পশ্চিমবঙ্গ

west bengal

ETV Bharat / state

Christmas In Belur Math: রীতিমেনেই বেলুড় মঠে বড়দিন পালন - পুরনো রীতিমেনেই বড়দিন পালন বেলুড় মঠে

রীতিমেনেই বেলুড় মঠে পালিত হবে বড়দিন (Christmas In Belur Math) ৷ বিশ্বের 27টি দেশের 237টি রামকৃষ্ণ মিশনে সন্ন্যাসীরা বড়দিন পালন করেন বলে জানানো হয়েছে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের তরফে ৷

Christmas In Belur Math
পুরনো রীতিমেনেই বড়দিন পালন বেলুড় মঠে

By

Published : Dec 24, 2021, 10:03 PM IST

বেলুড়, 24 ডিসেম্বর: ঠাকুর রামকৃষ্ণ বলেছিলেন,"আমি দীর্ঘ 14 বছর হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্ট, বৌদ্ধ সবভাবের সাধনা করেছি। আমি জেনেছি সব ধর্মের মূল সেই ঈশ্বর লাভ।" এই দর্শনকে সন্মান জানিয়েই বেলুড় মঠে বড়দিন উপলক্ষ্যে সন্ধেয় আলোর রোশনাইয়ে সেজে ওঠে বেলুড় মঠ ৷ 25 ডিসেম্বরের আগের দিন সন্ধ্যায় বিশ্বের সমস্ত রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনেই যীশু বন্দনা ও বাইবেল পাঠ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ৷ যীশুর ছবির সামনে রাখা হয় কেক, ফল, কফি ৷ সন্ধ্যা আরতির পর শুরু হয় যীশুর আরাধনা। শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের মন্দিরে যীশুর ছবি বসানো হয়। মোমবাতি, ফুল দিয়ে ছবি সাজানো হয়। ছবির সামনে দেওয়া হয় কেক, লজেন্স, ফল, পেস্ট্রি ও মিষ্টি। ক্যারলের মাধ্যমে পুজোর সূচনা হয়। ইংরেজি ও বাংলায় বাইবেল পাঠ করা হয়। উপস্থিত থাকেন বেলুড় মঠের সন্ন্যাসীরা (Christmas In Belur Math)। পরে যীশুর জন্মকাহিনী পাঠ করা হয়।

মঠের মহারাজরা জানিয়েছেন, ঠাকুরের প্রয়াণের 4 মাস পর হুগলির শ্রীরামপুরের এক গ্রামে স্বামীজি ও রামকৃষ্ণের অন্য শিষ্যরা সন্ন্যাস গ্রহণ করে গুরুকে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিয়েছিলেন ৷ পরে অন্তপুর গ্রামে একটি আশ্রম গড়ে তোলা হয় ৷ তখন থেকেই মিশনে বড়দিন পালনের রেওয়াজ রয়েছে ৷ বিশ্বের 27টি দেশের 237টি রামকৃষ্ণ মিশনে সন্ন্যাসীরা মিলে বড়দিন পালন করেন ৷ বেলুড় মঠ সূত্রে জানা যায়, একবার শীতকালে সকলে বাবুরাম মহারাজের দেশে গিয়াছিলেন। গঙ্গাধর মহারাজকে লইয়া সকলে খুব আনন্দ করিয়াছিলেন। ঘটনাক্রমে সকলের খেয়াল উঠিল যে ধুনি জ্বালিয়ে সকলে মণ্ডলাকারে বসিয়া রাত্রে বাইবেল পড়তে হবে। একটা স্থানে ধুনি জ্বালিয়া সকলে মণ্ডলাকারে বসিয়া রাত্রে বাইবেল পড়তে শুরু করে। সকলের অতি আনন্দে রাত্রিটা কাটিল। দু-একদিন পরে খবর হইল যে, সেটা খৃষ্টমাসের পূর্বাহ্ন ছিল। সকলেই বলিলেন তা বেশ হইয়াছে। এরপর থেকেই মঠে খৃষ্টমাস পালন শুরু হয়।

রীতিমেনেই বেলুড় মঠে বড়দিন পালন

আরও পড়ুন: কোভিড বিধি মেনে শ্রীমার জন্ম তিথি উপলক্ষে খোলা থাকবে বেলুড় মঠ

রামকৃষ্ণ মিশনে যীশুর জন্মদিন পালন নিয়ে নানান গল্প কথিত রয়েছে ৷ মঠ সূত্রে জানা যায়, শ্রীরামকৃষ্ণ সবরকম সাধনাই করেছিলেন দক্ষিণেশ্বরে। হিন্দুদের শৈব সাধনা, শক্তি সাধনা, বৈষ্ণব সাধনা, বেদান্ত সাধনার পর তাঁর ইচ্ছা হয়েছিল মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ কেমন করে ভগবানকে ডাকে তা জানার। পরবর্তীতে তিনি নামাজও পাঠ করেন। এরপরই খ্রিস্টানরা কেমন করে সাধনা করেন তাও জানার আগ্রহ প্রকাশ করেন ঠাকুর। এরপর এক ভক্তকে তিনি বলেন, খ্রিস্টান ধর্ম সম্পর্কে তাঁকে কিছু পড়ে শোনাতে। পরবর্তীতে সেই ভক্ত শ্রীরামকৃষ্ণ দেবকে বাইবেল বাংলায় পাঠ করে শোনান। পরে একবার দক্ষিণেশ্বরের যদু মল্লিকের বাগানবাড়িতে জমিদারদের বৈঠকখানায় ঠাকুর যাতায়াত করতেন। সেখানে গিয়ে ঠাকুর বাড়ির দেওয়ালে মেরির কোলে ছোট্ট যীশুর ছবি দেখতে পান। এরপর তিনি ওই ছবির দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকেন। ওই ছবি একসময় জ্যোতির্ময়, জীবন্ত হয়ে ওঠে তার চোখের সামনে। এরপর ঠাকুর ধ্যানস্থ হয়ে পড়েন। ওই অবস্থাতেই 3 দিন কেটে যায়। ওই সময়ে তিনি দক্ষিণেশ্বরে মায়ের মন্দিরে মাকে প্রনাম করতেও যেতেন না।

For All Latest Updates

ABOUT THE AUTHOR

...view details