জলপাইগুড়ি, 8 নভেম্বর : কথিত আছে মাটি খুঁড়তে গিয়ে কোদাল লেগে নাকি পেট কেটে গিয়েছিল । আর তা থেকেই নাম পেটকাটি । সম্পূর্ণ এক রহস্যাবৃত্তের আড়ালে রয়েছে জলপাইগুড়ি জেলার প্রাচীন জনপদ ময়নাগুড়ির পেটকাটি কালী মূর্তি বা পেটকাটি মাও । কালো কষ্টি পাথরের এই প্রাচীন পেটকাটি মূর্তির ছবি দেখলে শিহরণ জাগে । এই দেবী মূর্তি কালী হিসেবে পূজিত হলেও, সংশয় যে এই মূর্তি চণ্ডী না তন্ত্রদেবীর কোনও মূর্তি কি না ।
মূর্তিটির উচ্চতা প্রায় সাড়ে চার ফুট, কষ্টি পাথরের । দশভুজা, তবে 3টি হাত ভেঙে গেছে । একটি পদ্মের উপর আসীন দেবী । বাম দিকের পাঁচটি হাতে রয়েছে হাতি, ঘণ্টা, ছিন্ন নরমুণ্ড, নরমূর্তি ও একহাত ভাঙা রয়েছে । ডানদিকের পাঁচটি হাতে রয়েছে হাতির মুখের অংশ, মানুষের কঙ্কাল, বাদ্য ঘণ্টা, অপর দুটি হাত ভাঙা । মুর্তির পেট কাটা এবং পেটের মধ্যে কাঁকড়া বিছের ছবি । দেবী এখানে সর্প নির্মিত ফণা ভরন তথা মাথায় সর্প শোভিত মুকুট, গলায় নরমুণ্ডের মালা ঝুলছে, সারা শরীর সর্পমালায় শোভিত । অস্থি চর্মসার শরীরে পেটের গহ্বরাকৃতি, শিড় দাঁড়ার উপরের দিকে রয়েছে কাঁকড়া বিছে । দেবীর দুটি চোখ বিস্ফোরিত হলেও কপালে ত্রিনয়ন রয়েছে । দেবীর পায়ের নিচে নারী মূর্তি, একদিকে শেয়াল, অপরদিকে পেঁচা রয়েছে ।
পেটকাটি মা আদপে কালী মূর্তি হলেও একে ধূমাবতী চণ্ডী কালী দেবী হিসেবেই কালী পুজোর সময় পুজো করা হয় বলে পুরোহিত কৈলাস দেব শর্মা জানান । তিনি বলেন, "কয়েক পুরুষ ধরে তারা এই মন্দিরে পুজো করে আসছেন । তবে এই মূর্তির বয়স কত তা আজও অজানা । তবে অত্যন্ত জাগ্রত এই দেবী । প্রতিদিনই দূরদুরান্ত থেকে মানুষ আসেন এই মন্দিরে । কালী পুজোর দিন অসম থেকেও ভক্তরা আসেন পুজো দিতে ।"