পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

Elephant Attack: হাতির তাড়া খেয়ে জলে ঝাঁপ কৃষকের, মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশায় বনবিভাগ

এলাকায় হাতি ঢোকার খবর পেয়ে নিজের ধানজমি দেখতে গিয়েছিলেন এক কৃষক ৷ হাতির তাড়া খেয়ে প্রাণে বাঁচতে জমির পাশে থাকা একটি পুকুরে ঝাঁপ দেন তিনি ৷ সেখানেই জলে ডুবে মৃত্যু হয় তাঁর ৷

Etv Bharat
হাতির তাড়া খেয়ে ঝাড়গ্রামে কৃষকের মৃত্যু

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Nov 5, 2023, 10:31 PM IST

হাতির তাড়া খেয়ে ঝাড়গ্রামে কৃষকের মৃত্যুতে স্থানীয়দের ক্ষোভ

ঝাড়গ্রাম, 5 নভেম্বর: হাতির হাত থেকে ধানজমি রক্ষা করতে গিয়েছিলেন ৷ কিন্তু হাতির তাড়া খেয়ে পুকুরে ডুবে মৃত্যু হল এক কৃষকের । মৃতের নাম পরীক্ষিত মাহাতো (42) । বাড়ি ঝাড়গ্রাম থানার অন্তর্গত বড়চাঁদাবিলা গ্রামে । স্থানীয় ও বনবিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যা থেকে জামবনি ব্লকের ডুলুং নদী সংলগ্ন ধনিয়াপাল এলাকায় দু-তিনদিন থেকে অবস্থান করা প্রায় 40টি হাতির দলকে ড্রাইভ করা হচ্ছিল । হাতির দলটি জামবনি ব্লকের দিক থেকে ঝাড়গ্রাম রেঞ্জের পুকুরিয়া বিটের ধান জমিতে ঢুকে পড়ে ।

এলাকায় হাতির দল আসার খবর চাউর হতেই চাষীরা হাতে বড় টর্চ লাইট নিয়ে জমির দিকে রওনা দেয় । পুকুরিয়া বিটের বড়চাঁদাবিলা গ্রাম সংলগ্ন ধানজমির কাছে হাতির দলটি ঢুকে পড়ে । সেই সময় হঠাৎ করে হাতির দলের সামনে পড়ে যান পরীক্ষিত মাহাতো । স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, পরীক্ষিত হাতির হাত থেকে বাঁচার জন্য ধানজমির পাশেই থাকা একটি পুকুরে ঝাঁপ দেয় । পরীক্ষিতকে তাড়া করে কয়েকটা হাতি পুকুরের জলে নেমে পড়ে । পরে হাতির দলটি বড়চাঁদাবিলা এলাকার ধান জমি থেকে বেরিয়ে ঝাড়গ্রাম-চন্দ্রী পিচ রাস্তা পেরিয়ে ঢেকিপুরার জঙ্গলের দিকে চলে যায় । এই ঘটনার পর থেকেই পরীক্ষিতের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি ।

রবিবার সকালে পুকুরের মধ্যে পরীক্ষিতের গামছা ও টর্চ লাইট ভেসে থাকতে দেখেন গ্রামবাসীরা । বিষয়টি পুলিশ ও প্রশাসনকে জানানো হলে ঝাড়গ্রাম ব্লকের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের ডুবুরি নামিয়ে সকাল থেকে পুকুরে তল্লাশি অভিযান চালানো হয় । আনুমানিক দুপুর দু'টোর সময় পুকুর থেকে মৃত অবস্থায় পরীক্ষিতের দেহ উদ্ধার হয় । এরপর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে আসতে চাইলে এলাকার মানুষজন ও পরীক্ষিতের মা-সহ পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে বাধা দেয় এবং বনবিভাগের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন ।

আরও পড়ুন : শুঁড়ে তুলে দুই গ্রামবাসীকে আছড়ে মারল হাতি, মৃতদের পরিবারকে 5 লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য

এই বিষয়ে বড়চাঁদাবিলা গ্রামের বাসিন্দা কল্পনা মাহাতো বলেন,"প্রতিনিয়ত এলাকায় হাতি ঢুকে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করছে । বনবিভাগকে জানিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না । তারা এখান থেকে হাতি অন্যত্র সরানোর কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না । আজ ধান জমি দেখতে গিয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে । কাল আরও অনেকেই মারা যেতে পারে হাতির হানায় ৷ তাই যতক্ষণ না পর্যন্ত বনবিভাগের লোক এসে ক্ষতিগ্রস্ত জমি দেখছে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা এখান থেকে দেহ নিয়ে যেতে দেব না ।"

যদিও কয়েকঘণ্টার মাথায় বনবিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ক্ষতিগ্রস্ত জমি পরিদর্শন করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ ও ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিলে দেহ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে আসতে দেন গ্রামবাসীরা । যদিও পরীক্ষিতের মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছে বনবিভাগ । এই বিষয়ে ঝাড়গ্রমের বনাধিকারিক পঙ্কজ সূর্যবংশী বলেন,"শরীরে তেমন কোনও আঘাতের বড় চিহ্ন নেই । হাতির হানায় মৃত্যু হয়েছে কি না, তা কিন্তু স্পষ্ট নয় । ময়নাতদন্তের রিপোর্টের উপর নির্ভর করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে । ওই এলাকায় ফসলের যা ক্ষতি হয়েছে তা সরকারি নিয়ম মেনে তাদেরকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে । হাতির গতিবিধির উপর নজর রাখা হচ্ছে ।"

আরও পড়ুন : ঝাড়গ্রামে ফের পূর্ণবয়স্ক হাতির মৃত্যু, কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা

ABOUT THE AUTHOR

...view details