কলকাতা, ৪ মার্চ: "অনশন করে কী হবে? এ রাজ্যে অনশন করে চাকরি পাওয়া যায় না।" অনশনরত SSC চাকরিপ্রার্থীদের এই উপদেশ দিল SSKM হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আজ এমন অভিযোগ করেছেন অনশনরত SSC চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। অভিযোগ, তাঁদের হাসপাতালে যেতে মানা করা হচ্ছে। অনশন করে কোনও লাভ নেই এমন উপদেশও দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসার নামে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে। হাতে স্যালাইন দেওয়ার নাম করে একাধিক জায়গায় সুচ ফোটানো হচ্ছে।
২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে চাকরির দাবিতে ধর্মতলায় অনশনে বসেছেন নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ওয়েটিং লিস্টে থাকা প্রায় সাড়ে চারশো SSC চাকরিপ্রার্থী। অনশনের দ্বিতীয় দিন থেকেই অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। আজ সকাল পর্যন্ত মোট ২৬ জন অসুস্থ হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
অন্যদিকে বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে আজ সকালে মাথার উপর একটি ছোট ত্রিপল টাঙিয়ে ছিলেন অনশনকারীরা। কিন্তু অভিযোগ, পুলিশ এসে সেটিও খুলে নিয়ে যায়। রাত ৯টা নাগাদ মহিলাদের শৌচালয় বন্ধ হয়ে যায়। তাই বাধ্য হয়েই পুরুষদের শৌচালয়ে যেতে বাধ্য হন মহিলারা। এরই মধ্যে আজ SSKM হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলছেন অনশনকারীরা।
চাকরিপ্রার্থী তানিয়া শেঠ বলেন, “আজ আমাদের অনশন ৫ দিনে পড়ল। ইতিমধ্যেই পরিস্থিতি অনেকটাই খারাপ। আমাদের মোট ২৬ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। যাঁদের চিকিৎসার জন্য SSKM হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাঁরা অভিযোগ করছেন, সেখানে ডাক্তার ও নার্সরা সহযোগিতা করছেন না। এমনকি স্যালাইন দেওয়ার নাম করে বিভিন্ন জায়গায় সুচ ফুটিয়ে অত্যাচার করা হচ্ছে।"
অপর এক চাকুরিপ্রার্থী শ্বেতাবুদ্দিন বলেন, “আমি আজ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। SSKM হাসপাতালে ভরতি হই। ওখানে ওরা (ডাক্তার ও নার্স) খুব বিরক্তি প্রকাশ করছেন। প্রথমে ওরা আমাকে মেঝেতে শুইয়ে দিল। আমার প্রচণ্ড ঠাণ্ডা লাগছিল। অনেকক্ষণ পরে আমাকে বেডে তোলে। স্যালাইন দেওয়ার জন্য সুচ দিয়ে অনেকবার হাতে ফুটো করেছে। এইভাবে আমাদের টর্চার করা হচ্ছে। ওনারা বলছেন, তোমরা অনশন করছ কেন? এ রাজ্যে অনশন করে কোনও চাকরি হবে না। তোমরা আমাদের এখানে এস না। আর অন্য কাউকে পাঠিও না।”
একই অভিযোগ করেছেন হাসপাতাল থেকে ফিরে আসা রাকিবুর শেখ। তিনি জানান, তাঁকে অসুস্থ অবস্থায় SSKM-এ নিয়ে যাওয়া হলে হাসপাতালের তরফে প্রশ্ন করা হয়, কেন তাঁকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
আন্দোলনকারীদের কয়েকজন বলেন, “SSKM হাসপাতালে নানাভাবে টর্চার করা হচ্ছে। আমরা এখানে নর্দমার পাশে শুয়ে আছি। খোলা আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে আছি। কোনও নিরাপত্তা নেই। আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটছে আমাদের। এই পরিস্থিতিতে অসুস্থরা হাসপাতালে গিয়ে যদি পরিষেবা না পায় তাহলে আমরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াব? আমরা যোগ্য চাকুরিপ্রার্থী, অকৃতকার্য নই।"