রবার বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবীদের তরফে এই নিয়ে একটি বৈঠক ডাকা হয় । সেখানেই এই বিষয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷
সেই বৈঠকের পর বার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বব্রত বসু মল্লিক বলেন,
"কেন্দ্রীয় সরকার সম্প্রতি কোড অফ ক্রিমিনাল প্রসিডিওর, ইন্ডিয়ান পেনাল কোড আর এভিডেন্স অ্যাক্টকে হিন্দিতে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা বিল, সুরক্ষা বিল নামে অনুবাদ করে দিচ্ছে । কোনও রকম আলোচনা ছাড়া কী করে এটা সম্ভব ? ভারত সার্বভৌম, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র । আমরা কি বলতে পারি এই সমস্ত অ্যাক্টগুলিকে সব কিছু বাংলায় করে দিন বা অন্য রাজ্যের মানুষ কি বলতে পারেন, তাঁদের রাজ্যের ভাষায় অনুবাদ করে দিন ? এর বিরুদ্ধে রাজ্য বার অ্যাসোসিয়েশন প্রতিবাদ জানাচ্ছে ।"
তিনি আরও জানান, হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে একটি নিন্দা প্রস্তাব আনা হয়েছে । কারণ পুরো বিষয়টাই অত্যন্ত অসাংবিধানিক বিষয় । এর প্রতিবাদে একটা চিঠি রাষ্ট্রপতিকে পাঠানো হচ্ছে । পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী, দেশের প্রধান বিচারপতি, রাজ্যের প্রধান বিচারপতি, বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া ও দেশের আইনমন্ত্রীকে সেই চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হচ্ছে । এটা করা হলে তা আইনজীবীদের পক্ষে বিপজ্জনক হবে বলে উল্লেখ করেন বিশ্বব্রত বসু মল্লিক ৷
তিনি আরও বলেন, "ইংরেজিতে এগুলো করা হয়েছিল ভারতের অখণ্ডতা বজায় রাখার জন্য । যে কোনও নোটে একাধিক ভাষা থাকে । তার মানে কি সব গুলোই রাষ্ট্র ভাষা ? এর ফলে ভারতের অখণ্ডতা সাংঘাতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে । হিন্দিকে রাষ্টীয় ভাষা হিসাবে তুলে ধরার একটা চেষ্টা চলছে । ভারতে 25 হাজার আইন রয়েছে । সেগুলো নিয়ে কেউ কিছু বলছে না তো ? কেন এই তিনটি ভাষা ? এটা হওয়া মানে ভারতের বিচার ব্যবস্থার উপর সমূহ প্রভাব পড়বে ।"
এই নিয়ে ইতিমধ্যে দেশের আইনি মহলে সমালোচনার ঝড় বইছে । আইনজীবীদের বক্তব্য, সময়ের সঙ্গে তাল রাখতে গিয়ে এবং বিশেষত প্রযুক্তির উন্নয়ন এ সব দিক মাথায় রেখে আইনের কিছু সংশোধন বা সংযোজন হতে পারে । কিন্তু তা না করে খালি কিছু হিন্দি নামে তা পরিবর্তিত হলে কি আদৌ কিছু লাভ আছে ? বরং তার ফলে নতুন সমস্যার সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন অনেকেই ৷
আরও পড়ুন:'বুথ দখলের পর দেদার ছাপ্পা', আদালতে স্বীকারোক্তি প্রিসাইডিং অফিসারের