জলপাইগুড়ি, 30 অগস্ট : চা পাতার জেলা জলপাইগুড়ি ৷ আর সেই চা পাতা না আসায় বন্ধ হয়ে পড়ে আছে জলপাইগুড়িতে উত্তরবঙ্গ চা নিলাম কেন্দ্র বা নর্থবেঙ্গল টি অকশন সেন্টারটি । চা নিলাম কেন্দ্রটিকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য এবার একজোট হল জলপাইগুড়ির চা পাতা ব্যবসায়ী এবং বিভিন্ন সংস্থা ।
2005 সালে জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্রটি চালু হয়েছিল ৷ কিন্তু, সেখানে চা পাতা না যাওয়ায় মৃতপ্রায় অবস্থা হয়েছে কেন্দ্রটির । 2015 সাল থেকে পাকাপাকিভাবে সেখানে বন্ধ হয়ে গিয়েছে চা পাতার নিলাম । উত্তরবঙ্গ চা নিলাম কেন্দ্রে 2013 সালের মে মাসে অনলাইনে অকশন চালু হয় । অকশনের জন্য আনা ল্যাপটপগুলি এখন আলমারিতে বন্দি হয়ে আছে । অন্যদিকে, শিলিগুড়ির চা পাতার নিলাম কেন্দ্রটি ভালভাবে চলছে ৷ সেখানে চা পাতা বেশি চলে যাবার ফলে কেনাবেচা হচ্ছে না জলপাইগুড়ি অকশন সেন্টারে ৷
আর তাই জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্র চালু করার জন্য কেন্দ্রের দ্বারস্থ হয়েছেন জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্তকুমার রায় । জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্রটি চালু করার জন্য শিল্প বাণিজ্য মন্ত্রককে চিঠি দিয়েছেন তিনি । সাংসদের চিঠি পেয়েই চা নিলাম কেন্দ্রের বর্তমান পরিস্থিতি জানতে সম্প্রতি টি বোর্ডের প্রতিনিধিরা চা নিলাম কেন্দ্রে যান । সেখানে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ওই প্রতিনিধি দল জানিয়ে দেয়, জলপাইগুড়িতে চা পাতা নিলামের কোনও পরিকাঠামো নেই ৷ মজার বিষয় হল, টি বোর্ডের তরফেই 2012 সালে ই-অকশনের ব্যবস্থা হয়েছিল এই নিলাম কেন্দ্রে ৷ আর আজ তারাই বলছে পরিকাঠামো নেই ।
জলপাইগুড়ির উত্তরবঙ্গ চা নিলাম কমিটির সম্পাদক সুরজিৎ বক্সিগুপ্ত বলেন, ‘‘2015 সাল থেকে চা নিলাম কেন্দ্রটি বন্ধ । আমরা জলপাইগুড়ির সাংসদকে বিষয়টি জানালে তিনি কেন্দ্রের দ্বারস্থ হয়েছেন ৷ আমরা আশা করি খুব তাড়াতাড়ি এই চা নিলাম কেন্দ্রটি ফের চালু হবে ৷ আমরা চাই 20 শতাংশ ডাস্ট চা জলপাইগুড়ির নিলাম কেন্দ্রে আসুক ৷ তাতে করে চা নিলাম কেন্দ্রটি ভালভাবে চলবে । এখানে চা বাধ্যতামূলকভাবে আসুক, তাতে করেই এই নিলাম কেন্দ্র ভালভাবে এগোতে পারবে । চা নিলাম কেন্দ্রকে বাঁচানোর জন্য চা নিলাম পুনরুজ্জীবন কমিটি করা হয়েছে । আমাদের ডাকা হয়েছিল মতামত জানানোর জন্য, আমরা জানিয়েছি ৷’’
চা পাতার অভাবে তালাবন্ধ উত্তরবঙ্গ চা নিলাম কেন্দ্র জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্র ও চা নিলাম পুনরুজ্জীবন কমিটির দাবি 400 মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হয় উত্তরবঙ্গে । শিলিগুড়ি অকশন সেন্টারে উৎপাদিত চায়ের মাত্র 40 শতাংশ নিলাম হয় ৷ সেখানে মাত্র 20 শতাংশ চা জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে এলে নিলাম কেন্দ্রটি ঠিক মত চলতে পারে বলে জানিয়েছেন সেখানকার কর্মীরা । জলপাইগুড়িতে চায়ের অনেকগুলি গুদাম ছিল । সেগুলিও বন্ধ হয়ে গিয়েছে ৷ চা নিলাম শুরু হলে এই এলাকার আর্থ সামাজিক উন্নয়ন হবে ।
এ নিয়ে সাংসদ জয়ন্তকুমার রায় বলেন, ‘‘চা নিলাম কেন্দ্র খোলার বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছি ৷ জলপাইগুড়ির উন্নয়নের জন্য আমি কাজ করে যাব ৷ আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি একটা ভাল রেজাল্ট পাব ৷’’ এ নিয়ে জলপাইগুড়ি জেলা কংগ্রেসের সভাপতি পিনাকি সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘আজ আমাদের দুর্ভাগ্য যে, চায়ের জেলা হয়েও চা নিলাম কেন্দ্র বন্ধ ৷ আমাদের জলপাইগুড়ির উন্নয়ন মানেই দীর্ঘসূত্রতা । চা নিলাম কেন্দ্র চালু হলে আর্থ সামাজিক উন্নয়ন হবে । আমরা সবাই দলমত নির্বিশেষে চা নিলাম কেন্দ্রের জন্য রাস্তায় নামব । অদৃশ্য একটা কারণে এই নিলাম কেন্দ্র বন্ধ হয় আছে ।’’ জনপ্রতিনিধিরাও বিষয়টা জায়গা মতো জানাতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেন তিনি ৷