জলপাইগুড়ি, 6 জুন: ছুটিতে বাড়ি ফেরার কথা ছিল সাগর খেড়িয়ার ৷ তিনি বাড়ি ফিরলেনও তবে কালো প্লাস্টিকে করে মুড়ে ৷ তাঁকে কাঁধে করে শেষকৃত্যের জন্য অ্যাম্বুলেন্স থেকে নামিয়ে নিয়ে গেল পরিবার ও আত্মীয়রা ৷
প্রসঙ্গত, বেঙ্গালুরুতে কাজে গিয়েছিলেন দুই বন্ধু রূপ ও সাগর ৷ তাঁদের দু'জনেরই বাড়ি ডুয়ার্সের নাগরাকাটা চা বাগানে ৷ দু'জনেই কাজ থেকে একমাসের ছুটি নিয়ে ফিরছিলেন বাড়িতে ৷ তাঁরা ছিলেন যশবন্তপুর এক্সপ্রেসে ৷ ওড়িশার বালাসোরে সেই ট্রেনই পড়ে দুর্ঘটনায় কবলে ৷ তাতে মৃত্যু হয় সাগরের ৷ তবে দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে আগেই বাড়ি ফিরেছেন পরিযায়ী শ্রমিক রূপ ৷ এবার বাড়ি ফিরল সাগরের দেহ ৷
মঙ্গলবার সকালে ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত ডুয়ার্সের পরিযায়ী শ্রমিকের সাগরের দেহ নাগরাকাটা এসে পৌঁছয় । জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বালাসোর থেকে সাগরের দেহ আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে । পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকরাও উপস্থিত ছিলেন সেখানে । নাগরাকাটায় পৌঁছন মালবাজারের মহকুমা শাসকও । সাগরের দেহ পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পরে নাগরাকাটা ফুটবল লাইনের বাসিন্দারা । শেষ বারের মতো চা বাগানের ছেলেকে দেখতে শ্মশানের কাছে ভিড় করেন অন্যান্য শ্রমিক-সহ আত্মীয় পরিজনেরা । একটুও সময় নষ্ট করেনি প্রশাসন । নাগরাকাটার ফুটবল লাইনে সাগরের দেহ পৌঁছনের পরেই তাঁর সৎকারের ব্যবস্থা করা হয় ।
আরও পড়ুন:'চোখের সামনে বন্ধু চলে গেল, আর বাইরে কাজে যাব না !' নাগরাকাটার পরিযায়ী শ্রমিকের আর্তনাদ
বেঙ্গালুরু থেকে যশবন্তপুর এক্সপ্রেসে হাওড়া আসার সময় ট্রেনটি দুর্ঘটনাগ্রস্থ হয়েছিল । করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সঙ্গে যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা ঘটে । সেখানেই মৃত্যু হয় সাগর খেড়িয়ার (30)। সাগর-সহ নাগরাকাটা চা বাগানের 13 জন শ্রমিক বেঙ্গালুরুর একটি হোটেলে কাজ করতে গিয়েছিলেন । গত তিনমাস আগে তাঁরা সেখানে কাজ করতে যান । ছুটিতে 13 জন শ্রমিকই বাড়ি ফিরছিলেন ৷ ফেরার সময় দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় সাগরের । গুরুতর আহত হন ওই চা বাগানের বাসিন্দা ধরমবীর সিং । জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাকিদের কলকাতা থেকে বাড়ি ফিরিয়ে আনা হয়েছে ।