পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

তিস্তাপারের বিষাদ বৃত্তান্ত, মাথায় হাত বাদাম চাষিদের - লকডাউনে সংকটে বাদাম চাষিরা

ফলন ভালো হয়েছিল, বাজারে দামও বেশি এবার ৷ গত বছর এক কুইন্টাল বাদামের দাম ছিল 4000 টাকা , এবার 5300 টাকা প্রতি কুইন্টাল ৷ তবু, বিপর্যয়ে চাষিরা ৷

peanut farmers in crisis
বাদাম চাষি৷

By

Published : Jun 29, 2020, 2:43 AM IST

Updated : Jul 2, 2020, 9:28 PM IST

জলপাইগুড়ি, 28 জুন : তিস্তাপারের এই বত্তান্ত বিষাদের ৷ নাজেহাল তিস্তার ধারের বাদাম চাষিরা ৷ লকডাউনে, খেয়ালি প্রকৃতির অনভিপ্রেত কাণ্ডে জেরবার মানুষগুলো । লকডাউনে চাষ ভালো হওয়া সত্ত্বেও ফসলের দাম পাচ্ছেন না । অন্যদিকে, অসময় নদীর জলস্তর বাড়ায় ডুবে গিয়েছে বহু পরিশ্রমের ফসল ।

প্রতি বছর তিস্তা নদীর চরে কয়েকশো বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেন কৃষকেরা । জলপাইগুড়ি জেলার মিলনপল্লি, টাকিমারী, সুকান্তনগর কলোনি, সারদাপল্লি, সেনপাড়া-সহ জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন নদীর চরের বাদম চাষের কথা সকলের জানা ৷ এখানকার উৎপাদিত বাদাম ধূপগুড়ি, কোচবিহার, ময়নাগুড়ি সহ অসম, বিহার উত্তরপ্রদেশে রপ্তানি হয় । কিন্তু, এবার কোরোনার জেরে জারি হওয়া লকডাউনে ভেস্তে গিয়েছে বাণিজ্য । অন্যদিকে ফলন ভালো হলেও তিস্তা গ্রাস করেছে বিঘার পর বিঘা বাদাম খেত । হঠাৎই নদীর জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় নষ্ট হয়েছে ঘাম-রক্তের ফসল । এমনকী বাদাম খেতের ওপর পলি পড়ে গিয়েছে । পরে জল নেমে গেলেও পচন ধরেছে ওই বাদামে । যেটুকু বাদাম তোলা গেছে অতিবৃষ্টির ফলে তা শুকানো যাচ্ছে না ৷ নতুন করে পচন ধরেছে মজুত বাদামেও । সব মিলিয়ে পরিত্রাণের পথ পাচ্ছেন না বাদামচাষিরা ৷

ফলন স্বাভাবিক হলে প্রতি বিঘা জমিতে তিস্তাপারে উৎপাদিত হয় 3-4 কুইন্টাল বাদাম । চাহিদা অনুযায়ী 3800-5000 টাকা প্রতি ক্যুইন্টালে বিক্রি হয় । এক বিঘা জমি চাষে খরচ হয় 7-8 হাজার টাকা । চাষিদের থেকে জানা গেল, জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন এলাকাতে 2800 বিঘা জমিতে বাদাম চাষ হয়েছে এবার । প্রতি বছর মার্চের প্রথম দিকে শুরু হয় চাষ , জুলাইয়ের 20 তারিখের মধ্যে খেত থেকে তোলা হয় বাদাম ৷ কিন্তু, চলতি বছরে তার আগেই জোড়া বিপর্যয় ঘটে গিয়েছে ৷

তিস্তার ধারেই চলছে বাদাম শুকানোর কাজ ৷

বাদাম চাষি দীপক মণ্ডল বলেন, "7 বিঘা জমিতে চাষ করেছিলাম । নদীর গ্রাস থেকে এক বিঘা জমির বাদাম রক্ষা পেয়েছে ।"

গোবিন্দ তালুকদার, মমতা মণ্ডলদেরও মাথায় হাত পড়েছে ৷

মমতা মণ্ডলের বলেন, "খেতে জল হয়ে গেছে ৷ এখন কী করব জানি না ৷ লোকের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালাতাম ৷ লকডাউনে সে কাজও নেই ৷ চাষ করে কিছুটা রোজগারের মুখ দেখেছিলাম ৷ সব শেষে !"

সংকটে তিস্তাপাড়ের বাদাম চাষিরা

বাদামের পাইকারি ব্যবসায়ী দেবাশিষ ভৌমিক বলেন, "চাষিদের থেকে প্রতি বছর 200 টন বাদাম কিনি । এবার 100 টন কেনার পর ব্যবসা বন্ধ রেখেছি । মাল ভিনরাজ্যে পাঠাতে পারছি না । মহাজন নিচ্ছে না ।"

দেবাশিষবাবুর কথায়, "এবার ফলন ভালো, কিন্তু, কৃষক দাম পাচ্ছে না । অথচ, বাদামের দাম ভালোই যাচ্ছিল ৷ এমন সমস্যায় কখনও পড়িনি ৷"

Last Updated : Jul 2, 2020, 9:28 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details