পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

জোড়াফুল-পদ্মের দোসর টুম্পাও, ভোটের মুখে স্বাদবদলে রাজনৈতিক মিষ্টি

হাওড়ার ছোট মিষ্টির দোকান । জিভে জল আনা নানা ধরনের সন্দেশ । এ কিন্তু যে সে সন্দেশ নয় । কোনওটা কাস্তে হাতুড়ি, কোনওটা আবার পদ্মফুল কিংবা জোড়া ফুল । রয়েছে লাল, গেরুয়া ও সবুজ রঙের রসগোল্লাও । আছে টুম্পা সোনাও । মিষ্টিতে কামড় বসিয়ে সুখ নিচ্ছেন ক্রেতারাও । খাওয়ার ক্ষেত্রে কিন্তু ঠাঁই পাচ্ছে না রাজনীতি ।

political sweet
political sweet

By

Published : Mar 4, 2021, 1:16 PM IST

Updated : Mar 4, 2021, 4:57 PM IST

হাওড়া, 4 মার্চ : গরমাগরম ভোটের হাওয়া । চলছে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ । গরম ভোটের রঙিন আবির এবার মিষ্টিতেও । অবাক লাগছে ? ঠিকও শুনছেন, মিষ্টিতেও রাজনীতি । সৃষ্টিকর্তার ঠিকানা হাওড়া । সৌজন্যে মা গন্ধেশ্বরী সুইটস । এই উদ্যোগে পেট ও মন দুই ভরছে মিষ্টি প্রিয় বাঙালির । সেইসঙ্গে এর পিছনে কিন্তু একটা অভিনব বার্তাও আছে ।

ছোট দোকান । কাঁচের শোকেজ-ট্রেতে থরে থরে সাজানো জিভে জল আনা নানা ধরনের সন্দেশ । এ কিন্তু, যে সে সন্দেশ নয় । কোনওটা কাস্তে হাতুড়ি, কোনওটা আবার পদ্মফুল কিংবা জোড়া ফুল । রয়েছে রং-বেরঙের রসগোল্লাও । রাজনৈতিক রং । লাল, সবুজ ও গেরুয়া রং । টুম্পা সোনাও মিষ্টির হাত ঠাঁই নিয়েছে ট্রেতে । কিন্তু কেন এমন ভাবনা ?

বাংলা ভাষায় একটা মিষ্টতা আছে । একথা প্রায় অনেকের মুখেই স্বীকৃতি পেয়েছে । আর বাঙালি বরাবরই আবেগপ্রবণ ও রাজনীতি সচেতন বলে পরিচিত । সেই বাঙালি যখন রাজনৈতিক পরিসরে প্রবেশ করে তখনই মিষ্টতা হারায় তাঁর ভাষা । সেই ভাষাই তখন হয়ে ওঠে অশালীন ও নিম পাতার মতো তিক্ত । আর ভোটের আগে তো কোনও কথাই নেই । তাই এবার ভোটের আগে জিভে মিষ্টতার স্বাদ ফিরিয়ে দিতে হাওড়ায় একই ছাদের তলায় সব রাজনৈতিক দলের প্রতীক সহ তৈরি হয়েছে বাঙালির রসনা তৃপ্তির রাজনৈতিক মিষ্টি ।


বহু বছর ধরেই ভোটের আগে ও খেলাধূলার আগে এই ধরনের মিষ্টি তৈরি করে আসছেন হাওড়ার মিষ্টি দোকানের মালিক কেষ্ট হালদার । তিনি বলেন, " বিধানসভা ভোট তো এসেই গিয়েছে । এটা তো আমাদের উৎসবের মতো ব্যাপার । প্রত্যেক দল থেকে দেওয়াল লিখন চলছে । মিছিল, মিটিং হচ্ছে । সাধারণত সব শুভ কাজ মিষ্টি দিয়েই শুরু হয় । তাই মিষ্টির মাধ্যমে প্রত্যেক দলের চিহ্ণ তৈরি করেছি । সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেস ও তৃণমূলের রসগোল্লা রয়েছে ।"

রং বেরঙের রসগোল্লা

এর মধ্যে কী বার্তা দেওয়া হচ্ছে ? এই বিষয়ে মিষ্টির দোকানের মালিক বলছেন, " খেলাটা যেন মিষ্টিভাবে হয় । তার সঙ্গে সঙ্গে যাতে আমরা সবাই মিলে এই উৎসব আনন্দের মধ্যে দিয়ে সফল করতে পারি এবং আমরা প্রত্যেকটা মানুষকে বলতে চাই শান্তিভাবে ভোট দিন । আর যে দলই জিতুক তাঁরা যেন শান্তিভাবে সবার সঙ্গে মিলেমিশে যেন বন্ধুতটা বজায় রাখে । মিষ্টির মাধ্যম দিয়ে যাতে মিষ্টি সম্পর্কটা হয় তার জন্য আমার এই ভাবনা ।"

আরও পড়ুন, নন্দীগ্রাম দিবসের আবহেই নন্দীগ্রামে মনোনয়ন পেশ মমতার, সমাপতন ?

এই মিষ্টি-উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন ক্রেতারা । মন ভরে স্বাদ নিচ্ছেন মিষ্টির । আর চাইছেন সব দলের মধ্যে রাজনৈতিক মিষ্টতা বজায় থাকুক । এক ক্রেতা জানাচ্ছেন, মিষ্টির স্বাদ দারুণ । অন্য জায়গাতে রাজনীতি বজায় থাকলেও মিষ্টির ক্ষেত্রে কিন্তু কোনও বাছবিচার নেই । একটাই কথা, মিষ্টির দোকানে এসে কোনও রাজনীতি নয় । ক্ষোভ থাকা দলকে না হোক, মিষ্টিতে কামড় বসিয়ে সুখ হাতাছাড়া করতে চাইছেন না কেউ-ই ।

মিষ্টিতে কামড় বসিয়ে সুখ নিচ্ছেন ক্রেতারা

সব মিলিয়ে ভোটের উত্তপ্ত রাজনীতির মধ্যে, লড়াইয়ের ময়দানে যে দলই জিতুক না কেন সমস্ত রাজনৈতিক তিক্ততা ভুলে সব দলের মধ্যে বজায় থাকুক রাজনৈতিক মিষ্টতার স্বাদ । এটাই চায় বাংলার সাধারণ মানুষ ।

কোনওটা কাস্তে হাতুড়ি, কোনওটা আবার পদ্মফুল কিংবা জোড়া ফুল দেওয়া সন্দেশ । এর মাধ্যমে কী বার্তা দিতে চাইছেন দোকানের মালিক? শুনে নিন
Last Updated : Mar 4, 2021, 4:57 PM IST

ABOUT THE AUTHOR

...view details