কলকাতা, 20 ফেব্রুয়ারি:বকেয়া ডিএ-র দাবিতে যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের কর্মবিরতি (Strike on DA Demand) পালিত হল আজ দিনভর ৷ সরকারের কড়া নির্দেশিকা মেনে অধিকাংশ কর্মী উপস্থিত থাকলেও, তাঁদের একাংশ কোনও কাজ না করে আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছেন ৷ তাঁদের এই আন্দোলনকে আরও বৃহত্তর পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ তবে শাসকদলের অভিযোগ, এই সব করে রাজ্যে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে চাইছে বিজেপি (Attendance at government offices normal)৷
সোমবার নবান্নে যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের কর্মবিরতির একেবারেই প্রভাব পড়েনি ৷ এ দিন রাজ্যের প্রধান প্রশাসনিক দফতরে হাজিরা ছিল 97 শতাংশ ৷ সরকারের কড়া নির্দেশিকা মেনে আজ উপস্থিত থাকেন অধিকাংশ কর্মী ৷ অফিসে এসেছেন অথচ কাজ করেননি এমন কর্মীর সংখ্যাও ছিল হাতে গোনা ৷
মহাকরণ ও নব মহাকরণেও হাজিরা ছিল যথেষ্ট ভালো ৷ মহাকরণে আজ উপস্থিতির হার 96 শতাংশ ৷ নব মহাকরণেও হাজিরা ছিল 96 শতাংশ ৷ তবে মহাকরণে সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে দেখা গিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ৷ এখানে কর্মীদের একটা অংশ হাজিরা দিলেও এ দিন কাজে যোগ দেননি ৷ কেন তাঁরা এই অবস্থান নিলেন সেই প্রশ্ন করা হলে তাঁরা বলেন, এটা তাঁদের রুজিরুটির প্রশ্ন ৷ ডিএ-র দাবিতে যে আন্দোলন তাতে তাঁদের পূর্ণ সমর্থন আছে বলে জানিয়ে তাঁরা বলেন, সরকারি নির্দেশিকা মেনে অফিসে এলেও তাঁরা আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে আজ কোনও কাজ করেননি ৷
আবার কর্মীদের একটা অংশ বলেছেন, সরকারের নির্দেশ মেনেই তাঁরা কাজ করেন ৷ তাই সরকারের নির্দেশ অমান্য করার কোনও উপায় নেই বলেই তাঁরা আজ কাজে এসেছেন ৷ যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ বকেয়া মহার্ঘ ভাতার দাবিতে আন্দোলন জোরদার করতে আজ থেকে দুদিনের কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে ৷ কর্মবিরতি রুখতে আজ হাজিরা দেওয়ার জন্য কর্মীদের উদ্দেশে কড়া নির্দেশিকা জারি করেছিল নবান্ন ৷ নইলে একদিনের বেতন কাটার পাশাপাশি কর্মজীবনে একদিন ছেদ পড়ে যাবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল ৷ সেই নির্দেশিকা মেনেই কাজে যোগ দিলেও আন্দোলনের কর্মসূচি মেনে কর্মবিরতির প্রথম দিনে কোনও কাজ করেননি সরকারি কর্মচারীদের একাংশ ৷
আরও পড়ুন:ডিএ-র দাবিতে কর্মবিরতি রুখতে সরকারের কড়া নির্দেশিকায় শুরু রাজনৈতিক তরজা
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আজ ডিএ-র দাবিতে আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন ৷ তিনি এ দিন বলেন, রাজ্য সরকারের তরফ থেকে যে 3 শতাংশ ডিএ দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে সেটা আসলে ভিক্ষে ৷ 38 শতাংশ কেন্দ্রীয় হারেই রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ দিতে হবে বলে দাবি জানান তিনি ৷ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে তিনি বলেন, এই সরকার যদি বকেয়া ডিএ না দেয়, তাহলে শুধু পেন ডাউন করলেই চলবে না ৷ স্বাস্থ্য, জল ও বিদ্যুতের মতো নিত্য প্রয়োজনীয় পরিষেবা ছাড়া বাকি সব অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিক সরকারি কর্মীরা ৷ এ ব্যাপারে তাঁদের পাশে থাকবে বিজেপি ৷
এ দিকে, এ বিষয়ে রাজ্যের শাসকদলের নেতা তাপস রায় বলেন, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একটা বড় অংশ বিরোধীদের প্ররোচনায় পা দেয়নি ৷ তারা আজ অফিসে উপস্থিত হয়ে স্বাভাবিক কাজকর্ম করেছেন ৷ তাঁরা এটাও বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, এই সরকার কর্মীদের কথা ভাবে ৷ সঠিক সুযোগ ও সুবিধে হলে তাঁদের দাবি অবশ্যই বিবেচনা করবে রাজ্য সরকার ৷ একইসঙ্গে শুভেন্দুর এই দাবি প্রসঙ্গে তাপস বলেন, আসলে বিরোধীরা এই সব দাবি করে রাজ্যে একটা বিশৃঙ্খলার পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে ৷ মানুষ তাঁদের এই অভিসন্ধি ব্যর্থ করে দেবে ৷