জলপাইগুড়ি, 14 সেপ্টেম্বর: জলপাইগুড়ি পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল নেতা সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার আবেদন জানাল পুলিশ। স্বামী- স্ত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনায় দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সৈকতের বিরুদ্ধে। আপাতত তিনি পলাতক। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর থেকেই তাঁর কোনও খোঁজ মিলছে না। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ হয়নি। পাশাপাশি তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়া তদন্তে অগ্রগতিও সম্ভব নয় বলে পুলিশের দাবি। আর তাই মামলায় বাকি 5 অভিযুক্তর নামে চার্জশিট জমা করলেও সৈকতের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়নি পুলিশ।
চার্জশিটে ভয় দেখানো, টাকা চেয়ে হুমকি দেওয়া-সহ আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার মতো ধারা যুক্ত করা হয়েছে বলে আদালত সূত্রে খবর। চার্জশিটে জলপাইগুড়ি পৌরসভার 14 নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সন্দীপ ঘোষ, সোনালি বিশ্বাস, মনোময় সরকার, দিব্যেন্দু বিশ্বাস, উত্তম গৌতমের নাম রয়েছে। গত 16 জুন কলকাতা হাইকোর্ট থেকে জামিনের আবেদন নাকচ হওয়ার পর থেকেই সৈকতের খোঁজ মিলছে না ৷ নানা জায়গায় খুঁজেও তাঁর কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা সম্ভব না হওয়ায় তদন্তও এগোচ্ছে না। ঠিক সেই কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিটও দেওয়া যাচ্ছে না বলে মত তদন্তকারী অধিকারিকদের।
আরও পড়ুন:নয়া মোড়, জোড়া আত্মহত্যার ঘটনায় তদন্তকারী অফিসার বদল
এদিকে এই আত্মহত্যার ঘটনার পিছনে আত্মঘাতী অপর্ণা ভট্টাচার্যের ভাই উত্তম গৌতমকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল, ধৃত উত্তম গৌতমের বিরুদ্ধে 201, 411, 506, 414 ধারায় চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, মনোময় সরকার, সোনালি বিশ্বাস, সন্দীপ ঘোষ, দিব্যেন্দু বিশ্বাসের বিরুদ্ধে 347, 384, 530, 506, 411, 120বি ধারায় চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার জন্য আদালতের কাছে আবেদন করেছে জেলা পুলিশ।
গত 1 এপ্রিল ভট্টাচার্য দম্পত্তি আত্মহত্যা করেন। আত্মহত্যার কারণ জানতে তদন্ত শুরু করে জেলা পুলিশ। কিন্তু তারা ঠিকমতো তদন্ত করছে না বলে অভিযোগ ওঠে। ঘটনাটি গড়ায় কলকাতা হাইকোর্ট পর্যন্ত। এমতাবস্থায় 19 মে কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্য পুলিশের এডিজি (সদর) কে জয়রমনকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। এরপরই কোতয়ালি থানার তদন্তকারী অফিসার শিবু করকে সরিয়ে দেওয়া হয়। শেষমেশ ঘটনায় 5 মাস 10 দিন পর পুলিশ চার্জশিট জমা করে। সৈকতের আইনজীবী সন্দীপ দত্ত বলেন, "চার্জশিটে অনেক কিছুই উল্লেখ থাকতে পারে । কিন্তু তার মানে এই নয় যে সৈকত দোষী।"
উল্লেখ্য, গত এপ্রিল মাসের 1 তারিখ জলপাইগুড়িতে আইনজীবী সুবোধ ভট্টাচার্য এবং তাঁর স্ত্রী অপর্ণা ভট্টাচার্য বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেন। সুইসাইড নোটের সূত্র ধরে আত্মহত্যার ঘটনায় সৈকত-সহ বাকিদের নাম উঠে আসে। এঁদের মধ্যে পাঁচ জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রথমে পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার না-করায় অপর্ণার দিদি শিখা চট্টোপাধ্যায় হাইকোর্টে সিবিআই তদন্তের আবেদন করেন। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা গত 19 মে ঘটনার তদন্তভার এডিজি পদমর্যাদার পুলিশ আধিকারিক কে জয়রমনকে দেন।
আরও পড়ুন: Anti Drug Rally in Siliguri: শিলিগুড়িতে মাদকপাচারের বিরুদ্ধে মিছিলে সামিল বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ