পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

Thermocol Artist ডাকের সাজের শিল্পকে আঁঁকড়ে ধরে লড়াই করে চলেছেন বাচ্চু মালাকার - শোলা শিল্পী

পুজো আর বাকি কয়েকদিন ৷ মাকে সাজাতে ডাকের সাজ অর্থাৎ শোলার বিশেষ অলঙ্কার তৈরি । তবে বর্তমানে শোলা মেলা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে । শিলিগুড়ির ডাবগ্রাম ফুলবাড়ির আশিঘরের বাসিন্দা বাচ্চু মালাকার যাট বছরেরও বেশি সময় ধরে সেই ডাকের সাজ তৈরি করে চলেছেন (Artist is Fighting by Clinging to Thermocol Industry) ৷

Thermocol Artist
ডাকের সাজের শিল্পকে আঁঁকড়ে ধরে লড়াই করছেন ফুলবাড়ির আশিঘরের বাসিন্দা বাচ্চু মালাকার

By

Published : Sep 3, 2022, 1:43 PM IST

শিলিগুড়ি, 3 সেপ্টেম্বর: করোনার ভ্রুকুটি উড়িয়ে এবার স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজাে (Artist is Fighting by Clinging to Thermocol Industry)। প্রতিবার পুজোয় থিমের বহর থাকলেও মৃন্ময়ী মায়ের চিন্ময়ী রূপ এখনও দর্শনার্থীদের মন কাড়ে । আর মায়ের সেই চিন্ময়ী রূপ মেলে ডাকের সাজ থেকে । ডাকের সাজ অর্থাৎ মায়ের জন্য তৈরি শোলার বিশেষ অলঙ্কার । জলাশয়ে থাকা শাপলা পাতার কাণ্ড থেকে তৈরি হয় শোলা । সেই শোলাই শিল্পীদের হাতের ছোঁয়ায় তৈরি ডাকের সাজের অলঙ্কার । তবে বর্তমানে শোলা মেলা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে । তাই বিকল্প হিসেবে থার্মোকল দিয়েই তৈরি হচ্ছে ডাকের সাজ । আর ডাকের সাজের অলঙ্কার তৈরি করা চারটিখানি কথা নয় । কারণ তার জন্য চাই প্রশিক্ষণ, অভিজ্ঞতা ও অধ্যাবসায় ।

এমনই এক শিল্পী হলেন বাচ্চু মালাকার । শিলিগুড়ি সংলগ্ন ডাবগ্রাম ফুলবাড়ির আশিঘরের বাসিন্দা বাচ্চু মালাকার । ষাট বছরের বেশি সময় ধরে ডাকের সাজের অলঙ্কার তৈরি করে আসছেন তিনি । বাবা জ্যোতিন্দ্র মালাকারের কাছে ডাকের সাজের অলঙ্কার তৈরির কাজ শিখেছিলেন বাচ্চু মালাকার । বাংলাদেশে থাকাকালীন একজন নামকরা ডাকের সাজের শিল্পী ছিলেন জ্যোতিন্দ্র মালাকার । আর বাবার সেই শিল্পই কাটাঁতার পেরিয়ে এপার বাংলায় পৌঁছে গিয়েছে বাচ্চু মালাকারের হাত ধরে ।

ডাকের সাজের শিল্পকে আঁঁকড়ে ধরে লড়াই করছেন ফুলবাড়ির আশিঘরের বাসিন্দা বাচ্চু মালাকার

আরও পড়ুন:শোলার অভাব, কাজ হারানোর আশঙ্কায় শিল্পীরা

প্রথমে একজন ডাক বিভাগের কর্মী ছিলেন বাচ্চু । চাকরি করলেও ডাকের সাজের অলঙ্কার পুজোর সময় তৈরি করতেন । ধীরে ধীরে তাঁর কাজের সুনাম ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে । নিজের জেলা তো বটেই বরাত আসতে শুরু করে আশপাশের জেলা থেকেও । অবসরের পর পুরোপুরিভাবে ডাকের সাজের অলঙ্কার তৈরিতে লেগে পড়েন বাচ্চু মালাকার ৷ চাহিদা বাড়ে, বাড়ে কাজের পরিমাণও । একে একে ছেলে, স্ত্রী, বউমা প্রত্যেকে সহযোগিতা করতে শুরু করে । কাজে রাখতে হয় আরও শিল্পীদের ।

মালাকার পরিবারের তৈরি ডাকের সাজের অলঙ্কার কোচবিহার থেকে মালদা পর্যন্ত ছড়িয়ে গিয়েছে । পুজোর সময়তো দিনরাত এক করে কাজ করে গোটা পরিবার । কিন্তু এই বাজারে লাভের পরিমাণ কম থাকলেও বাবার শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই লক্ষ্য বাচ্চু মালাকারের । আর সেই পথে তাঁর ছেলে সুদীপন মালাকারও ।

আরও পড়ুন:কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি, সমস্যায় রামেশ্বরপুর মালাকার পাড়ার চাঁদমালা তৈরির শিল্পীরা

বাচ্চু মালাকার বলেন, "বাবা বাংলাদেশের নামকরা একজন শিল্পী ছিলেন । বাবার থেকেই কাজ শিখেছি । আমার ছেলেও করছে। নাতিও করবে বলে আশা করি । তবে শোলা মেলে না । থার্মোকল দিয়ে কাজ চালাচ্ছি । বাবার শিল্পটাকে বাঁচিয়ে রাখতে চাই ।" সুদীপন মালাকার বলেন, "শোলা মেলে কম । থার্মোকল সেজন্য ব্যবহার করতে হয় । আবার কারিগরও মেলে না । নিজেরাই তাই বেশি কাজ করছি । তবে থার্মোকল বন্ধ হলে বিকল্প ব্যবস্থা তো করতেই হবে । এই শিল্পই এখন সংকটে ।"

ABOUT THE AUTHOR

...view details