পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

Search Committee Bill Passed: হেজিমনি নিয়ে উত্তাপের মাঝেই বিধানসভায় পাশ সার্চ কমিটি সংশোধনী বিল, রাজভবনে বিজেপি

Search Committee Bill Passed in Assembly: হেজিমনি শব্দ নিয়ে শুক্রবার উত্তপ্ত হল রাজ্য বিধানসভা ৷ এ দিন বিরোধীদের আপত্তি সত্ত্বেও সার্চ কমিটি সংক্রান্ত সংশোধনী বিল সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে পাশ হয়ে যায় ৷

Search Committee Bill Passed
তপ্ত বিধানসভা

By

Published : Aug 4, 2023, 6:28 PM IST

কলকাতা, 4 অগস্ট: সার্চ কমিটি সংক্রান্ত সংশোধনী বিল নিয়ে আলোচনায় আচমকাই উত্তপ্ত হল রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন । শুক্রবার বিধানসভা অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধে দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি লস আমেন্ডমেন্ট বিল 2023 বিধানসভায় পেশ করা হয় ৷ বিলটি নিয়ে শুরু থেকেই আপত্তি ছিল রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির ।

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, এই বিল বিধানসভায় পেশ করা হলে তাঁরা এই নিয়ে জনগণের মতামত চাইবেন । একইসঙ্গে তাঁদের পক্ষ থেকে বিলটিকে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাবও দেওয়া হবে । সেই মতো আলোচনার শুরুতেই বিজেপি বিধায়ক তাপসী মণ্ডল এবং মনোজ টিগ্গার নেতৃত্বে বিরোধীপক্ষ সেই প্রস্তাব দেয় । অধ্যক্ষ সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে বিল পাশের প্রক্রিয়া শুরু করে । আর এই বিলের উপর জবাবি ভাষণ দিতে গিয়ে প্রবল বিরোধী বিক্ষোভের মুখে পড়লেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ।

রাজ্যের প্রধান বিরোধীদলকে 'রাম-বাম' কটাক্ষ করতে গিয়ে বিরোধীদের প্রবল হইচই এর মুখে পড়েন শিক্ষামন্ত্রী । প্রায় 15 মিনিট হইচই চলে । বিধানসভায় শোনা যায় 'এক হি নারা এক হি নাম, জয় শ্রী রাম, জয় শ্রী রাম' । এই প্রবল অশান্তির মধ্যেই একটা সময় শিক্ষামন্ত্রী তাঁর বক্তব্য জারি রাখেন ।

প্রসঙ্গত, যাবতীয় অশান্তির সূত্রপাত হয় বিধায়ক অরূপকুমার দাসের তোলা 'হেজিমনি' শব্দটিকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ।

ব্রাত্য বসু তাঁর বক্তব্যে বলেন, "বিজেপি বিধায়ক অরূপকুমার দাস হেজিমনি শব্দটি উল্লেখ করেছেন তাঁর বক্তব্যে । এই শব্দটি তৈরি করেছেন বামপন্থী তাত্ত্বিক আন্তনীও গ্রামসী । তিনি দীর্ঘদিন মুসোলিনির জেলে পচেছেন । সেখানে তিনি হেজিমনি শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন কিছু সংকেত বোঝাতে । তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, গ্রামসী হেজিমনি শব্দটি মুসোলিনির জেলে বসে লিখেছেন ৷ তাঁর সঙ্গে ভারত থেকে প্রথম দেখা করতে যান রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রধান মুঞ্জের । গ্রামসীকে জেলে বন্দি করেছিলেন মুসোলিনি । মুসোলিনির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন মুঞ্জের । মুসোলিনিকে কোট না করে আপনি গ্রামসীকে কোট করছেন এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ । গোটা রাজ্য জুড়ে রাম এবং বাম নিয়ে যে চর্চা চলছে এই বক্তব্য থেকে তা আবার নতুনভাবে প্রতিষ্ঠিত হল ।"

আরও পড়ুন:রাজ্যের চাপেই অনলাইন গেমিং-ক্যাসিনো-ঘোড়দৌড়ে 28%, জিএসটি সংশোধনী পাশ বিধানসভায়

এরপরই প্রতিবাদ করে ওঠেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, "যুগ পুরুষোত্তম রামকে নিয়ে আপনি এ ভাবে বলতে পারেন না । প্রথম দিকে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়ে কিছু থামিয়ে দেওয়ার জন্য শুভেন্দু অধিকারীকে বসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন । তিনি বলেন, প্রত্যেক দিনের কোনও না কোন অছিলায় এ ধরনের অশান্তি করা অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে ।"

শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, "আমিও হিন্দু । আমি কী বলব তা আপনি ঠিক করে দিতে পারেন না ।" এই সময় বিধানসভায় জয় শ্রী রাম স্লোগান উঠতে শুরু করে । কোনওভাবেই তাঁকে শান্ত করা যাচ্ছিল না । অধ্যক্ষ বলেন, "আপনি বিরোধী দলনেতা, আপনাকে এ সব মানায় না।" ততক্ষণে রীতিমতো হাততালি দিয়ে স্লোগান দিতে শুরু করেছে বিজেপি ।

শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, "আমি তো রামকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছি । কেন শ্রদ্ধা জানাব না ! আপনারা কেন বিরোধিতা করছেন !" শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "আপনি যুগ পুরুষোত্তম রামকে অসম্মান করছেন । শিক্ষামন্ত্রী পালটা বলেন । কেন আমি অসম্মান করতে যাব । কেন তাঁকে নিয়ে বলতে যাব ।"

এ বার সুর চড়ান অধ্যক্ষ । তিনি বলেন, "এটা কী করছেন শুভেন্দুবাবু । বিধানসভা চলতে দিন আপনারা । প্রত্যেকদিন একই কাজ করছেন । অপ্রয়োজনীয়ভাবে চিৎকার চেঁচামেচি করছেন ।"

কিন্তু এরপরেও শান্ত হয়নি বিধানসভা ৷ প্রায় 15 মিনিট এ ভাবেই চিৎকার চেঁচামেচি হয় । এরপর অধ্যক্ষ বিরোধী দলনেতাকে তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করে জানাতে বলেন । সে সময় বিরোধী দলনেতা বলেন, "যদি মন্ত্রী মহাশয় রাম শব্দের সঙ্গে ভগবান পুরুষোত্তম রামচন্দ্র মহারাজের সঙ্গে উদ্দেশ্য করে না বলে থাকেন, তাহলে আমাদের কোনও আপত্তি নেই । তিনি বলেছেন রাম একটা ব্যক্তির নাম । তিনি ভগবানকে উদ্দেশ্য করে বলেননি । তাতে কোনও আপত্তি নেই ।"

আরও পড়ুন:গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে বিধানসভার বাইরে ধরনা বিজেপি বিধায়কের

এ বার আবার বলতে শুরু করেন শিক্ষামন্ত্রী । তবে তাৎপর্যপূর্ণভাবে যে উচ্চগ্রামে ব্রাত্য বসু তাঁর বক্তব্য শুরু করেছিলেন, এ বার তাঁর বক্তব্য তুলনায় নিম্নগ্রামে । হতে পারে এই হইচইয়ের পর কিছুটা হলেও তাল কাটে তাঁর । দিনের শেষে সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটেই পাশ হয়েছে এই বিল । ভোটাভুটিতে শাসকের পক্ষে পড়েছে 120 ভোট । শুভেন্দু অধিকারীর পক্ষে পড়েছে 51 ভোট । নওশাদ সিদ্দিকী বিধানসভায় উপস্থিত থাকলেও ভোটাভুটিতে যোগ দেননি ।

এ দিকে, বিরোধী দল বিজেপি বিধানসভা থেকে বেরিয়ে সরাসরি রাজভবনে চলে যায় । তাদের যুক্তি, রাজ্যপাল যেন এই বিলে সই না করেন ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details