জগাছা (হাওড়া), 12 সেপ্টেম্বর: হাতে মাত্র আর 5 দিন ৷ তার পরেই 17 সেপ্টেম্বর, শনিবার বিশ্বকর্মা পুজো (Vishwakarma Puja) ৷ এই উৎসবকে কেন্দ্র করে বাংলায় ঘুড়ির ব্যবসার রমরমা দেখা যায় ৷ কিন্তু, স্মার্ট ফোনের যুগে ঘুড়ি ওড়ানোর সেই রীতি আজ একেবারেই নেই ৷ ফলে মার খাচ্ছে ঘুড়ির ব্যবসা ৷ তবে, মন্দার মধ্যেও হাওড়ার জগাছায় ছবিটা একটু অন্যরকম ৷ যেখানে দেদার বিক্রি হচ্ছে ঘুড়ি ৷ তাও যে সে ঘুড়ি না, মা-মাটি-মানুষ লেখা এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া ঘুড়ি (TMC Maa Mati Manush Kite in Howrah) ৷ যার চাহিদাও অনেক বেশি বলে জানাচ্ছেন ঘুড়ি ব্যবসায়ীরা ৷
শেষ দু’বছরে করোনার অতিমারির জেরে ঘুড়ির বাজার সেভাবে ছিল না ৷ এ বছরেও মূল্যবৃদ্ধি প্রভাব ফেলেছে ঘুড়ির বাজারে ৷ কিন্তু, হাওড়ার জগাছার চড়কডাঙার বিখ্যাত ঘুড়ি বাজারে ছবিটা একটু অন্যরকম ৷ পেটকাটি, বাগদা, চাঁদিয়াল, বল বা চিল ঘুড়ির চাহিদা মোটামুটি ৷ কিন্তু, সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে, তা হল মা-মাটি-মানুষ লেখা ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া ঘুড়ি ৷
‘মা-মাটি-মানুষ’ লেখা ঘুড়ি হাওড়ার জগাছা চড়কডাঙার বাসিন্দা জয়দেব দে নিজেই ঘুড়ি তৈরি ও বিক্রি করেন ৷ তিনি জানান, এই বছর তৃণমূলের ‘মা মাটি মানুষ’ স্লোগান লেখা ঘুড়ির চাহিদা সবচেয়ে বেশি ৷ এই ঘুড়ি তিনি প্রায় দেড় হাজার পিস তৈরি করেছিলেন ৷ যার সবই প্রায় বিক্রি হয়ে গিয়েছে ৷ তবে, অন্যান্য ঘুড়ির ক্ষেত্রে ছবিটা সম্পূর্ণ আলাদা ৷ আর্থিক মন্দার প্রভাব অন্যান্য ঘুড়ির উপরেও পড়েছে ৷ রঙিন কাগজ, আঠা, কাঠি, মাঞ্জা ও লাটাইয়ের দাম বাড়ায় বিক্রিও কম ৷ তবে, এ সবের মধ্যেও আশার আলো দেখাচ্ছে তৃণমূলের প্রতীক, মা-মাটি-মানুষ লেখা ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি আঁকা ঘুড়ি ৷
চড়কডাঙায় তুঙ্গে ‘মা-মাটি-মানুষ’ লেখা ঘুড়ির চাহিদা আরও পড়ুন:ঘুড়ির বাজারে উলট পুরাণ, মন্দার দিনে চাঙ্গা ব্যবসা
প্রসঙ্গত, ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন আজ থেকে 10 বছর আগেও বিশ্বকর্মা পুজোর 2 মাস আগে থেকে ঘুড়ির চাহিদা থাকত তুঙ্গে ৷ পুজো যত এগিয়ে আসত, সেই চাহিদা বাড়ত, কমতো না ৷ কিন্তু, সেই সুদিন আর নেই ৷ স্মার্ট ফোনের যুগে ছেলেমেয়েরা বাইরের জগতের এই আনন্দগুলি থেকে দূরে সরে যাচ্ছে ৷ বদলে মোবাইলে অন লাইন গেম, ওয়েব সিরিজ, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিয়ো তৈরি এ সবেই বেশি আগ্রহ বর্তমান প্রজন্মের ৷ তাই আধুনিকতার ছোঁয়ায় কোথাও যেন হারিয়ে যাচ্ছে বাঙালির ঘুড়ি ওড়ানোর সেই চল ৷ তাও, গ্রামাঞ্চল ও মফঃস্বল এলাকায় এখনও ঘুড়ি ওড়ানোর আগ্রহ কিছুটা হলেও রয়েছে ৷ আর সেই আগ্রহকে আঁকড়ে বেঁচে রয়েছেন ঘুড়ি ব্যবসায়ীরা ৷