হাওড়া, 17 অক্টোবর:সাধারণ হিসাব রক্ষক থেকে কোটি টাকার মালিক । হাওড়ার শৈলেশের উত্থানের গল্প হার মানাবে চলচ্চিত্রের স্ক্রিপ্টকেও । শনিবার রাত থেকে রবিবার রাত পর্যন্ত হাওড়া শহরের বাসিন্দা পেশায় চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট শৈলেশ পান্ডের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া মোট নগদ অর্থের পরিমাণ প্রায় 9 কোটি (Rs 9 Crore Recovered from Chartered Accountant House in Howrah)। নগদ অর্থের পাশাপাশি উদ্ধার হয় সোনা ও হীরের গয়নাও । একজন বিহার থেকে আসা সাধারণ হিসাবরক্ষক থেকে কয়েক বছরের মধ্যে কোটিপতি হওয়া শৈলেশের উত্থান ঘটেছে রকেটের গতিতেই । বছর পনেরো আগে দুই ভাই ও মাকে নিয়ে নিজের ভাগ্য অন্বেষণ করতে বিহার থেকে পশ্চিমবঙ্গে আসে শৈলেশ । হাওড়া শহরে ভাড়া বাড়িতে থাকতে শুরু করে তারা ৷
এখানে এসে লোকেদের আয়-ব্যয়ের হিসাব আয়কর বিভাগের অফিসে জমা করেই এই পেশাতে হাতেখড়ি শুরু হয় তার । মেজো ভাই বর্তমানে অন্য রাজ্যে কর্মসূত্রে থাকলেও বছরে এক দু'বার হাওড়ার বাড়িতে যাতায়াত করত । এদিকে লোকেদের আয়কর ফাইল জমা দেওয়ার কাজে নতুন নতুন প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়তে শুরু করে শৈলেশের । সেই যোগাযোগের প্রভাব খাটিয়ে ব্যক্তিগত ফাইল ছেড়ে বিভিন্ন কোম্পানির হিসাব সামলানোর দায়িত্ব নিতে শুরু করে সে ।
আরও পড়ুন :মন্দিরতলা থেকে উদ্ধার কয়েক কোটি টাকা, এলাকাবাসীর বিক্ষোভ
কীভাবে কোম্পানির লাভকে খরচ হিসাবে দেখিয়ে কম পরিমাণে অর্থ কর হিসাবে দেখানো যায় এই সমস্ত বিষয় নিয়ে কাজ করতে শুরু করে । এই কাজে ভালো অর্থ রোজগার হতে শুরু করলে মা ও ছোট ভাইকে নিয়ে সেই সান্তাসিং মোড়ের কাছে একটি নির্মীয়মাণ আবাসনে ফ্ল্যাট কেনে শৈলেশ । সেখানেই মা ও ছোট ভাইকে নিয়ে বসবাস করতে শুরু করে । এরপর তার নজরে আসে অন্য রাজ্যের কোম্পানিগুলো । নিজের প্রভাবশালী যোগাযোগের প্রভাব খাটিয়ে উপস্থিত বুদ্ধির জোরে একের পর এক কোম্পানির কাজ নেওয়া শুরু করে শৈলেশ । এতেই তার বিপুল পরিমাণ রোজগার বৃদ্ধি পায় । এই সময়েই সে শিবপুর মন্দিরতলার কৈপুকুর এলাকা ও ফরসোর রোডের ধারে অভিজাত আবাসন 'রিভার ডেল'-এ নতুন ফ্ল্যাট কেনে । পরবর্তীকালে সান্তাসিং মোড়ের ফ্ল্যাটটি ভাড়াতে দিয়ে দেয় সে । এই সময় থেকে রাজ্যের বাইরেই কাজের সূত্রে বেশিরভাগ সময় থাকতে হত শৈলেশকে । এভাবে পনেরো বছরের মধ্যেই বিহার থেকে আসা ছাপোষা শৈলেশ হয়ে ওঠে কয়েক কোটি টাকার মালিক । নিজের চাটার্ড অ্যাকাউন্ট পেশার সুযোগে বৈধ ও অবৈধ অর্থের লেনদেনেও নিজেকে যুক্ত করে ফেলে সে ।