পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

ধান-তুলো থেকে পটল,লঙ্কা...ছাদেই চাষ করে রেকর্ড গড়লেন জলপাইগুড়ির সুমন্ত

গোটা ছাদ জুড়ে যেন ফসলের সমারোহ ৷ কী কী নেই তাঁর এক কাঠার বাগানে ৷ অন্যদিকে দীর্ঘায়িত তুলো ও লঙ্কা গাছ চাষের জন্য লিমকা বুক অফ রেকর্ডও গড়েছেন তিনি ৷ পুরো বাড়িটাই যেন কৃষি গবেষণা ক্ষেত্র ৷

By

Published : Jun 21, 2021, 7:51 PM IST

Updated : Jun 21, 2021, 8:09 PM IST

ছাদেই চাষ করে রেকর্ড গড়লেন জলপাইগুড়ির সুমন্তবাবু
ছাদেই চাষ করে রেকর্ড গড়লেন জলপাইগুড়ির সুমন্তবাবু

জলপাইগুড়ি , 21 জুন : কংক্রিটের জঙ্গলে যেন একটুকরো সবুজ ৷ এক কাঠা জমির উপর রকমারি ফসল ফলিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কৃষি গবেষক সুমন্ত মিশ্র ৷ লঙ্কা থেকে লাউ, তুলো থেকে আখ ৷ কী নেই তাঁর এক চিলতে বাগানে ! মাচায় আবার ঝুলছে থোকা থোকা আমও ৷ কিছুটা শখ, কিছুটা কৃষকদের সাহায্য করার তাগিদ ৷ দুইয়ে মিলে তাঁর বাড়িটা যেন হয়ে উঠেছে ফসলের মিউজিয়াম।

জলপাইগুড়ির পান্ডাপাড়ার বাসিন্দা সুমন্ত মিশ্র ৷ পেশায় তিনি কৃষি দফতরের কর্মী ৷ গোটা বাড়িটিকেই তিনি বানিয়ে ফেলেছেন কৃষি গবেষণার ক্ষেত্র ৷ 2001 থেকে রিসার্চ শুরু করেন তিনি ৷ নানা ভ্যারাইটির ফসল ফলানোটা যেন এক ধরনের নেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁর ৷ তাঁর বাড়িতে গেলে দেখা যাবে, মাটি থেকে 32 ফুট লম্বা লঙ্কা গাছ, 11 ফুটের ওল গাছ, 37 ফুটের তুলো গাছও ৷ পাশাপশি রয়েছে 44 ফুটের আখ গাছও ৷ এখনও পর্যন্ত তিনি ফলিয়েছেন 2000টিরও বেশি আম ৷ অন্যদিকে পটল ফলিয়েছেন পাঁচ কুইন্টালেরও বেশি ৷ লাউয়ের ফলন তো নজরকাড়া ৷ 1700টিরও বেশি লাউ ফলিয়েছেন ছাদের উপর মাচাতে ৷ এছাড়াও আছে ধান, পেঁয়াজ, বেগুন, চালকুমড়ো ৷ এর জন্য তিনি কিন্তু কোনও রাসায়নিক সার ব্যবহার করেন না ৷ ব্যবহার করেন জৈব সার ৷

কলাবাগানে গাছের পরিচর্যায়

ইতিমধ্যেই ভারত সরকারের কাছ থেকে দুটি ফসলের রেজিস্ট্রেশন পেয়েছেন তিনি ৷ আরও 19টি ভ্যারাইটি রেজিস্ট্রেশনের পর্যায় রয়েছে ৷ কম খরচে অল্প জায়গার মধ্যে ফসল ফলানোর জন্য একাধিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের পুরস্কারও পেয়েছেন বর্ষীয়ান এই ব্যক্তি ৷ লিমকা বুক অফ রেকর্ডও গড়েছেন দীর্ঘায়িত লঙ্কা গাছ ও তুলো গাছ চাষ করে ৷ তবে তাঁর আক্ষেপ একটাই, এখনও পর্যন্ত ডক্টরেট হতে পারেননি ৷

ছাদজুড়ে মাচা, আর তাতেই ফলেছে রকমারি আম

আক্ষেপের সুমন্তবাবু সুরে বলেন , "ভারতের সরকারের ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচার রিসার্চের সুপারিশ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়গুলি আমাকে সহযোগিতা করছে না ৷ 2014 সালে কলকাতায় একটি সেমিনার থেকে ঘোষণা করা হয়, ভারত সরকারের রিসার্চ সেন্টারগুলিতে পরামর্শদাতা হিসাবে আমাকে রাখা হবে ৷ কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি ৷ বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ এসে আমার বাগান দেখে যাচ্ছেন, প্রশংসা করছেন ৷ কিন্তু আমি কাজের স্বীকৃতি পাচ্ছি না ৷ "

এই সেই 32 ফুটের লঙ্কা গাছ

তাঁর কাজের মূল লক্ষ্য কী ? কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোই মূল লক্ষ্য ৷ তিনি বলেন, "কম খরচে, কম জায়গায় কতটা লাভে ফসল ফলানো যায়, তাই আমার গবেষণার মূল লক্ষ্য ৷ এখন কৃষকরা ফসলের দাম পাচ্ছেন না ৷ তাই আমি তাঁদের কম দামে কীভাবে ফসল ফলাতে হয় , সেই বার্তাই দিতে চাই ৷ পাশাপাশি আমি ফসল ফলিয়ে তাঁদের সাহায্যও করতে চাই ৷ " এখন যে এত ফসল ফলান তা নিয়ে তিনি কী করেন, এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, " এখনও পর্যন্ত পাড়াতেই, আত্মীয় স্বজনদের দিই যা ফলাই ৷ বাজারে কম দামে চাষিদের বিক্রি করি ৷ "

ছাদেই চাষ করে রেকর্ড গড়লেন জলপাইগুড়ির সুমন্তবাবু

যাঁদের বাগানের নেশা থাকে , তাঁরা একটুকরো জায়গা পেলেই ফসল ফলাতে শুরু করেন ৷ আর এর জ্বলন্ত উদাহরণ জলপাইগুড়ির সুমন্ত মিশ্র ৷

আরও পড়ুন :জানুন আড়াই লাখ টাকার মিয়াজাকি আমের কাহিনী

Last Updated : Jun 21, 2021, 8:09 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details