কলকাতা, 7 সেপ্টেম্বর : বেহালা পর্ণশ্রীর সেনপল্লিতে মা ও ছেলের জোড়া খুনের ঘটনায় ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে রহস্যের জাল ৷ যে জাল কাটতে গিয়ে একের পর এক তথ্য উঠে আসছে পুলিশের হাতে ৷ মৃত মহিলার স্বামীকে গতকালই জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছিল পুলিশ ৷ এবার তাঁর বয়ান একাধিক অসঙ্গতি উঠে এসেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর ৷ জানা গিয়েছে, খুনের যে আনুমানিক সময় তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ঠিক সেই সময় প্রায় দু’ঘণ্টা মৃত মহিলা সুস্মিতা মণ্ডলের স্বামীর মোবাইল ফোন সুইচ অফ ছিল ৷ পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে দুপুর দু’টো থেকে তিনটের মধ্যে সুস্মিতা মণ্ডল এবং তাঁর ছেলে তমোজিৎ মণ্ডলকে খুন করা হয়েছে ৷ আর ঠিক সেই সময়ে, অর্থাৎ দুপুর দু’টো থেকে বিকেল 4টে পর্যন্ত সুস্মিতা মণ্ডলের স্বামীর মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল ৷
এই জোড়া খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ তদন্তভার হাতে নিয়েছে ৷ যেখানে এবার সন্দেহের তালিকায় সবার আগে রয়েছেন সুস্মিতা মণ্ডলের স্বামী তপন মণ্ডল ৷ পুলিশ সূত্রে খবর, তপন মণ্ডল তদন্তকারীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, তিনি যখন বাড়ি ফেরেন তখন ঘরের দরজা খোলা ছিল ৷ ঘরের ভিতরে গিয়ে তিনি তাঁর স্ত্রী এবং ছেলের রক্তাক্ত দেহ দেখতে পেয়েছিলেন ৷ কিন্তু, অন্যদিকে তমোজিৎ মণ্ডলের গৃহশিক্ষিকা বিকেল পাঁচটার সময় ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন ৷ তাঁকেও পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে ৷ যেখানে পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, ওই সময় ফ্ল্যাটের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল ৷ তিনি দীর্ঘক্ষণ বেল বাজান এমনকি ডাকাডাকি করেন ৷ কিন্তু, ভিতর থেকে কোনও সাড়া শব্দ না পেয়ে তিনি নাকি ফিরে যান ৷
আরও পড়ুন : Behala Murder : বেহালায় মা-ছেলের গলা কাটা দেহ উদ্ধার
কিন্তু, তপন মণ্ডলের বয়ান অন্য কথা বলছে ৷ তিনি জানিয়েছেন, সন্ধ্যায় বাড়িতে ফিরে তিনি ফ্ল্যাটের দরজা খোলা পেয়েছিলেন ৷ ফলে গৃহশিক্ষিকা এবং তপনবাবুর বয়ানের মধ্যে এই ফারাক পুলিশের সন্দেহের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷ কে সত্যি কথা বলছেন ? তা জানতে পুলিশ প্রতিবেশীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করছেন ৷ যেহেতু তপন মণ্ডলের ফোন বন্ধ ছিল ৷ তাই তাঁর ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করা সম্ভব নয় ৷ ফলে পেশায় ব্যাঙ্ককর্মী তপন মণ্ডলের কর্মস্থলে গিয়েও পুলিশ তদন্ত করবে বলে জানা গিয়েছে ৷ সেই সময় তিনি অফিসে ছিলেন কি না, বা না থাকলে কোথায় গিয়েছিলেন, এমন একাধিক প্রশ্ন তপন মণ্ডলের সহকর্মীদের পুলিশ করতে পারে ৷