পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

Jalpaiguri Special : স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডাক্তার নেই, জ্বরে আক্রান্ত শিশুদের রেফার করা হচ্ছে 20 কিমি দূরের হাসপাতালে

চা বাগান ও পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে মায়েরা বাচ্চাদের চিকিৎসার জন্য আসছেন রামশাই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে । কিন্তু ডাক্তার না থাকায় শিশুকে না দেখেই কার্যত পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে ৷ যা কিনা 20 কিলোমিটার দূর ৷ দীর্ঘদিন ধরে ডাক্তারের দাবি জানিয়েও লাভ হয়নি বলে জানালেন স্থানীয়রা ৷

ময়নাগুড়ির রামশাই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডাক্তার নেই, দুর্ভোগে জ্বরে আক্রান্ত শিশুর অভিভাবকরা
ময়নাগুড়ির রামশাই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডাক্তার নেই, দুর্ভোগে জ্বরে আক্রান্ত শিশুর অভিভাবকরা

By

Published : Sep 16, 2021, 9:29 PM IST

Updated : Sep 16, 2021, 10:16 PM IST

জলপাইগুড়ি, 16 সেপ্টেম্বর : স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সংলগ্ন এলাকাতেই অজানা জ্বরে মৃত্যু হয়েছে দুই শিশুর ৷ কিন্তু, এই ঘটনার পরেও ময়নাগুড়ি ব্লকের রামশাই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বেহাল অবস্থা ৷ এখানেও প্রতিদিন জ্বরে আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে আসছেন অভিভাবকরা ৷ কিন্তু প্রাথমিক পরিষেবা দেওয়ার বদলে তাদের সকলকেই রেফার করা হচ্ছে 20 কিমি দূরে অবস্থিত ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে ৷ কারণ এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোনও ডাক্তার নেই । কেবল রয়েছেন একজন ফার্মাসিস্ট আর নার্স ৷ অন্তত এমনটাই অভিযোগ শিশুর অভিভাবকদের ৷


এই রামশাই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ময়নাগুড়ি ব্লকের শেষ প্রান্তে অবস্থিত । একদিকে যাদবপুর চা বাগান ৷ অন্যদিকে বনবস্তি অধ্যুষিত এলাকা । আশেপাশের বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত, চা বাগান ও বনবস্তির মানুষজন এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপরই নির্ভরশীল । দীর্ঘদিন ধরেই এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডাক্তার নেই বলে জানান স্থানীয়রা ৷

গত দু'দিনে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র লাগোয়া আমগুড়ি পঞ্চায়েতের দুটি শিশু জ্বর ও শ্বাসকষ্ট হয়ে মারা গিয়েছে । যদিও এই বিষয়ে স্বাস্থ্য দফতরের জানিয়েছে ওই শিশু দুটিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল ৷

আরও পড়ুন :Fever in Children : জলপাইগুড়িতে একসঙ্গে 130 শিশুর জ্বর, নমুনা যাচ্ছে কলকাতায়

চা বাগান ও পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে মায়েরা বাচ্চাদের চিকিৎসার জন্য আসছেন । কিন্তু ডাক্তার না থাকায় শিশুকে না দেখেই কার্যত পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে ৷ দশ বছরের উপর বয়স হলে তবেই ওষুধ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান অভিভাবকরা ৷ দীর্ঘদিন থেকে ডাক্তারের দাবি জানানো হলেও হুঁশ ফেরেনি ময়নাগুড়ি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের ৷ অন্তত এমনটাই অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা ৷

স্থানীয় বাসিন্দা ও অসুস্থ শিশুদের অভিভাবক তপন রায় ও পম্পা রায়রা জানান, বাচ্চাকে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে এলাম রামশাই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৷ কিন্তু এখানে ডাক্তার নেই । তাই দেখাতে পারলাম না । আমাদের রেফার করে দেওয়া হল ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে ।

ময়নাগুড়ির রামশাই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডাক্তার নেই, দুর্ভোগে জ্বরে আক্রান্ত শিশুর অভিভাবকরা
এই বিষয়ে রামশাই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নার্স প্রণমী দেব জানান, আমাদের কিছুই করার নেই । দীর্ঘদিন থেকে ডাক্তার নেই । শিশুরা অনেকেই জ্বর নিয়ে আসছে । কিন্তু ডাক্তারবাবু নেই তাই আমরা অভিভাবকহীন । আমাদের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক চেষ্টা করছেন ডাক্তারবাবু দেওয়ার । কিন্তু এখনও কেউ আসেননি ।

ময়নাগুড়ির ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক লাকি দেওয়ান জানান, রামশাই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ডাক্তার করোনায় মারা গিয়েছেন ৷ তারপর থেকে সেখানে কোনও স্থায়ী ডাক্তার নেই । উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ডাক্তারের জন্য রিকুইজিশন দেওয়া হয়েছে ৷

আরও পড়ুন :Coochbehar : জলপাইগুড়ি, মালদার পর কোচবিহার; জ্বরে আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা বাড়ছে

এদিকে জলপাইগুড়ি জেলার ভারপ্রাপ্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ জ্যোতিষ চন্দ্র দাস বলেন, "আমার জানা নেই যে রামশাই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডাক্তার নেই । সেখানে ডাক্তার থাকার কথা । শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ না থাকলেও জেনারেল ফিজিশিয়ান থাকার কথা । আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব কেন সেখানে ডাক্তার নেই ৷"

এই বিষয়ে জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু জানান, গ্রামের মানুষরা যাতে চিকিৎসা পরিষেবা পায় আমরা তা দেখছি । যে সব এলাকায় জ্বরে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়বে সেখানে স্বাস্থ্য দফতরের টিম পাঠানো হবে । জ্বরে আক্রান্ত শিশুদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রামশাই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সমস্যার বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন । আমরা এটার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব ।

বৃহস্পতিবার জেলা স্বাস্থ্য দফতর, পূর্ত দফতর ও পুরসভার প্রশাসকদের নিয়ে বৈঠকে বসেন জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু । এদিনের বৈঠকে তিনি জানান শিশুদের চিকিৎসার কোনও খামতি রাখা যাবে না ৷

এদিন তিনি আরও বলেন, "এই মুহূর্তে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে 105 জন শিশু ভর্তি আছে । এদিন 32 জন শিশু ভর্তি হয়েছে ৷ সুস্থ হয়ে যাওয়ায় 31 জনকে ছেড়ে দেওয়ারা পাশাপাশি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে তিনজনকে । যাদের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে আরএসবি ও ইনফ্লুয়েঞ্জা রয়েছে ।"

আরও পড়ুন :Malda Medical : মালদা মেডিক্যালে শিশু মৃত্যু বেড়ে হল 3 ; অস্বাভাবিক নয়, দাবি কর্তৃপক্ষের

Last Updated : Sep 16, 2021, 10:16 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details