কলকাতা, 22 জানুয়ারি : গত পরশুই প্রকাশ্যে এসেছে স্কুল শিক্ষা দপ্তরের কমিশনারের জারি করা নির্দেশিকা । যেখানে বলা হয়েছে, 'পাড়ায় সমাধান' প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে 87 জন শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে । তাঁদের আজকের মধ্যে নতুন স্কুলে যোগ দিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । আর সেই নির্দেশিকা সামনে আসতেই মাথাচাড়া দিয়েছে বিতর্ক । অভিযোগ, বদলি হওয়া শিক্ষকদের অনেকেই বদলির জন্য আবেদন করেননি । তা সত্ত্বেও কোন নিয়মে তাঁদের বদলি করা হল ? আজ এর প্রতিবাদ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছে একটি শিক্ষক সংগঠন ।
এই মর্মে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতির উদ্দেশে স্কুল শিক্ষা দপ্তরের কমিশনার অনিন্দ্য নারায়ণ বিশ্বাস নির্দেশিকা জারি করে ৷ নির্দেশিকায় বলা হয়, পাড়ায় সমাধান প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে 87 জন শিক্ষককে প্রশাসনিক গ্রাউন্ডে বদলি করা হয়েছে যেখানে শিক্ষকের ঘাটতি রয়েছে । স্কুল শিক্ষা দপ্তরের কাছে রিপোর্ট জমা পড়েছে যে বদলি হওয়া শিক্ষকদের অনেককেই এখনও পর্যন্ত রিলিজ করা হয়নি এবং তাঁরা নতুন স্কুলে যোগ দেননি । তাই পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, 22 জানুয়ারির মধ্যে ওই সকল শিক্ষকের রিলিজ ও জয়েনিং নিশ্চিত করতে । 'পাড়ায় সমাধান' পোর্টালে আপলোড করার জন্য নির্দেশ মানার প্রমাণ 22 জানুয়ারির মধ্যে দপ্তরে পাঠাতে বলা হয়েছে ।
তবে বদলি হওয়া 87 জন শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্যে অনেকেই বদলির আবেদন করেননি বলে জানা গিয়েছে । তাহলে কী করে আবেদন ছাড়াই বদলি হল ? এই প্রশ্ন তুলে প্রতিবাদে সরব হয়েছে শিক্ষক মহল । আবার দেখা গেছে, কয়েকজনকে কাছাকাছি কোনও স্কুলে বদলি করা হয়েছে । গত পরশু জারি করা কমিশনারের নির্দেশিকায় এই বদলিকে প্রশাসনিক বদলি বলা হলেও, নির্দেশে 'সাধারণ বদলি' বলা হয়েছে । সব মিলিয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষক মহল ।
মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠি মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মিত্র বলেন, "87 জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে যে পদ্ধতিতে প্রশাসনিক বদলি করা হয়েছে তা অত্যন্ত নিন্দাজনক । পাড়ায় সমাধানের নাম করে অন্যায় ও অযৌক্তিকভাবে এইসব শিক্ষক-শিক্ষিকারা বদলির জন্য আবেদন না করলেও তাঁদের বদলির আওতায় আনা হল সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে । সাধারণ বদলির নামে জোরপূর্বক বদলি করা হচ্ছে যা অত্যন্ত অনভিপ্রেত । আমরা মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীকে মেল করে জানিয়েছি, এই ধরনের প্রশাসনিক বদলি আদৌ কাম্য নয় ৷ এবং এভাবে শূন্যপদ পূরণ করে সমস্যার সমাধান করা যাবে না । পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত জেলার প্রধান শিক্ষক ও সহ-শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীবৃন্দ এই বদলি চাইছে না । অবিলম্বে স্কুল শিক্ষা কমিশনারের এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা সরকারিভাবে বাতিল বলে ঘোষণা করতে হবে । নাহলে আমরা এর বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য থাকব ।"