কলকাতা, 8 নভেম্বর: দীপাবলি মিটতেই উলটপুরাণ বাতাসে। এক ধাক্কায় প্রায় পাঁচগুণ ধূলিকণার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে কলকাতা-সহ পার্শ্ববর্তী জেলার বাতাসে । যা আগামী 15 দিনে ব্যাপকহারে বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেই মত পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের । তাই, সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে অ্যাজমা রোগী, বয়স্ক মানুষ ও বাচ্চাদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন পরিবেশবিদদের একাংশ (Environment Activists are Concerned About Kolkata Air Pollution Situation)। একইসঙ্গে বাতাসে ভাসমান ধূলিকণা থেকে রক্ষা পেতে দিনে তিন চারবার জল ছেটানোর উদ্যোগ নিক প্রশাসন, এমনটাও চাইছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা ।
কালীপুজোতে কলকাতার বাতাসের ভাসমান ধূলিকণার পরিমাণ ছিল 40 মাইক্রোগ্রাম । 8 নভেম্বর মঙ্গলবার কলকাতা ও হাওড়ার বাতাসের ধূলিকণার পরিমাণ 250 মাইক্রোগ্রাম ছাড়িয়েছে। অর্থাৎ, মাত্র কয়েকদিনের তফাতে বাতাসের গুণমান ভালো থেকে সন্তোষজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে । এই সন্তোষজনক পর্যায় থেকে আগামী কয়েকদিনে বিপজ্জনক জায়গায় পৌঁছানোর সম্ভাবনা এড়িয়ে যাওয়া যাচ্ছে না বলে মত পরিবেশবিদ সৌমেন্দ্রমোহন ঘোষের ।
হাওড়ার বাতাসে আজ ধূলিকণার পরিমাণ তবে বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ বৃদ্ধির কারণ কী ? জলীয় বাষ্প কমে যাওয়া ও তাপমাত্রা কমলে বাতাসে ভাসমান ধূলিকণা নিচের দিকে নামতে শুরু করে । অর্থাৎ, একজন মানুষের উচ্চতা যতটা হয় সেই পর্যায়ে নেমে আসে । স্বাভাবিকভাবে এই বাতাস গ্রহণের ফলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে(Air Pollution in Kolkata)।
আরও পড়ুন :বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার পরিমাণ বৃদ্ধি ! 15 নভেম্বর থেকে শহরের রাস্তায় জল ছিটানো শুরু
কিন্তু, এখনই তো মারাত্মক হারে শীত পড়েনি বা তাপমাত্রা কমেনি, তাহলে এখনই যদি বাতাসের গুণমান নামতে শুরু করে তবে তাপমাত্রা আরও কমলে অবস্থা কী হবে তা ভেবে শঙ্কিত পরিবেশবিদদের একাংশ ।
কলকাতা শহরের ভিক্টোরিয়া সংলগ্ন এলাকায় আজকের বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ এই বিষয়ে পরিবেশবিদ সৌমেন্দ্রমোহন ঘোষ বলেন,"তাপমাত্রা কমলে বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ বৃদ্ধি পায় ও তা নিচে নেমে আসে, বিজ্ঞানসম্মতভাবে এটা ঠিক । কিন্তু বছরভর পরিবেশ দূষণ রোধে যে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়, তা কি আদৌ বাস্তবায়ন হয় ? এখনও বর্ধমান, হুগলি-সহ বিভিন্ন জেলায় ন্যাড়া পোড়ানো হয় । ডিসেম্বরের মধ্যে শহর কলকাতা থেকে 15 বছরের বেশি পুরনো গাড়ি তুলে দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল । সেই কাজ কতটা হল ? রাস্তার ধারের কয়লার উনুন থেকেও দূষণ ছড়ায় । তাই ন্যাড়া পোড়ানো বন্ধ-সহ 15 বছরের উর্ধ্বে যে সমস্ত ডিজেলচালিত গাড়ি রয়েছে তা দ্রুত বন্ধ করতে হবে । রাস্তায় যাতে দীর্ঘক্ষণ ট্র্যাফিক জ্যাম না থাকে সেদিকে নজর দিতে হবে । দিনে দু'তিনবার করে জল ছেটানোর পাশাপাশি রাস্তার দু'পাশে থাকা গাছের পাতা ধুতে হবে । আর জেলা প্রশাসনকে সতর্কভাবে কৃষক ভাইদের কাছে অনুরোধ করতে তারা যেন ন্যাড়া না পোড়ায় । সর্বোপরি সাধারণ মানুষদের সর্বক্ষণ সতর্ক থাকা উচিত ।"
আরও পড়ুন :সপ্তাহান্তেও দিল্লিতে দূষণের মাত্রা 'গুরুতর'