পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

বাঙুরে রিপোর্ট-বিভ্রান্তি, বাবার মৃত্যুর কারণ জানতে চাইছেন যুবক - corona news updates

MR বাঙুর হাসপাতালে কোরোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক প্রবীণের । কিন্তু তাঁর রিপোর্ট নিয়ে ইতিমধ্যেই জটিলতা তৈরি হয়েছে । এবার মৃত্য়ুর কারণ জানতে চেয়ে অভিযোগ জানাতে চলেছে পরিবার ।

ছবি
ছবি

By

Published : Apr 29, 2020, 6:56 PM IST

কলকাতা, 29 এপ্রিল : কোরোনার রিপোর্ট নিয়ে বিভ্রান্তির মাঝেই মৃত্যু ব্যক্তির । এবার মৃত্যুর কারণ জানতে চাইছেন মৃতের পরিবার । পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, বর্তমানে তাঁরা হোম কোয়ারানটিনে রয়েছেন । কিন্তু সম্পূর্ণ ঘটনা নিয়ে অভিযোগ জানাতে চান তাঁরা । এদিকে ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি জানিয়েছে সরকারি চিকিৎসকদের একাংশ।

মৃতের ছেলে বলেন, "আমরা অভিযোগ জানাতে চাইছি। একটাই কথা জানাতে চাইছি আসল বিষয়টি কী ? আপনারা প্রথমে পজ়িটিভ বলেছেন, তারপর নেগেটিভ বলে রোগীকে ছুটি দিয়েছেন । তারপর আবার পজ়িটিভ বলেছেন। বাড়িতে আমার দুটি বাচ্চা আছে । একজনের বয়স 6 মাস । অন্যজনের বয়স ছ'বছর। বাড়িতে স্ত্রী ও মা আছেন। আমাদের কারও মধ্যে যদি কোরোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে তার দায়িত্ব কে নেবেন। আপনারা এখনও ভুল স্বীকার করছেন না। আমার কাছে সব ডকুমেন্ট রয়েছে যে নেগেটিভ বলে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়েছে।"

তিনি আরও বলেন, "আমাদের জানা নেই কোথায় অভিযোগ জানাতে হবে । কে অভিযোগ নেবেন। বাবা কীভাবে মারা গিয়েছেন, তার কারণটা আমাদের জানানো হোক। বাবার মৃত্যুর কারণ জানতে চাইছি। বাবার ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়া হোক।"

আতঙ্কে রয়েছে মৃতের পরিবার । এবিষয়ে মৃতের ছেলে বলেন, "নিজেদের খরচে বেসরকারি হাসপাতালে আমরা টেস্ট এবং চিকিৎসা করাতে চাইছি। স্বাস্থ্যভবনের যে নম্বর থেকে আমার কাছে ফোন এসেছিল, সেই নম্বরে ফোন করে গাইডলাইন জানতে চেয়েছি, এই বিষয়ে কিছু জানানো হচ্ছে না। আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না, আতঙ্কে রয়েছি।"

জানা গিয়েছে, রিপোর্টে বিভ্রান্তি এবং তারপর কোরোনা রোগীর মৃত্যুর ঘটনা খতিয়ে দেখছে স্বাস্থ্য দপ্তর। এদিকে রাজ্যের সরকারি চিকিৎসকদের একটি সংগঠন সার্ভিস ডক্টর ফোরামের সাধারণ সম্পাদক, চিকিৎসক সজল বিশ্বাস বলেন, "এই ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। আমরা উচ্চ পর্যায়ে তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।"

এনিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয়কুমার চক্রবর্তীর বক্তব্য জানতে চেয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে, তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। MR বাঙুর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষেরও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

কোরোনা আক্রান্ত এই প্রবীণ আমহার্স্ট স্ট্রিটের বাসিন্দা ছিলেন। 18 এপ্রিল জ্বরে আক্রান্ত হন । প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া হয়। এরপর তাঁকে কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে MR বাঙুর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় । মৃতের ছেলে জানিয়েছেন, গত 25 এপ্রিল স্বাস্থ্যভবন থেকে তাঁকে ফোন করে জানানো হয়, তাঁর বাবার রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। পরের দিন স্বাস্থ্যভবন থেকে ফোন করে তাঁদেরকে হোম কোয়ারানটিনে থাকতে বলা হয়। 26 এপ্রিল বিকেলে আবার MR বাঙুর হাসপাতাল থেকে তাঁকে ফোন করে জানানো হয়, তাঁর বাবার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। তাঁর বাবাকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হবে‌। সেদিন রাতেই হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়। 27 এপ্রিল বিকেলে স্বাস্থ্যভবন থেকে ফোন করে হোম কোয়ারানটিনে থাকা এই রোগীর পরিবারের সদস্যদের কারও কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না, তা জানতে চাওয়া হয়। রোগীর পরিবারের তরফে জানানো হয়, রিপোর্ট নেগেটিভ । এরপর সেদিন আবার স্বাস্থ্যভবন থেকে ফোন করে জানানো হয়, এই রোগীর রিপোর্ট পজ়িটিভ। রোগীকে আবার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হবে। 27 এপ্রিল রাতে বাড়ি থেকে এই রোগীকে অ্যাম্বুলেন্সে চাপিয়ে আবার নিয়ে যাওয়া হয় MR বাঙুর হাসপাতালে। পরে হাসপাতাল থেকে ফোন করে জানানো হয়, রোগীর শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। হঠাৎই পরের দিন সকালে হাসপাতাল থেকে ফোন করে জানানো হয় মৃত্যু হয়েছে কোরোনা আক্রান্ত রোগীর ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details