জলপাইগুড়ি, 12 ডিসেম্বর: শাখা-পলা খুলে (Conch Shell and red coral bangles) টেট-এ বসতে হবে । নিয়মের বেড়াজালে পরীক্ষাই দেওয়া হল না জলপাইগুড়ির গৃহবধূর । শাখা-পলা পরে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় তাকে ৷ তিনি শাখা-পলা খুলতে রাজি না হওয়ায় টেট না দিয়েই বাড়িতে ফিরতে হয় তাঁকে । জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলায় এমন অনেক ঘটনা প্রকাশ্যে এল । জলপাইগুড়ি দেবনগর সতীশ লাহিড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের ঘটনা ৷ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের নিয়মটা আর একটু শিথিল করা উচিত ছিল দাবি পরীক্ষার্থী মৌমিতা চক্রবর্তীর ৷ এমন ঘটনা শুনে হতবাক জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri News) জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান লৈক্ষ্যমোহন রায় ।
জলপাইগুড়ি সেনাগ্রামের বাসিন্দা মৌমিতা চক্রবর্তী বলেন, "দীর্ঘদিন বাদে এ বারের প্রাথমিকের টেট (WB TET 2022) দিয়ে একটা চাকরি পাব বলে আশা করেছিলাম ৷ অতি উৎসাহ নিয়ে জলপাইগুড়ি দেবনগরের সতীশ লাহিড়ী উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম । পর্ষদের নিয়ম অনুযায়ী, কোনও অলঙ্কার পরে পরীক্ষা দেওয়া যাবে না । তাই বাড়িতেই সমস্ত সোনার গয়না খুলে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলাম । কিন্তু পরীক্ষা কেন্দ্রের গেটে থাকা পুলিশ কর্মীরা আমার শাখা ও পলা খুলতে বলে । যেহেতু আমার শাখা-পলা সোনা দিয়ে বাঁধানো ছিল । তাই পুলিশ কর্মীরা শাখা পলা খুলে ঢুকতে হবে বলে সাফ জানিয়ে দেন । কিন্তু আমার বিয়ের পর থেকেই আমি এই শখা-পলা পরে আসছি ৷ তাই আমি খুলতে পারব না জানিয়ে দিই । কারণ বিয়ের পর থেকে আমি শাখা-পলা হাত থেকে খুলিনি ৷ এ বারও খুলতে পারব না ৷ তাই পরীক্ষা কেন্দ্রে না ঢুকতে পেরে বাড়ি চলে আসি । কিন্তু একজন বিবাহিত মহিলার জন্য শাখ-পলা কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা সরকারের বোঝা উচিত ছিল । কী কী পরা যাবে সেটা পরিস্কার বলে দেওয়া উচিত ছিল । শাখা-পলাকেও অলংকারের মধ্যে ধরা হবে এটা ভাবতেই পারিনি ।"
অন্যদিকে, জলপাইগুড়ি তরুলপাড়া কাঠের ব্রিজের বাসিন্দা মাম্পি সরকার অভিযোগ করে বলেন, "আমার টেট-এর সিট পরেছিল ধুপগুড়িতে । পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে গেলে একটি হাতে লোহা বাঁধানো ছিল । সেটা খুলে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকার ছাড়পত্র দেওয়ার কথা বলা হয় । হাত থেকে কোনও ভাবেই খোলা যাচ্ছিল না । এরপর সোনার দোকানে গিয়ে কাটার চেষ্টা করলেও তা কাটা যায়নি । এরপর পরীক্ষাকেন্দ্রের পাশে থাকা একটি সাইকেলের দোকান থেকে এটি কাটা হয় । এরপর আমাকে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয় ।" মাম্পির দাবি, "সমস্ত নিয়ম ঠিক ছিল পর্ষদের ৷ শুধু বিবাহিত গৃহবধূদের ক্ষেত্রে শাখা, পলা ও লোহা বাঁধানো বিষয়ে নিয়মটা একটু শিথিল করা উচিত ছিল । অযথা পরিক্ষার্থীদের এইগুলি নিয়ে হয়রানি করা হয়েছে ।"