কলকাতা, 12 জুলাই:জল ধরো জল ভরোর ডাক দিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । এই নামে প্রকল্প আছে রাজ্য সরকারের । গ্রামবাংলায় এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন দেখা গেলেও কলকাতায় এমন প্রকল্পের সংখ্যা শূন্য । উলটে কলকাতায় জল সংরক্ষণ নিয়ে চরম উদাসীনতাই নজরে এসেছে । আজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জল সংরক্ষণ দিবসে বার্তা দিয়েছেন সামাজিক মাধ্যমে । ক্ষমতায় আসার পর থেকে 12 জুলাই দিনটিকে জল সংরক্ষণ দিবস হিসেবে পালন করছে রাজ্য সরকার ৷ তবে জল সংরক্ষণে সরকারি পদক্ষেপ কতটা, সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা ৷
এক দিকে বাড়ছে সমুদ্রের জলস্তর আর অন্য দিকে সমুদ্র লাগোয়া উত্তর 24 পরগনা, দক্ষিণ 24 পরগনা ও কলকাতায় কমছে মাটির নীচের জলস্তর । বিশেষ করে কলকাতায় এই ঘটনা প্রবল ভাবে ঘটছে । বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, মাটি টানছে লবণাক্ত জল ৷ ফলে ভবিষ্যতে পানীয় জল বলে কলকাতার মাটির তলায় অবশিষ্ট আর কিছু থাকবে না । কারণ মাটির তলায় জল যেমন তুলে নেওয়া হচ্ছে, তার পাশাপাশি ভূগর্ভস্থ জল রিচার্জ করার কোনও পথ খোলা থাকছে না ৷ বুজে যাচ্ছে বড় বড় পুকুর, উঠছে বহুতল ।
জলাশয় বন্ধ করার মধ্যে দিয়েই বন্ধ হচ্ছে মহানগরের ভূগর্ভস্থ জলভান্ডারের রিচার্জের পথ । এ দিকে হুগলি নদীর জল তুলে তাকে পরিশোধন করে পানীয় জলে পরিণত করা হয় । একাংশের কাছে সেই জল না পৌঁছনোর জেরে একের পর এক গভীর নলকূপ লাগিয়ে জলের সংকট সামাল দিচ্ছে পৌর প্রশাসন ।
কলকাতায় বাস্তবে জল সংরক্ষণের কোনও ছবির দেখা মেলেনি । আর তার জেরে কতটা বিপদের মুখে দাঁড়িয়ে কলকাতা ? কলকাতায় কোনও জল সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেই । পুকুর, জলাশয়গুলো কমে যাওয়ায় মাটির তলায় জলের অনুপ্রবেশ ঘটে না । উলটে বহুতলগুলি নিত্য প্রয়োজনীয় কাজের স্বার্থে পাম্প করে মাটির নীচের জল তুলে নেয় । ফলে কলকাতায় মাটির নীচে জলস্তরের তারতম্য বেশি লক্ষ্য করা যায় । মাটির ভারসাম্য যাচ্ছে । জল তুলে নেওয়াতে ঘাটতি তৈরি হচ্ছে । অন্যদিকে, সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় সেই জলকে মাটি টানতে শুরু করবে । মহানগরের মাটির তলার জল লবণাক্ত হয়ে যাবে ।