জলপাইগুড়ি , 14 নভেম্বর : অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায় বন্যপ্রাণীর দেহাংশ পাচারের কাজে জড়িয়ে পড়ছে ভুটানের সরকারি কর্মীরা । ইতিমধ্যে উত্তরবঙ্গের বনবিভাগের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের হাতে বেশ কয়েকজন ভুটানি নাগরিক গ্রেপ্তার হয়েছে । বন্যপ্রাণীর দেহাংশ পাচারের অভিযোগেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে । তবে মাঝে মধ্যেই ভুটানের স্কুলশিক্ষক, জওয়ান সহ সেদেশর শিক্ষিত মানুষও চোরাশিকারিদের সাথে জড়িয়ে পড়ছেন । এমনই তথ্য উঠে আসছে বন দপ্তরের কাছে ।
এ প্রসঙ্গে উত্তরবঙ্গের বনবিভাগের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের প্রধান সঞ্জয় দত্ত জানান , সম্প্রতি অসমের মানস জাতীয় উদ্যান থেকে একটি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের চামড়া সহ ভুটানের দুই নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল । গেলেফু বর্ডারের জন্য অসমের সঙ্গে ভুটানের যোগাযোগ ভালো । আর সেখান দিয়ে চোরাকারবারিরা ঢুকে চিনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে । ভুটানের নাগরিকরা বেশি পরিমাণে এই কাজে জড়িয়ে পড়ছে । তাঁরা ইতিমধ্যেই ভুটান সরকারের সাথে যোগাযোগ করে সমস্ত ব্যাপারটা জানিয়েছেন ।
তিনি আরও জানান ,ভুটানের নাগরিকরা টাকার জন্যই এই কাজ করছে । বন্যপ্রাণীর দেহাংশ বিক্রি করলে অনেক টাকা পাওয়া যাবে বলেই তাদের ধারণা । এই নিয়ে এখনও পর্যন্ত তাঁরা অনেককেই গ্রেপ্তার করেছেন । সবাই প্রায় একই কারণ দেখিয়েছে । হাতির দাঁত সহ এক ভুটানি নাগরিককে ধরা হলে সে জানিয়েছে ব্যাঙ্কের লোন ছিল । আর এই হাতির দাঁত পাচার করতে পারলে ৫ লাখ টাকা পেত এবং লোন পরিশোধ করত । এর আগে আর এক ভুটানি মহিলা ধরা পরেছিল । ব্যাঙ্ককে নিয়ে যাচ্ছিল বন্যপ্রাণীর দেহাংশ । সেও জানায়, টাকার জন্যই সে পাচার করছিল । পাশাপাশি ভুটানের যে সেনা জওয়ান ধরা পরেছিল সে জানায়, বাড়ি বানানোর জন্য সে এই কাজ করেছে । ভুটানের সাথে অসমের যোগাযোগ ভালো । অসম থেকে বন্যপ্রাণীর দেহাংশ নিয়ে তারা ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে নেপালে পাচার করছে বন্যপ্রাণীর দেহাংশ । এরপর সেটা চলে যাচ্ছে চিনে । গত কয়েক বছরের অসম ও ভুটান থেকে ৫০ জনের মতো বন্যপ্রাণীর দেহাংশ পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । বিষয়টি দিল্লিতে ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল বিওরো সহ ভুটানকে জানানো হয়েছে । এখন বন্যপ্রাণীর দেহাংশ পাচার রোধে ভুটান সরকার কী পদক্ষেপ নেয় এখন সেটাই দেখার ।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বাংলা-অসম সীমান্তের বারোবিশার কাছ থেকে 2 পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করেছে বন দপ্তরের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স । তাদের কাছ থেকে পাওয়া যায় হাতির দাঁত ৷