পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

100 দিনের প্রকল্পে পর্যাপ্ত কাজ না পেয়ে ভিন রাজ্যে ফিরছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা - Migrant Labour

লকডাউনের পর জলপাইগুড়ি জেলায় গড়ে প্রতি পরিবার কাজ পেয়েছে 42.98 শতাংশ। গত বছরে যা ছিল গড়ে 28.88 শতাংশ। জলপাইগুড়ি জেলায় এই বছর এপ্রিল মাস থেকে 28 ডিসেম্বর 2020 পর্যন্ত 100 দিনের কাজ পেয়েছে 3 লক্ষ 12 হাজার 822 টি পরিবার। কাজ দেওয়া হয়েছে 1 কোটি 34 লক্ষ 46 হাজার 582 শ্রমদিবস। গত বছর যা ছিল 53 লক্ষ 91 হাজার 865 শ্রমদিবস।

Migrant Labour of Jalpaiguri returning other states due to non availability of work
100 দিনের প্রকল্পে পর্যাপ্ত কাজ না পেয়ে ভিন রাজ্যে ফিরছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা

By

Published : Jan 5, 2021, 10:41 PM IST

জলপাইগুড়ি, 5 জানুয়ারি: 100 দিনের কাজ পর্যাপ্ত ভাবে নেই। তাই রুটিরুজির তাগিদে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। লকডাউনের মাঝে পরিযায়ী শ্রমিকরা বাড়ি ফিরে এসেছিলেন। কিন্তু পর্যাপ্ত সরকারি সহযোগিতা না থাকার দরুণ ফের ভিন রাজ্যে চলে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ পরিযায়ী শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের। লকডাউনের মাঝে সরকারি তরফে ঘোষণা করা হয়েছিল যে পরিযায়ী শ্রমিক ও অন্যান্য মানুষদের কাজ দিয়ে সহযোগিতা করা হবে। কিন্তু সব জায়গায় পর্যাপ্ত কাজ পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ।

জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বিবেকানন্দ পাড়া বুথে গিয়ে দেখা গেল অগাস্ট মাসে 14 দিনের কাজ দেওয়া হয়েছিল পরিবার পিছু একজনকে। আবার ডিসেম্বর মাসে 14 দিনের কাজ দেওয়া হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সংসার কীভাবে চলবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। জলপাইগুড়ি জেলা মনরেগা দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে যে লকডাউনের পর জবকার্ড দেওয়া হয়েছে 2416 জনকে। 7873 জন পরিযায়ী শ্রমিককে কাজ দেওয়া হয়েছে। যার ফলে 1974 টি পরিবার উপকৃত হয়েছেন। গত বছর ডিসেম্বরের 28 তারিখ পর্যন্ত জেলায় মোট কাজ দেওয়া হয়েছে 440888 শ্রম দিবস।

লকডাউনের পর জলপাইগুড়ি জেলায় গড়ে প্রতি পরিবার কাজ পেয়েছে 42.98 শতাংশ। গত বছরে যা ছিল গড়ে 28.88 শতাংশ। জলপাইগুড়ি জেলায় এই বছর এপ্রিল মাস থেকে 28 ডিসেম্বর 2020 পর্যন্ত 100 দিনের কাজ পেয়েছে 3 লক্ষ 12 হাজার 822 টি পরিবার। কাজ দেওয়া হয়েছে 1 কোটি 34 লক্ষ 46 হাজার 582 শ্রমদিবস। গত বছর যা ছিল 53 লক্ষ 91 হাজার 865 শ্রমদিবস।

আরও পড়ুন:লাইনে দাঁড়িয়ে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড সংগ্রহ মুখ্যমন্ত্রীর

জলপাইগুড়ি জেলার মধ্যে ধূপগুড়িতে 2141303 শ্রমদিবস, জলপাইগুড়িতে 2452309 শ্রমদিবস, মালবাজারে 2200503 শ্রমদিবস, মেটেলিতে 1042780 শ্রমদিবস, ময়নাগুড়িতে 2186921 শ্রমদিবস, নাগরাকাটাতে 1211563 শ্রমদিবস, রাজগঞ্জে 221102 শ্রমদিবস। লকডাউনের মাঝে জেলায় সবচেয়ে বেশি কাজ হয়েছে নাগরাকাটা ব্লকে 51.34 শতাংশ। গত বছর জলপাইগুড়ি জেলায় 28 ডিসেম্বর 2019 পর্যন্ত মহিলারা কাজ পেয়েছেন 46.53 শতাংশ। 2019-2020 আর্থিক বছরের কাজ পেয়েছিল মোট 47.36 শতাংশ। এই বছরের 28 ডিসেম্বর 2020 পর্যন্ত মহিলারা কাজ পেয়েছেন 51.24 শতাংশ।

বিবেকানন্দ পাড়া বুথের পঞ্চায়েত সদস্য দীপালি বিশ্বাস বলেন, "কাজ চেয়েও কাজ পাওয়া যায়নি। ফলে সবাইকে কাজ দিতে পারিনি। অনেকে ভিন রাজ্য থেকে এসেছিলেন। আবার তাঁরা সেখানে চলে গিয়েছেন। কিছু লোক কাজ করলেও তাঁরা চলে যাবেন বলছেন। আমরা সবাইকে কাজ দিতে পারিনি।"

রিঙ্কু হিরা জানান, তাঁর স্বামী কেরালায় সাটারিং এর কাজ করেন। এখানে ১০০ দিনের কাজ পাননি ঠিকমতো। তাই পেটের তাগিদে আবার ফিরে গিয়েছেন কেরালায়। কে আর চায় পরিবার পরিজন বাচ্চাদের ফেলে বাড়ি থেকে এত দূরে গিয়ে কাজ করতে। তাঁদের পরিবার চালানোয় দায় হয়ে গিয়েছে বলে ওই মহিলার দাবি।

আরও পড়ুন:কোনও বড় সমস্যা নেই, কালই বাড়ি ফিরবেন সৌরভ

সজল মণ্ডল জানান, তিনি সিকিমে ওয়েলডিং এর কাজ করেন। লকডাউনের মাঝে বাড়ি এসেছেন। কিন্তু এখানে কাজ নেই। 14 দিন আগস্ট মাসে কাজ দেওয়া হয়েছে। আবার ডিসেম্বর মাসে 14 দিনের কাজ দেওয়া হচ্ছে। এই ভাবে কি পেট চালানো যায় নাকি! তাঁকে আবার সিকিমে যেতে হবে কাজ করতে। এখানে তিনি 200 টাকা পাচ্ছেন। আর সিকিমে গেলে তিনি দিনে 600 টাকা হাজিরা পাবেন। এখানে থেকে লাভ কী, প্রশ্ন তুলেছেন সজল।

গীতা হিরা বলেন, "আমরা কাজ ঠিক মতো পাচ্ছি না। বছরে এক বার কাজ পাই। আমার স্বামী বাইরে কাজ করে। লকডাউনে বাড়িতে এসেছে। কিন্তু কাজ নেই। 100 দিনের কাজ হলেও পরিবার পিছু একজন করে কাজ দেওয়া হচ্ছে। এমন চললেও আবার বাইরে যাবে কাজ করতে।"

আরও পড়ুন:কৃষি আইনের বিরুদ্ধে বিধানসভায় প্রস্তাব আনতে বিশেষ অধিবেশন ডাকতে চায় রাজ্য

100 দিনের কাজের স্থানীয় সুপার ভাইজার রূপকুমার ব্যাপারি বলেন, "আমাদের ঠিকমতো কাজ দেওয়া হচ্ছে না। ফলে সবাইকে সমান ভাবে কাজও দিতে পারি না। আমরা চাই সরকারি বেশি করে কাজ দিক, যাতে সবাই কাজটা পায়। আমরা বার বার আবেদন নিবেদন করেও কাজ পাই না বলে অভিযোগ করেন।"

উজ্জ্বলা মণ্ডল, সরস্বতী ব্যাপারি ও সহদেব কেরানি জানান, তাঁরা বিজেপি করেন বলে কাজ কম পাচ্ছেন। লকডাউনে 14 দিনের কাজ পেয়েছেন। তাঁরা কাজের দাবি জানিয়েছেন।

এদিকে জলপাইগুড়ির জেলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতি দুলাল দেবনাথ বলেন, "আমাদের জেলায় এবার 100 দিনের ভালো কাজ হয়েছে। পরিযায়ী শ্রমিকদেরও কাজ দেওয়া হয়েছে। তবে কেউ কাজ না পেয়ে ফের ভিন রাজ্যে চলে গিয়েছেন বলে জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।"

আরও পড়ুন:উলুবেড়িয়ায় ক্ষতিপূরণ না মেলায় পাইপলাইনের কাজ বন্ধ গ্রামবাসীদের

ABOUT THE AUTHOR

...view details