হাওড়া , 1 নভেম্বর : একটু বেশি রোজগারের আশায় নিজের রাজ্য ছেড়ে পাড়ি দিয়েছিলেন সুদূর মরুভূমির দেশে । বাবা মা, স্ত্রী সহ পরিবারের লোকেদের একটু স্বাচ্ছন্দ্য দেওয়ার জন্য স্বপ্ন চোখে বেড়িয়েছিলেন সাগর পেড়িয়ে স্বর্ণশিল্পে কাজ করতে । কিন্তু বর্তমানে বেতন দূরের কথা, অভিযোগ নিজেদের পাসপোর্ট ভিসা হারিয়ে এখন বাড়ি ফিরতে পারছেন না সৌদি আরবে আটকে থাকা প্রায় 20 জন স্বর্ণশিল্পী ।
দু'বছর আগে মুম্বই-এর এক এজেন্টের মাধ্যমে সৌদি আরবের জেদ্দায় সোনার কাজ করতে যান এই রাজ্যের 20 জন স্বর্ণশিল্পী ৷ জেদ্দার সোলেমানিয়া জেলার আল মুশালি নামের একটি সোনার গয়না প্রস্তুতকারক সংস্থায় কাজ করছিলেন তাঁরা । বর্তমানে ভিসা সমস্যায় সেখানেই গৃহবন্দী ৷ ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় আটকে তাঁরা ৷ তাঁদের মধ্যে রয়েছে হাওড়ার ডোমজুড় ব্লকের 2 জন, উলুবেরিয়ার ব্লকের 2 জন, এছাড়াও হুগলি, মেদিনীপুর, নদিয়ার কয়েকজন ৷
এরপরই সেই সংস্থায় শুরু হয় কর্মী ছাঁটাই ৷ সেখানে এক হাজার কর্মচারী থেকে বাদ পড়ে কর্মচারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে 200 জন । কাজ খোয়াতে হয় রাজ্যের এই ব্যক্তিদেরও । এই অচলাবস্থার মধ্যেই শেষ হয়ে যায় তাঁদের ভিসার মেয়াদ । ফলে একপ্রকার গৃহবন্দী হয়ে পড়েন 20 জন । সংস্থার মালিক থেকে সেখানকার পুলিশ এমনকি ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কিছুই লাভ হয়নি ।
গ্রেপ্তারির ভয়ে এখন গৃহবন্দী হয়েই দিন কাটাতে হচ্ছে তাঁদের । কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে হাতে টাকাও নেই । যোগাযোগ করে জানাতেও পারছিলেন না পরিবারকে । তবে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন প্রতিবেশীরা । প্রতিবেশীদের ফোন থেকে ভিডিও করে বাড়িতে পাঠিয়ে পুরো ঘটনাটি জানিয়েছেন তাঁরা । যে কারণে উদ্বেগ বাড়ছে তাঁদের বাড়ির সদস্যদের মধ্যে । পরিজনদের আবেদন সরকার যদি উদ্যোগ নেয় তাহলে হয়তো তাঁদের ঘরের ছেলেরা বাড়ি ফিরে আসতে পারবে ।
তাঁদের পরিবারের অভিযোগ, দু'বছর ধরে তাঁরা বাড়ি ফিরতে পারছেন না। কাজ শেষ হয়ে গেলে তাঁদের বাইরে বেরোতেও দেওয়া হয়নি । শুধু ফোনেই তাদের সঙ্গে কথা হয় ও বিষয়টি জানতে পারে তাঁদের পরিবার। তাঁরা চান, ছেলেরা বাড়ি ফিরে আসুক। বাড়িতেই থাকুক। প্রতিনিয়ত আশঙ্কার প্রহর গুনছেন তাঁরা।