জলপাইগুড়ি, 28 জুন : তিস্তাপারের এই বত্তান্ত বিষাদের ৷ নাজেহাল তিস্তার ধারের বাদাম চাষিরা ৷ লকডাউনে, খেয়ালি প্রকৃতির অনভিপ্রেত কাণ্ডে জেরবার মানুষগুলো । লকডাউনে চাষ ভালো হওয়া সত্ত্বেও ফসলের দাম পাচ্ছেন না । অন্যদিকে, অসময় নদীর জলস্তর বাড়ায় ডুবে গিয়েছে বহু পরিশ্রমের ফসল ।
প্রতি বছর তিস্তা নদীর চরে কয়েকশো বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেন কৃষকেরা । জলপাইগুড়ি জেলার মিলনপল্লি, টাকিমারী, সুকান্তনগর কলোনি, সারদাপল্লি, সেনপাড়া-সহ জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন নদীর চরের বাদম চাষের কথা সকলের জানা ৷ এখানকার উৎপাদিত বাদাম ধূপগুড়ি, কোচবিহার, ময়নাগুড়ি সহ অসম, বিহার উত্তরপ্রদেশে রপ্তানি হয় । কিন্তু, এবার কোরোনার জেরে জারি হওয়া লকডাউনে ভেস্তে গিয়েছে বাণিজ্য । অন্যদিকে ফলন ভালো হলেও তিস্তা গ্রাস করেছে বিঘার পর বিঘা বাদাম খেত । হঠাৎই নদীর জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় নষ্ট হয়েছে ঘাম-রক্তের ফসল । এমনকী বাদাম খেতের ওপর পলি পড়ে গিয়েছে । পরে জল নেমে গেলেও পচন ধরেছে ওই বাদামে । যেটুকু বাদাম তোলা গেছে অতিবৃষ্টির ফলে তা শুকানো যাচ্ছে না ৷ নতুন করে পচন ধরেছে মজুত বাদামেও । সব মিলিয়ে পরিত্রাণের পথ পাচ্ছেন না বাদামচাষিরা ৷
ফলন স্বাভাবিক হলে প্রতি বিঘা জমিতে তিস্তাপারে উৎপাদিত হয় 3-4 কুইন্টাল বাদাম । চাহিদা অনুযায়ী 3800-5000 টাকা প্রতি ক্যুইন্টালে বিক্রি হয় । এক বিঘা জমি চাষে খরচ হয় 7-8 হাজার টাকা । চাষিদের থেকে জানা গেল, জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন এলাকাতে 2800 বিঘা জমিতে বাদাম চাষ হয়েছে এবার । প্রতি বছর মার্চের প্রথম দিকে শুরু হয় চাষ , জুলাইয়ের 20 তারিখের মধ্যে খেত থেকে তোলা হয় বাদাম ৷ কিন্তু, চলতি বছরে তার আগেই জোড়া বিপর্যয় ঘটে গিয়েছে ৷
বাদাম চাষি দীপক মণ্ডল বলেন, "7 বিঘা জমিতে চাষ করেছিলাম । নদীর গ্রাস থেকে এক বিঘা জমির বাদাম রক্ষা পেয়েছে ।"