বালি, 12 জানুয়ারি: কোভিড আবহে ভোটের জল্পনা জিইয়ে রেখে প্রকাশিত হল বালি পৌরসভার(Bali Municipality) নতুন আসন বিন্যাসের তালিকা। যা নিয়ে আবারও বিতর্ক জেলা রাজনৈতিক মহলে। একইসঙ্গে জেলাশাসকের এক্তিয়ার নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। ফের বালি পৌরসভাকে নিয়ে বিতর্ক নতুন করে দানা বাঁধল। বালি পৌরসভার নির্বাচনের জল্পনা জিইয়ে রেখে সম্প্রতি হাওড়া জেলাশাসকের তরফ থেকে প্রকাশিত হল নতুন নির্দেশিকা। নির্দেশিকা সম্বলিত ওই চিঠি লেখা হয় রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। বালি পৌরসভার পূর্বের 16টি ওয়ার্ডকে 35টি ওয়ার্ডে ভাগ করা হয়েছে।
বালি পৌরসভার বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডকে সংরক্ষণের আওতায় আনা হয়েছে। মোট 35টি ওয়ার্ডের মধ্যে সংরক্ষণের আওতায় এসেছে 33টি ওয়ার্ড। এর মধ্যে 11টি ওয়ার্ড সংরক্ষিত করা হয়েছে তপশিলি জাতির (পুরুষ) প্রার্থীদের জন্য। পাশাপাশি 22টি ওয়ার্ডকে মহিলা সংরক্ষিত করা হয়েছে। এই 22টির মধ্যে 11টি আবার তপশিলি জাতি (মহিলা) সংরক্ষিত। বাকি 11টি শুধুমাত্র মহিলা সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। আর বাকি 2টি ওয়ার্ডকে এই সংরক্ষণের বাইরে রাখা হয়েছে। যদিও এই নির্দেশিকাতে তপশিলি উপজাতির জন্য কোনও আসন সংরক্ষিত করা হয়নি। এই নির্দেশিকা সম্বলিত চিঠিকে কেন্দ্র করে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে হাওড়া জেলা রাজনীতিতে।
বিরোধীরা মনে করছেন বালি বিল আইনে পরিবর্তিত না-হলে এভাবে রোস্টার বানিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে দেওয়ার এক্তিয়ার এই মুহূর্তে জেলাশাসকের নেই। কারণ হাওড়া পৌরনিগমের সংশোধনী বিলে এখনও রাজ্যপাল সই করেননি। ওই বিল এখনও আইনে রূপান্তরিত হয়নি। কার্যত আইনগত দিক থেকে বালি পৌরসভা এখনও হাওড়া পৌরনিগমের অংশ হিসেবেই রয়ে গিয়েছে। তাই জেলাশাসক এই ধরণের নির্দেশিকা সম্বলিত চিঠি জারি করতে পারেন না। এটা বৈধ নয়। এই প্রসঙ্গে ভারতীয় জনতা পার্টির রাজ্য সম্পাদক উমেশ রাই বলেন, "যেভাবে জেলাশাসক ওই রোস্টার তৈরি করেছে সেটা সংবিধান, গণতন্ত্র ও আইনের অপমান। তিনি দাবি করেন যেখানে রাজ্যপাল সই করেননি। তাই বালি এখনও হাওড়া পৌরনিগমের মধ্যেই অন্তর্ভুক্ত।" কীভাবে জেলাশাসক বালিকে আলাদা করে ফেললেন তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। একই ইস্যুতে জেলাশাসক ও রাজ্য সরকারকে এক হাত নেন জেলা সিপিএমের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য শঙ্কর মৈত্র। তিনি অভিযোগ করে বলেন, "গোটা বিষয়টি আইন সঙ্গত নয় ৷ বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে বেআইনি সমস্ত কিছুই আইনসঙ্গত। তৃণমূল কংগ্রেসের স্বৈরতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা চালাচ্ছে এই রাজ্যে।"
প্রকাশিত হল বালি পৌরসভার নতুন আসন বিন্যাসের তালিকা আরও পড়ুন: বকেয়া মহার্ঘ্য ভাতা ও গ্র্যাচুইটি, গ্রেফতার জুটমিলের ম্যানেজার
গোটা বিষয় নিয়ে হাওড়া জেলা সদর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা ডোমজুড়ের বিধায়ক কল্যাণ ঘোষ বলেন, "ইতিমধ্যেই বিধানসভায় বিল পাস হয়ে গিয়েছে। আজ নয় কাল রাজ্যপালকে বিলে সই করতেই হবে ৷ তাই সময় নষ্ট না করে প্রশাসন আগে থেকেই ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাসের প্রক্রিয়া এগিয়ে রাখছে। বিরোধীদের যদি মনে হয় গোটা বিষয়টি আইনসঙ্গত নয় তাহলে তারা অন্যান্য সব বিষয়ের মতোই কোর্টের দ্বারস্থ হন। যা হচ্ছে তা নিয়ম অনুসারেই হচ্ছে।" সব মিলিয়ে আবারও নতুন করে বালি বিল নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। এখন দেখার এই প্রকাশিত নতুন ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাসের তালিকা ভবিষ্যতে কতটা বৈধ হিসেবে গ্রাহ্য হয়।