ঝাড়গ্রাম, 2 অক্টোবর : কোরোনার উপসর্গ ছিল বৃদ্ধার । পরীক্ষায় রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে । বছর সাতাত্তরের ওই বৃদ্ধাকে ভরতি করা হয় ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে । কিন্তু পরে হাসপাতাল থেকে ছাড়ার সময় আর দ্বিতীয়বার কোরোনা পরীক্ষা করা হয়নি । বাড়ি ফেরার পর থেকেই শুরু হয় তীব্র শ্বাসকষ্ট । তিনদিন শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভোগার পর বাড়িতেই মৃত্যু হয় । হাসপাতালের গাফিলতিতেই বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের । ঝাড়গ্রাম পৌরসভার 10 নম্বর ওয়ার্ডের ঘোড়াধরা এলাকার ঘটনা ।
মৃতার ছেলে কর্মসূত্রে খড়গপুরে থাকতেন । 17 সেপ্টেম্বর ঝাড়গ্রামের বাড়িতে ফেরেন তিনি । 21 সেপ্টেম্বর থেকে তীব্র শ্বাসকষ্ট । ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যান তিনি । কোরোনা পরীক্ষা করা হয় । রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে । 21 সেপ্টেম্বর ভরতি করা হয় কোরোনা হাসপাতালে ।
পরের দিনই অর্থাৎ 22 সেপ্টেম্বর ওই যুবকের বৃদ্ধা মাও প্রবল শ্বাসকষ্ট অনুভব করতে থাকেন । সেদিনই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে । কোরোনা পরীক্ষা করা হলে তাঁরও রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে । ওই দিনেই ভরতি করা হয় হাসপাতালে ।
আরও পড়ুন :বিল নিয়ে অভিযোগ, দোষ না থাকলেও 15 হাজার টাকা ছাড় বেসরকারি হাসপাতালের
মৃতার ছেলের অভিযোগ, কোরোনা হাসপাতালে কয়েকদিন রাখার পর তাঁকে পুনরায় পরীক্ষা না করেই ছুটি দেওয়া হয় 27 সেপ্টেম্বর । কেবল জানতে চাওয়া হয়, তিনি সুস্থ আছেন কি না । ঠিক তার পরের দিন অর্থাৎ 28 সেপ্টেম্বর বৃদ্ধাকেও কোরোনা হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয় । ছুটির পর থেকেই তীব্র শ্বাসকষ্ট । তিন দিন ধরে শ্বাসকষ্ট নিয়ে বাড়িতেই পড়ে ছিলেন তিনি । গতকাল সকাল 8 টায় প্রবল শ্বাসকষ্টজনিত কারণে মৃত্যু হয় বৃদ্ধার ।
বৃদ্ধার ছেলে ঝাড়গ্রামের কোরোনা হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, "কোরোনা পজ়িটিভ আছি কি না তা পরীক্ষা না করেই ছুটি দেওয়া হয়েছিল আমাদের । তার পরিণাম এই । কোরোনা হাসপাতালে ভরতি থাকাকালীন তিন দিন জলের সমস্যায় ভুগেছি । আমরা চারতলায় ভরতি ছিলাম । পানীয় জলের মেশিন খারাপ হওয়ার কারণে সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় নেমে জল নিয়ে গেছি । সকালে অক্সিজেন চাইলে সন্ধ্যায় পেতাম ।"
হাসপাতালের গাফিলতিতেই মৃত্য হয়েছে বৃদ্ধার, দাবি পরিবারের আরও পড়ুন :কোরোনা পরীক্ষার খরচ কমিয়ে দিয়েও পিছু হটল স্বাস্থ্য দপ্তর
মৃত্যুর খবর পেয়ে সাহায্যের জন্য আসেন 10 ওয়ার্ডের প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর ঘনশ্যাম সিং, ওই ওয়ার্ডের তৃণমূলের প্রাক্তন আহ্বায়ক গৌতম সিং ও ঝাড়গ্রাম শহর তৃণমূল যুবর সহ-সভাপতি উজ্জ্বল পাত্র । গতকাল দুপুর 12 টা নাগাদ মৃতদেহ সৎকারের জন্য গাড়িতে তোলা হলে পুলিশ এসে দেহ নিয়ে যেতে বাধা দেয় বলেও অভিযোগ । পুলিশের দাবি, দিনের বেলায় দাহ করা হলে গন্ডগোল হতে পারে । তাই মৃতার দেহ গতকাল সন্ধ্যা 7 টা পর্যন্ত বাড়িতেই পড়ে ছিল । পরে রাত প্রায় দশটা নাগাদ দেহ সৎকার করা হয় ।
যদিও এই বিষয়ে স্বাস্থ্যবিভাগের কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি । তবে ঝাড়গ্রাম হাসপাতালের সুপার ইন্দ্রনীল সরকার জানিয়েছেন, "রোগীর ছুটি হয়ে গেছিল । তারপর কী হয়েছে তা জানা নেই ।"