জলপাইগুড়ি, 5 জানুয়ারি: 2016 সালে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিলেন ওড়িশার কৃষক দানা মাঝি ৷ সেদিন অ্যাম্বুলেন্স খরচ মেটানোর ক্ষমতা না-থাকায় স্ত্রীকে দাহ করতে কাঁধে নিয়ে হেঁটে তিনি পাড়ি দিয়েছিলেন 10 কিলোমিটার পথ ৷ এই ঘটনা দারিদ্র্যতার এক অসহায় চিত্রকে তুলে ধরেছিল সমাজের কাছে ৷ এই খবর প্রকাশিত হয়েছিল দেশের বিভিন্ন জেলার সংবাদমাধ্যমগুলিতে ৷ যা দেখে শিউড়ে উঠেছিল সারা দেশ ৷ নাড়িয়ে দিয়েছিল প্রশাসনকে ৷ এরপরই প্রশাসন গুরুত্ব সহকারে বিষয়টিকে দেখে এবং দানা মাঝিকে সাহায্যে করতে এগিয়ে আসে । পরে অবশ্য তাঁকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় ৷ তীব্র দারিদ্র্যতা থেকে দানা মাঝিকে জীবনের মূল স্রোতে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয় ।
কিন্তু 150 কোটির দেশে এখনও আনাচে-কানাচে লুকিয়ে রয়েছে এমন অনেক দানা মাঝি ৷ এদিনের জলপাইগুড়ির অমানবিক দৃশ্য তা আরও একবার মনে করিয়ে দিল ৷ শববাহী গাড়ি চেয়েছিল 3000 টাকা ৷ সেই টাকা না-দিতে পারায় শববাহী গাড়ি পেল না রোগীর পরিবার (Hearse van charges exorbitant amount) ৷ এরপর মহিলার দেহ কাঁধে নিয়েই ক্রান্তি ব্লকে বাড়ির উদ্দেশে হেঁটে রওনা দিলেন মৃতের স্বামী ও ছেলে (Jalpaiguri man carries his mother body on shoulder ) । আর এই দৃশ্য দাঁড়িয়ে দেখল আশেপাশের মানুষজন ৷ কেউ এগিয়ে আসেনি তাদের সাহায্যে ৷ অনেকটা পথ যাওয়ার পর শেষমেশ সাহায্যের জন্য আসে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ।
জানা গিয়েছে, মাল মহকুমার ক্রান্তির ব্লকের বাসিন্দা পেশায় দিনমজুর রামপ্রসাদ দেওয়ান তাঁর মা লক্ষ্মীরানিকে গতকাল রাতে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করেন ৷ আজ ভোরর দিকে মারা যান তিনি । সকালে মায়ের দেহ বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি বেসরকারি শববাহী গাড়ি ভাড়া করতে যান ছেলে ৷ অভিযোগ, দেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য শববাহী গাড়ি ভাড়া চাওয়া হয় 3000 হাজার টাকা । কাকুতি-মিনতি করার পরেও অ্যাম্বুলেন্স তাঁরা পান না । এত টাকা দিতে না পেরে মহিলার দেহ কাঁধে নিয়েই বাবা-ছেলে হাঁটা শুরু করেন ক্রান্তির উদ্দেশে ৷ পথেই এই দৃশ্য চোখে পড়ে একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদক অঙ্কুর দাসের । সঙ্গে সঙ্গে তাদের সংগঠনের শববাহী গাড়ি ডাকা হয় ৷ তাতে করেই দেহ নিয়ে যাওয়া হয় ক্রান্তি ব্লকের উদ্দেশে ৷