জলপাইগুড়ি, 25 জুলাই: করোনার সংক্রমণের জেরে গত দু'বছর বন্ধ ছিল জলপাইগুড়ির বিখ্যাত জল্পেশ মন্দিরের শ্রাবণী মেলা । কিন্তু এবছর সংক্রমণ কম থাকায় প্রশাসনের তরফে অনুমতি মিলেছে মেলা করার ৷ ফের মেলা শুরু হওয়ায় মুখে চওড়া হাসি ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে মন্দির কমিটির । এই মেলার উপর অনেকাংশে নির্ভর করে এলাকার অর্থনীতি । প্রতিবছর শ্রাবণ মাসে লক্ষাধিক পুণ্যার্থী আসেন এই জল্পেশ মন্দিরে জল ঢালতে ৷
গত 2 বছর মেলা বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছিলেন জল্পেশের ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে মন্দির কমিটি । মেলা বন্ধ থাকার কারণে রুটিরুজিতে টান পরে দোকানদার-ব্যবসায়ীদের ৷ প্রতিবছর শ্রাবণ মাসে নেপাল, ভুটান, অসম থেকে লক্ষাধিক পুণ্যার্থী আসেন জল্পেশের মন্দিরে জল ঢালার জন্য । কিন্তু করোনা সংক্রমণের জন্য গত 2 বছর ধরে পুণ্যার্থীদের ভাটা পরে । 2 বছর পর এবার জল্পেশের শ্রাবণী মেলা শুরু হয়েছে ৷ রবিবার তিস্তা নদী থেকে জল নিয়ে জল্পেশ মন্দিরে যান পুণ্যার্থীরা ৷ প্রচুর দোকানি, ব্যবসায়ী পসরা সাজিয়ে বসেছেন তিস্তা সেতুর পাশে ও জল্পেশ মন্দির এলাকায় । জল্পেশের ব্যবসায়ী কমলেশ কানু, চন্দন সরকাররা জানান, এবার প্রচুর পুণ্যার্থীর ভিড় হচ্ছে ৷ এবার বিক্রিও ভালো হচ্ছে । আশা, ব্যবসা আরও ভালোই হবে । লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী জল্পেশে এসেছেন । এই শ্রাবণী মেলাকে কেন্দ্র করেই বছরের একটা বড় অংশের রোজগার এখানকার ব্যবসায়ীদের ৷
আরও পড়ুন: 'দিদির দেখা নাই রে, দিদির দেখা নাই !' ফের ভাইরাল বিজেপি বিধায়কের প্যারোডি
করোনা সংক্রমণের জেরে, বিপাকে পড়তে হয়েছিল উত্তরবঙ্গের বিখ্যাত শৈব তীর্থ জল্পেশ মন্দির কর্তৃপক্ষকেও । মন্দির কমিটি মন্দিরের পুরোহিত ও কর্মচারীদের বেতন কমিয়ে দিয়েছিল । দু'বছর শ্রাবণী মেলা না হওয়ায় পুণ্যার্থীরা মন্দিরেও আসেননি । ফলে টিকিটও বিক্রি হয়নি । পুরোহিত-সহ অন্যান্য কর্মীদের বেতন কীভাবে দেবেন তা নিয়েই কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছিল মন্দির কমিটির । জল্পেশ মন্দিরকে কেন্দ্র করে কয়েক হাজার মানুষের রুটিরুজির জোগান হয় । প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীর সমাগম হয়ে থাকে জল্পেশ মন্দিরে ।
ফের বসেছে জল্পেশ মন্দিরের শ্রাবণী মেলা, খুশি পুণ্যার্থী থেকে ব্যবসায়ী সকলে এপ্রসঙ্গে, জল্পেশ মন্দির ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক গিরিন্দ্র নাথ দেব বলেন, "শ্রাবণী মেলা বন্ধ থাকায় মন্দিরের পুরোহিত ও কর্মীদের বেতন দিতে পারছিলাম না । জল্পেশ মন্দিরে 7 জন পুরোহিত, 30 জন কর্মচারী রয়েছেন । প্রতিমাসে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ হয় তাঁদের বেতন বাবদ ৷ প্রতি বছর জল্পেশ মন্দিরে পুণ্যার্থীদের প্রবেশের জন্য যে টিকিট বিক্রি হয় তা দিয়েই সারা বছর মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণ চলে । অনেকে জল্পেশ মন্দিরে দান করে থাকেন । এই মেলার উপর প্রচুর মানুষের রুটিরুজি নির্ভর করে থাকে । বছরের প্রায় ছয় মাসের রোজগার এই মেলা থেকে হয়ে থাকে । এবার মেলা ভালোই হচ্ছে, প্রচুর পুণ্যার্থীও এসেছেন ৷"