কলকাতা, 16 অগস্ট: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন মোট 9 জন । এই 9 জনের মধ্যে আজ ভোররাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের 6 জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ । ধৃতদের নাম মহম্মদ আরিফ, আসিফ আজমল আনসারি, অঙ্কন সরদার, সপ্তক কামিল্যা, সুমন নস্কর এবং অসিত সরদার । এই ছয় জনকে আজ আলিপুর পুলিশ আদালতে পেশ করা হলে বিচারক তাঁদের 12 দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন ।
মূলত এই ছয় জন পড়ুয়ার মধ্যে তিনজন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া এবং বাকি তিনজন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী । এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে কীভাবে এই প্রাক্তন পড়ুয়ারা নিজেদের প্রভাব প্রতিপত্তি খাটিয়ে দিনের পথ দিন সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে থাকতে পারতেন ? লালবাজার সূত্রের খবর, এই ঘটনায় প্রথমেই গ্রেফতার হন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন পড়ুয়া সৌরভ চৌধুরী-সহ মনোতোষ এবং দীপশেখর ৷ এই ঘটনায় নতুন করে গ্রেফতার হওয়া ছয় জনকে তাঁদের সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে পারেন তদন্তকারী আধিকারিকরা ।
গত সপ্তাহে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের নীচ থেকে রক্তাক্ত এবং কার্যত উলঙ্গ অবস্থায় উদ্ধার হয় সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রের দেহ । তাঁকে যাদবপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন । এরপরই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের অন্দরের আসল রহস্য প্রকাশ্যে আসে । হস্টেলে প্রভাব খাটিয়ে কীভাবে বছরের পর বছর প্রাক্তনী এবং বহিরাগতরা থাকছেন এবং তাঁদের দ্বারা ব়্যাগিং-এর শিকার হতে হচ্ছে নতুন ছাত্রদের, সেই ভয়াবহ দিক ক্রমশই প্রকাশ্যে আসতে থাকে ।
আরও পড়ুন:'কেউ ছাড় পাবে না', দেখা করে যাদবপুরে মৃত ছাত্রের পরিবারকে আশ্বস্ত করল তৃণমূলের প্রতিনিধি দল
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে র্যাগিংয়ের পাশাপাশি নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে বছরের পর বছর হস্টেলে থেকে যাচ্ছিলেন প্রাক্তানীরা ৷ এই খবর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ির চালক থেকে শুরু করে রাঁধুনী, প্রত্যেকেই জানেন ৷ কিন্তু জানেন না যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এবং ডিন অফ স্টুডেন্ট । কীভাবে কর্তৃপক্ষ দায় এড়িয়ে যেতে পারেন, এই বিষয়টি জানার জন্য ইতিমধ্যেই লালবাজার তলব করেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এবং ডিন অফ স্টুডেন্টকে । রেজিস্ট্রার লালবাজারে পৌঁছনোর পর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান শঙ্খশুভ্র চক্রবর্তীর নেতৃত্বে কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড বিভাগের গোয়েন্দারা ।