পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

ত্রিপল চুরি আমার লেভেল নয় : শুভেন্দুকে পাল্টা অভিষেকের - শুভেন্দু অধিকারী

মঙ্গলবার দিনের শেষে সংবাদমাধ্যমের সামনে শুভেন্দু-দিলীপকে একহাত নিলেন অভিষেক ৷ বললেন, তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করার আগে বিজেপি নেতৃত্ব নিজের অন্তর্কলহ মেটাক । পাশাপাশি নিজের রাজনৈতিক 'লেভেল'-ও স্পষ্ট করলেন ৷ বললেন, "ত্রিপল চুরি আমার লেভেল নয় ৷"

শুভেন্দুকে পাল্টা অভিষেক
শুভেন্দুকে পাল্টা অভিষেক

By

Published : Jun 8, 2021, 10:44 PM IST

কলকাতা, 8 জুন : সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই দলের প্রবীণ, অভিজ্ঞ নেতাদের বাড়ি গিয়ে তাঁদের আশীর্বাদ নিচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় । রবিবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সুব্রত বক্সি-সুব্রত মুখোপাধ্যায়, সোমবার লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার পর মঙ্গলবার বিকেলে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা তথা সাংসদ সৌগত রায়ের বাড়ি গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করলেন এই যুবনেতা । দু'জনের মধ্যে প্রায় 40 মিনিট কথা হয় । সেখান থেকে বেরিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে একহাত নিলেন অভিষেক ।

এদিনই দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেন শুভেন্দু । স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সামনে তিনি 356 ধারা জারির পক্ষে সওয়াল করেন ৷ দিনের দিনই শুভেন্দুর সেই দাবি খারিজ করে দিয়েছেন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ । তিনি বলেন, "কে কী বলেছেন তা আমার জানা নেই । তবে এটুকুই বলতে পারি তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করার আগে বিজেপি নেতৃত্ব নিজের অন্তর্কলহ মেটাক ।"

ঘটনার সূত্রপাত সোমবার । তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেওয়ার পর ওইদিনই শুভেন্দু সম্পর্কে অভিষেক বলেছিলেন, "উনি দিল্লির বশ্যতা স্বীকার করে কুত্‍সা না করে বিরোধী দলনেতার মতো দায়িত্বশীল আচরণ করুন । গঠনমূলক ভূমিকা পালন করুন । এই অনুরোধই করব ।" যার জবাবে মঙ্গলবার দিল্লিতে শুভেন্দু বলেন, "প্রথমত, তৃণমূল কোনও দলই নয় ! ওটা একটা প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি । একটা আঞ্চলিক পার্টি । আমি ওই পার্টির কোনও নেতার প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে রাজি নই । আমার লেভেলের কোনও নেতাকে বলতে বলবেন, তার উত্তর আমি দিয়ে দেব ।"

সেখানেই না-থেমে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা একধাপ এগিয়ে বলেন, "শাসকদলের হয়ে নির্বাচনে জেতা যায় । শাসকদলের হয়ে অনেক বড় বড় কথা বলা যায় । আমি শুভেন্দু অধিকারী, বামফ্রন্টের আমলে 2006 সালের বিধায়ক । আমি শুভেন্দু অধিকারী, 213 সিট নিয়ে জিতে-আসা মুখ্যমন্ত্রীকে হারিয়েছি । সরকারি ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে নির্বাচনে জিতেছি এমনটাও নয় । 2011 সালের পর যাঁরা সোনার চামচ মুখে নিয়ে 2 হাজার পুলিশ নিয়ে রাস্তা পেরোন, সরকারি হেলিকপ্টার নিয়ে ঘুরে বেড়ান, তাঁদের কথার উত্তর স্রোতের বিরুদ্ধে থেকে, শাসকদলের বিরুদ্ধে থেকে, লক্ষ্ণণ শেঠ-মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারানো শুভেন্দু অধিকারীর মতো লোক দেবে না !"

দিল্লিতে বিরোধী দলনেতার ওই মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অভিষেকের আক্রমণাত্মক জবাব, "উনি আজকে বলেছেন উনি আমার লেভেলের না ৷ ওঁর লেভেলটা কী, আমি জানতে চাইছি । তিনমাস আগে যখন প্রতিটা সভায় আমার বাপবাপান্ত করে কথা বলতেন, তখন ওঁর লেভেলটা কী উপরে উঠে গিয়েছিল ? নাকি এখন লেভেলটা নেমে গিয়েছে ? ওঁর লেভেলটা কী ?" অভিষেকের আরও কটাক্ষ, "এই যে তিনি এত বড় বড় কথা বলছেন, ওঁর বাড়ির লোক তো ত্রিপল চুরিতে অভিযুক্ত ৷ নিশ্চিতভাবেই উনি ঠিকই বলেছেন, ওটা ওঁর লেভেল নয় । তাই ওটা আমারও লেভেল নয় ।"

শুভেন্দু এবং অভিষেকের মধ্যে এই দ্বৈরথ চরমে উঠেছে ভোটের সময় থেকেই । ভোটপর্ব মিটে যাওয়ার পরেও সেই বাকযুদ্ধ কমার লক্ষণ তো নেই-ই বরং আরও বেড়ছে । শুভেন্দু অধিকারী এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এখন পরস্পরের যুযুধান । ফলে বিরোধিতা আরও চরম আকার নিচ্ছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহালমহল । এখন দেখার, আগামীতে এই দ্বন্দ্ব শেষপর্যন্ত কোন জায়গায় গিয়ে দাঁড়ায় ।

আরও পড়ুন : বিজেপিকে ভাঙাতে চাইলে ফল ভালো হবে না, তৃণমূলকে হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর

ABOUT THE AUTHOR

...view details