পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

কলকাতায় ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স চালুর পরিকল্পনা দিল্লি দম্পতির - কলকাতায় ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স চালুর পরিকল্পনা

কলকাতায় গরিব এবং অভাবি মানুষের জন্য বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্সের পরিষেবা চালু করতে চলেছেন দিল্লির এই দম্পতি ৷ রক্তের অভাবে কারও যাতে মৃত্যু না হয়, তার জন্য তাঁরা চালু করতে চলেছেন ব্লাড ডিরেক্টরিও । তাঁদের একজনকে বলা হয় অ্যাম্বুলেন্স ম্যান অফ ইন্ডিয়া । অন্যজনকে বলা হয় ইন্ডিয়াজ় ফার্স্ট উওম্যান অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার ।

হিমাংশু কালিয়া এবং টুইঙ্কল কালিয়া‌

By

Published : Nov 14, 2019, 9:10 PM IST

কলকাতা, 14 নভেম্বর : একজনকে বলা হয় "অ্যাম্বুলেন্স ম্যান অফ ইন্ডিয়া" । অন্যজনকে বলা হয় ইন্ডিয়াজ় ফার্স্ট ওম্যান অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার । তাঁরা হিমাংশু কালিয়া এবং টুইঙ্কল কালিয়া‌ । দিল্লির এই দম্পতিই কলকাতায় এবার গরিবের জন্য বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা চালু করতে চলেছেন । রক্তের অভাবে কারও যাতে মৃত্যু না হয়, তার জন্য তাঁরা চালু করতে চলেছেন ব্লাড ডিরেক্টরিও ।

ইতিমধ্যে, দেশের বিভিন্ন শহর মিলিয়ে এই ধরনের 16টি অ্যাম্বুলেন্স তাঁরা চালু করতে পেরেছেন । অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে চার হাজার মানুষের প্রাণ বাঁচানোর জন্য রাষ্ট্রপতি পুরস্কারেও সম্মানিত হয়েছেন টুইঙ্কল কালিয়া । একথা জানিয়ে হিমাংশু কালিয়া বলেন, "আগামী মার্চ মাসে সর্বভারতীয় স্তরে আমরা 15 লাখ রক্তদাতার একটি ডিরেক্টরি চালু করতে চলেছি ।" এখনও পর্যন্ত দিল্লি, মুম্বই, গাজিয়াবাদ, গুরুগ্রাম, দেরাদুন, জয়পুর, চণ্ডিগড়, করনাল, অমৃতসর, হায়দরাবাদ এবং আমেদাবাদে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা চালু করতে পেরেছেন । এই সব শহরে মোট 16টি অ্যাম্বুলেন্স চালু রয়েছে । এই কথার পাশাপাশি তিনি বলেন, "এবার কলকাতায় আমরা অ্যাম্বুলেন্সের এই পরিষেবা চালু করতে চলেছি । আগামী মার্চ মাসে কলকাতায় পাইলট প্রজেক্ট হিসাবে একটি অ্যাম্বুলেন্স চালু করা হবে । আগামীদিনে দেশজুড়ে এই ধরনের দেড় হাজার অ্যাম্বুলেন্স চালুর পরিকল্পনা রয়েছে ।"

1992-তে 14 বছর বয়সি হিমাংশুর বাবা পথদুর্ঘটনার শিকার হন । তিনি বলেন, "রক্তের জন্য কারও সাহায্য পাইনি । অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করার জন্য সঙ্গে টাকাও ছিল না । রিক্সা করে 7-8টি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । অবশেষে, চিকিৎসা শুরু হয় । কিন্তু, চিকিৎসা দেরিতে শুরু হওয়ায় বাবা কোমায় চলে গিয়েছিলেন । তখনই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, আমি যে দিন দেখলাম, এই দিন অন্য কারও জীবনে আর দেখতে দেব না ।" তাঁর বাবা দু'বছর কোমায় ছিলেন । তারপরে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন । 2002-এ বিয়ের সময় হিমাংশু শ্বশুরবাড়ি থেকে গাড়ি, আসবাবপত্র দিতে চাওয়া হয়েছিল । তিনি নিতে চাননি । কিন্তু, তারপরও কিছু দিতে চাইলে তখন তিনি জানিয়েছিলেন, যদি দিতেই হয় তবে পণ হিসেবে নয়, দান হিসেবে তাঁকে যেন একটি অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হয় । কারণ, অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে তিনি মানুষের সেবা করতে পারবেন । এরপর অ্যাম্বুলেন্সের এই পরিষেবা শুরু হয় বলে তিনি জানিয়েছেন ।

বিমা সংস্থার এজেন্ট হিসেবে তাঁরা কাজ করেন । নিজেদের আয় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা ইন্সটলমেন্টে একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স কিনেছেন । হিমাংশু বলেন, "2007-এ আমার স্ত্রীর লিভারের ক্যানসার এবং হেপাটাইটিস বি পজ়িটিভ ধরা পড়ে । চিকিৎসক বলেছিলেন, ছয় মাসের বেশি আমার স্ত্রী বাঁচবেন না ।" তবে, এরপরে নিয়মিত তাঁর স্ত্রী'র রক্ত পরীক্ষা হতে থাকে । এক সময় রিপোর্টকে ভুল সন্দেহ করেন চিকিৎসক । তখন অন্য ল্যাবরেটরি থেকে পরীক্ষা করানো হয় । এরপরে দেখা যায়, লিভার সেরে গিয়েছে । হেপাটাইটিস বি নেগেটিভ হয়ে গিয়েছে । এই ঘটনার পরে তাঁর স্ত্রীও পরিষেবা দিতে শুরু করেন । টুইঙ্কল তখন থেকেই অ্যাম্বুলেন্স চালাচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন হিমাংশু ।

ABOUT THE AUTHOR

...view details