কলকাতা, 28 মার্চ: তিলজলা কাণ্ডের (Tiljala Child Murder Case) ফলে গতকাল শিয়ালদা দক্ষিণ শাখায় প্রায় 4 ঘণ্টা বন্ধ ছিল রেল চলাচল ব্যবস্থা । পাশাপাশি থানায় গন্ডগোল এবং রাস্তা অবরোধের মতো ঘটনাও ঘটেছে ৷ এই সবের জেরে এ বার নয়া নির্দেশিকা আনল লালবাজার । ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিশের নগরপাল বিনীত গোয়েলের তরফ থেকে শহরের 9টি ডিভিশনকে দেওয়া হয়েছে এই নির্দেশ (New Guidelines after Tiljala Incident)।
লালবাজার সূত্রের খবর, এই নতুন নির্দেশিকায় বলা হয়েছে যে, প্রত্যেকটি ডিভিশনের অস্ত্রাগারে সঠিক কত পরিমাণে ট্যিয়ার গ্যাস, লাঠি, ঢাল, হেলমেট আছে তা দেখতে হবে ৷ পাশাপাশি টিয়ার গ্রেনেড আছে কি না, না থাকলে কেন নেই, এবং থাকলে তা কত পরিমাণে আছে অর্থাৎ পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে কি না, সব দেখতে হবে প্রত্যেক ডিভিশনের ডিসিকে । পাশাপাশি এই সংক্রান্ত একটি রিপোর্টও জমা দিতে হবে লালবাজারে ।
গত পরশু রাতে গোটা ঘটনার সূত্রপাত । তিলজলা থানা এলাকায় 7 বছরের নাবালিকার খুনের ঘটনায় দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা । ঘটনায় যুক্ত মূল অভিযুক্ত অলোক কুমারকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও এলাকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে । ঘটনার দিন রাতেই তিলজলা থানায় দফায় দফায় হামলা চালান এলাকার বাসিন্দারা । ভাঙা হয় পুলিশের গাড়ি, বাইক ।
আর এই ঘটনায় থানায় ঢুকে হাঙ্গামা এবং পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুরের অভিযোগ সামনে এনে প্রায় কুড়িজনকে গ্রেফতার করেছে তিলজলা থানার পুলিশ । গতকাল রাত পর্যন্ত এই গ্রেফতারের সংখ্যা ছিল তিন । পরে গভীর রাতে গোটা এলাকা জুড়ে তল্লাশি অভিযানের পর অতিরিক্ত 17জনকে গ্রেফতার করা হয় । ধৃতদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি নষ্টের অভিযোগ দায়ের করেছে তিলজলা থানার পুলিশ । জানা গিয়েছে, ধৃতরা প্রত্যেকে ওই ঘটনায় যুক্ত ছিল ।
আরও পড়ুন:তিলজলা থানায় হামলা, লাগাতার অভিযানে গ্রেফতার 20
যদিও এই ঘটনায় এলাকার বাসিন্দাদের পুলিশের প্রতি ক্ষোভ আরও তীব্রতর হচ্ছে । গতকাল প্রথম দফায় গ্রেফতার হওয়া তিনজনের মুক্তির দাবিতে শিয়ালদা দক্ষিণ শাখায় ট্রেন চলাচল প্রায় 4 ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে দেন এলাকার বাসিন্দারা । পাশাপাশি বন্ডেল গেট এবং রাস্তায় বাস চলাচল বন্ধ করে দেন এলাকার বাসিন্দারা । তাঁদের অভিযোগ, যখন ওই নাবালিকার রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার অভিযোগ তাঁরা দায়ের করতে গিয়েছিলেন, সেই সময় থেকেই পুলিশের গাফিলতি চোখে পড়ছিল ।
অভিযোগ, পুলিশের গাফিলতির জন্যই ওই নাবালিকা খুন হয়েছে । গোটা ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে কেন পুলিশ সক্রিয় হল এই প্রশ্ন তোলেন বাসিন্দারা ৷ আগে থেকে যদি পুলিশ সক্রিয় ভূমিকা পালন করত সে ক্ষেত্রে এই ঘটনা ঘটত না এবং শিশুটিকেও বাঁচানো যেত বলে দাবি তাঁদের ৷ যদিও গতকাল বিক্ষোভকারীদের ঘটনাস্থল থেকে হঠানোর জন্য কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে হয় পুলিশকে । পাশাপাশি এলাকায় মোতায়েন করা হয় র্যাফ ।