জলপাইগুড়ি, 5 জানুয়ারি: 100 দিনের কাজ পর্যাপ্ত ভাবে নেই। তাই রুটিরুজির তাগিদে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। লকডাউনের মাঝে পরিযায়ী শ্রমিকরা বাড়ি ফিরে এসেছিলেন। কিন্তু পর্যাপ্ত সরকারি সহযোগিতা না থাকার দরুণ ফের ভিন রাজ্যে চলে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ পরিযায়ী শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের। লকডাউনের মাঝে সরকারি তরফে ঘোষণা করা হয়েছিল যে পরিযায়ী শ্রমিক ও অন্যান্য মানুষদের কাজ দিয়ে সহযোগিতা করা হবে। কিন্তু সব জায়গায় পর্যাপ্ত কাজ পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ।
জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বিবেকানন্দ পাড়া বুথে গিয়ে দেখা গেল অগাস্ট মাসে 14 দিনের কাজ দেওয়া হয়েছিল পরিবার পিছু একজনকে। আবার ডিসেম্বর মাসে 14 দিনের কাজ দেওয়া হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সংসার কীভাবে চলবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। জলপাইগুড়ি জেলা মনরেগা দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে যে লকডাউনের পর জবকার্ড দেওয়া হয়েছে 2416 জনকে। 7873 জন পরিযায়ী শ্রমিককে কাজ দেওয়া হয়েছে। যার ফলে 1974 টি পরিবার উপকৃত হয়েছেন। গত বছর ডিসেম্বরের 28 তারিখ পর্যন্ত জেলায় মোট কাজ দেওয়া হয়েছে 440888 শ্রম দিবস।
লকডাউনের পর জলপাইগুড়ি জেলায় গড়ে প্রতি পরিবার কাজ পেয়েছে 42.98 শতাংশ। গত বছরে যা ছিল গড়ে 28.88 শতাংশ। জলপাইগুড়ি জেলায় এই বছর এপ্রিল মাস থেকে 28 ডিসেম্বর 2020 পর্যন্ত 100 দিনের কাজ পেয়েছে 3 লক্ষ 12 হাজার 822 টি পরিবার। কাজ দেওয়া হয়েছে 1 কোটি 34 লক্ষ 46 হাজার 582 শ্রমদিবস। গত বছর যা ছিল 53 লক্ষ 91 হাজার 865 শ্রমদিবস।
আরও পড়ুন:লাইনে দাঁড়িয়ে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড সংগ্রহ মুখ্যমন্ত্রীর
জলপাইগুড়ি জেলার মধ্যে ধূপগুড়িতে 2141303 শ্রমদিবস, জলপাইগুড়িতে 2452309 শ্রমদিবস, মালবাজারে 2200503 শ্রমদিবস, মেটেলিতে 1042780 শ্রমদিবস, ময়নাগুড়িতে 2186921 শ্রমদিবস, নাগরাকাটাতে 1211563 শ্রমদিবস, রাজগঞ্জে 221102 শ্রমদিবস। লকডাউনের মাঝে জেলায় সবচেয়ে বেশি কাজ হয়েছে নাগরাকাটা ব্লকে 51.34 শতাংশ। গত বছর জলপাইগুড়ি জেলায় 28 ডিসেম্বর 2019 পর্যন্ত মহিলারা কাজ পেয়েছেন 46.53 শতাংশ। 2019-2020 আর্থিক বছরের কাজ পেয়েছিল মোট 47.36 শতাংশ। এই বছরের 28 ডিসেম্বর 2020 পর্যন্ত মহিলারা কাজ পেয়েছেন 51.24 শতাংশ।
বিবেকানন্দ পাড়া বুথের পঞ্চায়েত সদস্য দীপালি বিশ্বাস বলেন, "কাজ চেয়েও কাজ পাওয়া যায়নি। ফলে সবাইকে কাজ দিতে পারিনি। অনেকে ভিন রাজ্য থেকে এসেছিলেন। আবার তাঁরা সেখানে চলে গিয়েছেন। কিছু লোক কাজ করলেও তাঁরা চলে যাবেন বলছেন। আমরা সবাইকে কাজ দিতে পারিনি।"
রিঙ্কু হিরা জানান, তাঁর স্বামী কেরালায় সাটারিং এর কাজ করেন। এখানে ১০০ দিনের কাজ পাননি ঠিকমতো। তাই পেটের তাগিদে আবার ফিরে গিয়েছেন কেরালায়। কে আর চায় পরিবার পরিজন বাচ্চাদের ফেলে বাড়ি থেকে এত দূরে গিয়ে কাজ করতে। তাঁদের পরিবার চালানোয় দায় হয়ে গিয়েছে বলে ওই মহিলার দাবি।