পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

Maynaguri Village Police: ময়নাগুড়ির থানার বিতর্কিত ভিলেজ পুলিশকে বসিয়ে দেওয়া হল - demobilization of Maynaguri Village police

ময়নাগুড়ির থানার গ্রামীণ পুলিশ রামমোহন রায়ের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই একাধিক অভিযোগ জমা হচ্ছিল (Maynaguri Village Police) ৷ অভিযোগ পৌঁছয় নবান্নেও ৷ তার প্রেক্ষিতে ওই ব্যক্তিকে তার দায়িত্ব থেকে বসিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷

ETV Bharat
Village Police controversy in maynaguri

By

Published : Nov 18, 2022, 9:50 PM IST

জলপাইগুড়ি, 19 নভেম্বর: ময়নাগুড়ির থানার বিতর্কিত ভিলেজ পুলিশকে ডিমোবিলাইজ (নিস্ক্রিয়) করলেন জেলা পুলিশ সুপার । রামমোহন রায় নামে ওই ভিলেজ পুলিশের বিরুদ্ধে বিরোধীদের অভিযোগ ময়নাগুড়ি থানার অলিখিত আইসি হয়ে বসেছিলেন তিনি ৷ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ওই ভিলেজ পুলিশের বিরুদ্ধে নিজের প্রভাব প্রতিপত্তি বিস্তার করা-সহ নানা অভিযোগ করেছে তৃণমূল কংগ্রেসের একাংশও ৷ রামমোহনের কার্যকলাপের বিরুদ্ধে নানা মহল থেকে নবান্নে অভিযোগ জমা পড়েছিল বলে খবর । শোনা যায়, ময়নাগুড়ি ব্লকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পাওয়া বা উদ্বোধনে ফিতে কাটার দৌড়ে রামমোহনের ধারে কাছেও ছিলেন না কোন তৃণমূল নেতা (demobilization of Maynaguri Village Police) ।

সূত্রের খবর, রামমোহন রায়ের কার্যকলাপ নিয়ে ময়নাগুড়ি ও জেলা তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছে প্রায়দিনই নানা অভিযোগ আসছিল । সেই অভিযোগ নবান্ন পর্যন্ত পৌঁছয় । এরপরেই কার মদতে রামমোহন রায়ের বাড়বাড়ন্ত তার খোঁজ শুরু হয় । বিষয়টি মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকেও দলের নেতাদের তরফে জানানো হয় ৷

জেলা পুলিশ সুপারের দফতর থেকে গত 14 নভেম্বর ই-মেইল মারফৎ রামমোহন রায় নামে ওই ভিলেজ পুলিশকে ডিমোবিলাইজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে (Maynaguri Village police)। অনির্দিষ্টকালের জন্য তাকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷ ময়নাগুড়ি থানার স্বঘোষিত আইসি বলে পরিচিত ছিলেন রামমোহন রায় ৷ এমনটাই অভিযোগ করেছেন বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক শ্যাম প্রসাদ । তিনি বলেন, "তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা বলেই রামমোহনের এত প্রভাব । রামমোহন রায়ের জন্য ময়নাগুড়ি থানায় আলাদা চেম্বার বরাদ্দ ছিল । তিনি পুলিশ লেখা একটি বোলেরো গাড়ি নিয়েও ঘুরতেন ৷ ভিলেজ পুলিশের যা বেতন সেই টাকায় রামমোহন রায় একটি বোলেরো গাড়ি করে ঘুরতেন কী করে ! সে গাড়ির তেল কোথা থেকে পেত । উনি টাকা তুলতেন ৷ কিন্তু সেই টাকা তৃণমূলের এক গোষ্ঠী পেয়েছে, অন্য গোষ্ঠী পায়নি ৷ তাই সেই গোষ্ঠী অভিযোগ জানায় ওই গ্রামীণ পুলিশের নামে ৷"

আরও পড়ুন:জোর করে অর্থ আদায়ে সিআইডি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে মুম্বইয়ে এফআইআর, অভিযোগ শুভেন্দুর

এছাড়াও জানা গিয়েছে, রামমোহন রায় ফ্যানস ক্লাব নামে একটি ফেসবুক পেজ বানিয়ে ওই ব্যক্তির সারাদিনের কর্মকাণ্ডের কথা ছবি-সহ তুলে ধরা হত ৷ দুর্গাপুজো থেকে শুরু করে কালী পুজো, রাস মেলা, বিচিত্রা অনুষ্ঠান, ক্রিকেট খেলা, ফুটবল খেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের থেকে বেশি রামমোহন রায় অতিথি হিসেবে মঞ্চে জায়গা পেতেন । শুধু তাই নয় বিভিন্ন বেসরকারি অনুষ্ঠানে জেলা পুলিশের আধিকারিকদের সঙ্গে একই মঞ্চে বসতেন রামমোহন । জানা গিয়েছে, তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের থেকেও বেশি অনুষ্ঠানে ডাক পেতেন এবং অনুষ্ঠানের ফিতে কাটতেন ওই ব্যক্তি (Maynaguri Village Police controversy) ।

ময়নাগুড়ির থানার বিতর্কিত ভিলেজ পুলিশকে বসিয়ে দেওয়া হল

তৃণমূল কংগ্রেসের ময়নাগুড়ি ব্লক-দুই এর সভাপতি শিবশঙ্কর দত্ত বলেন,"ময়নাগুড়ি থানার ভিলেজ পুলিশ রামমোহন রায়ের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আমাদের কানেও এসেছে । নানা দিক থেকে অভিযোগ এসেছে । জেলা পুলিশ আধিকারিক নিশ্চয়ই ওর সম্পর্কে তথ্য পেয়েছে । ওর বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ থাকে তার তদন্ত হোক । পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নিক তাতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই । বিভিন্ন সময় পুলিশের নামে অর্থ সংগ্রহ করা । জানিনা অর্থ কোথায় যায় । তদন্ত হলে সব পরিষ্কার হয়ে যাবে । রামমোহন নিজের প্রভাব প্রতিপত্তি বিস্তার করার চেষ্টা করছিল ।

অভিযুক্ত ওই ভিলেজ পুলিশ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন ৷ তাঁর কথায়, "ভিলেজ পুলিশের কাজ করার পাশাপাশি আমি সমাবসেবা করতাম । প্রচুর জায়গায় আমাকে অনুষ্ঠানের ফিতে কাটার জন্য ডাকা হত । এটাই হয়ত অনেকে সহ্য করতে পারল না । হয়ত অনেকেরই চক্ষুশূল হয়ে পরেছিলাম । আমার ভালো কাজ কেউ দেখল না । আমি জেলা পুলিশের হয়ে ভালো কাজ করে যাচ্ছি । অনেক ক্রাইম কন্ট্রোল করেছি । আমাকে ডিমোবিলাইজ করে দেওয়া হল । আসা করি ফের কাজে যোগ দিতে পারব । আমাকে যদি কেউ ময়নাগুড়ির অলিখিত আইসি বলে আক্ষা দেয় তাহলে সেটা তার ব্যপার ।" অন্যদিকে, জেলা পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ মাহাতো বলেন, "আমি সদ্য জেলা পুলিশ সুপার হিসেবে কাজে যোগ দিয়েছি । আমার আসার আগে ভিলেজ পুলিশকে নিয়ে কী অর্ডার হয়েছে আমার জানা নেই । খোঁজ নেব ।"

ABOUT THE AUTHOR

...view details