হাওড়া, 31 জুলাই : ভারতের মুসলিম মহিলাদের কাছে আজ এক ঐতিহাসিক দিন । দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর অবশেষে লোকসভা এবং রাজ্যসভা দুই কক্ষেই পাশ হয়েছে তাৎক্ষণিক তিন তালাক বিল । যারপর স্বভাবতই খুশি তাৎক্ষণিক তিন তালাক নিয়ে মামলাকারীদের অন্যতম ইশরাত জাহান । শুভেচ্ছা জানালেন মুসলিম সমাজকে । কৃতজ্ঞতা জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ।
কেউ ফোনে, কেউ হোয়াটসঅ্যাপে বা কেউ চিঠিতে বিবিকে তাৎক্ষণিক তিন তালাক দিয়েছে । শওহরদের সেই সিদ্ধান্তের তথা গোটা মুসলিম সমাজের তাৎক্ষণিক তিন তালাক বিষয়টির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যান পাঁচ মহিলা । ইশরাত জাহান, শায়রা বানো, আতিয়া সাবরি, গুলশন পারভিন ও আরফিন রহমান । ইশরাত হাওড়ার বাসিন্দা । 2015 সালে তাঁর শওহর দুবাই থেকে ফোনে তালাক দেন । তারপর থেকেই শুরু লড়াই । বাকিদের সঙ্গে তিনিও তাৎক্ষণিক তিন তালাকের বিরোধিতা করে পৌঁছান সুপ্রিম কোর্টে । অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও লড়াই চালিয়ে গেছেন প্রত্যেকেই । 2017 সালে তাৎক্ষণিক তিন তালাক প্রথাকে অসাংবিধানিক তকমা দেয় সুপ্রিম কোর্ট । তারপরই তাৎক্ষণিক তিন তালাককে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করে বিল আনে মোদি সরকার । কিন্তু সেইসময় বিল পাশ করাতে ব্যর্থ হয় তারা ।
এবার ক্ষমতায় আসার পরই ফের ওই বিল নিয়ে উদ্যোগী হয় কেন্দ্র । শেষপর্যন্ত লোকসভার পর গতকাল রাজ্যসভায়ও বিলটি পাশ হয়েছে । যাতে তাৎক্ষণিক তিন তালাককে বেআইনি ঘোষণা করে কড়া শাস্তির প্রস্তাব রয়েছে । এবার থেকে তাৎক্ষণিক তিন তালাক ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে । শওহরের 3 বছর পর্যন্ত কারাবাস হতে পারে ।
আজ রাজ্যসভায় বিলটি পাশ হওয়ার পর ETV ভারতকে টেলিফোনে ইশরাত বলেন, তিনি খুব খুশি । মুসলিম মহিলাদের অধিকার রক্ষায় এই বিল সংসদে উপস্থাপন ও তা পাশ হওয়ার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে কৃতজ্ঞ । এর পাশাপাশি ইশরাত বলেন, "এই তাৎক্ষণিক তিন তালাকের জন্য মুসলিম মহিলাদের জীবন অন্ধকারে চলে যেত । এখন আর তা হবে না । আর পাশাপাশি আমি মুসলিম মহিলাদের শুভেচ্ছা জানাতে চাই । কারণ এই তালাক নিয়ে তাঁদের মনে যে ভয় কাজ করত আর তা থাকবে না ।" মুসলিম ভাইদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ইশরাত বলেন, "তাঁদের ঘরেও মেয়েবোনদের বিয়ের পর একই ভয়ে দিন কাটত । সেই ভয় থেকে মুক্তি পাবেন এবার তাঁরা ।"