কলকাতা, 17 জুলাই: মান ও হুঁশ মিলে হয় মানুষ । সমাজের উন্নততর জীব তাঁরা । সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন সমাজ গড়ে তোলার কারিগর এই মানুষ । কিন্তু আদৌ কি এই গুরুদায়িত্ব পালনের উপযোগী আমরা ? রবিবার কলকাতায় ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ঘটনা আরও একবার ভাবিয়ে তুলল সমাজকে । একটি ঘটনা সামনে এসেছে ৷ কিন্তু এদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া আরও অনেক কিছু থেকে যায় অজানার অন্তরালে ৷ পেতে হয় অবজ্ঞা, অবহেলা ৷ সেই কথাই শোনালেন অটিস্টিক সন্তানের মা ৷ কীভাবে কাটতে পারে সমাজের এই সমস্যা ? তারই হদিশ দিলেন মনোবিদরা ৷
রবিবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কলকাতায় অটিস্টিক এক তরুণের পথ আটকে তাঁকে নাচতে বলে চার যুবক । সেই কথা ওই তরুণ মেনে না নেওয়ায় তাঁকে মারধর করার অভিযোগ ওঠে । এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই নিন্দার ঝড় বয়েছে চারিদিকে । তবে এটা প্রথম নয়, এর আগে এই ঘটনা বহুবার দেখা গিয়েছে বলে জানালেন বেহালার বাসিন্দা মায়া বিশ্বাস ৷ তাঁর তিন ছেলের মধ্যে দুই ছেলেই অটিস্টিক । ছেলেদের নিয়ে বেরোলে শুনতে হয় হাসি-বিদ্রুপ । তাই নিজের বাড়িতেই তিনি খুলে ফেলেন একটি স্কুল । সেখানে তাঁর দুই ছেলের পাশাপাশি সমাজের আরও কয়েকটি অটিস্টিক শিশুকে নিয়ে শুরু হয় ক্লাস ।
তবে তাঁর এই পদক্ষেপের পাশের দাঁড়িয়েছিলেন এক বিদেশিনি । ফ্রান্সের বাসিন্দা জেন ওয়েব থাকতেন বেহালাতেই । অটিস্টিকদের অনেক কিছু শেখানোর চেষ্টা করতেন জেন । মায়া বিশ্বাসের কথায়, "ওঁর সংস্থা মাঝেমধ্যে এসে আমাদের বাচ্চাদের ক্লাস করাত । কিন্তু আমি নিয়মিত ক্লাস করাতে চাই । তাই 1987 সালে প্রথমে নিজের বাড়ির গ্যারাজ ও পরে একটা নতুন জায়গায় শুরু হয় ক্লাস । তা উদ্বোধন করেছিলেন জেন ।"
এই ক্লাসের জেরে 1992 সালে দিল্লিতে সোনিয়া গান্ধির হাত থেকে পুরস্কারও পান মায়া বিশ্বাস । কিন্তু সমাজের অটিস্টিক মানুষদেরকে নিয়ে কাজ করার সুবাদে নানা সমস্যাও ভোগ করেন তিনি । ফ্রান্স থেকে আসা দুই চিকিৎসককে আচমকাই মায়া বিশ্বাসের মেজো ছেলে জড়িয়ে ধরেছিল । তার পরিণামে শুনতে হয়েছিল অপমান ।