বেলুড়, 24 ডিসেম্বর: ঠাকুর রামকৃষ্ণ বলেছিলেন,"আমি দীর্ঘ 14 বছর হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্ট, বৌদ্ধ সবভাবের সাধনা করেছি। আমি জেনেছি সব ধর্মের মূল সেই ঈশ্বর লাভ।" এই দর্শনকে সন্মান জানিয়েই বেলুড় মঠে বড়দিন উপলক্ষ্যে সন্ধেয় আলোর রোশনাইয়ে সেজে ওঠে বেলুড় মঠ ৷ 25 ডিসেম্বরের আগের দিন সন্ধ্যায় বিশ্বের সমস্ত রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনেই যীশু বন্দনা ও বাইবেল পাঠ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ৷ যীশুর ছবির সামনে রাখা হয় কেক, ফল, কফি ৷ সন্ধ্যা আরতির পর শুরু হয় যীশুর আরাধনা। শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের মন্দিরে যীশুর ছবি বসানো হয়। মোমবাতি, ফুল দিয়ে ছবি সাজানো হয়। ছবির সামনে দেওয়া হয় কেক, লজেন্স, ফল, পেস্ট্রি ও মিষ্টি। ক্যারলের মাধ্যমে পুজোর সূচনা হয়। ইংরেজি ও বাংলায় বাইবেল পাঠ করা হয়। উপস্থিত থাকেন বেলুড় মঠের সন্ন্যাসীরা (Christmas In Belur Math)। পরে যীশুর জন্মকাহিনী পাঠ করা হয়।
মঠের মহারাজরা জানিয়েছেন, ঠাকুরের প্রয়াণের 4 মাস পর হুগলির শ্রীরামপুরের এক গ্রামে স্বামীজি ও রামকৃষ্ণের অন্য শিষ্যরা সন্ন্যাস গ্রহণ করে গুরুকে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিয়েছিলেন ৷ পরে অন্তপুর গ্রামে একটি আশ্রম গড়ে তোলা হয় ৷ তখন থেকেই মিশনে বড়দিন পালনের রেওয়াজ রয়েছে ৷ বিশ্বের 27টি দেশের 237টি রামকৃষ্ণ মিশনে সন্ন্যাসীরা মিলে বড়দিন পালন করেন ৷ বেলুড় মঠ সূত্রে জানা যায়, একবার শীতকালে সকলে বাবুরাম মহারাজের দেশে গিয়াছিলেন। গঙ্গাধর মহারাজকে লইয়া সকলে খুব আনন্দ করিয়াছিলেন। ঘটনাক্রমে সকলের খেয়াল উঠিল যে ধুনি জ্বালিয়ে সকলে মণ্ডলাকারে বসিয়া রাত্রে বাইবেল পড়তে হবে। একটা স্থানে ধুনি জ্বালিয়া সকলে মণ্ডলাকারে বসিয়া রাত্রে বাইবেল পড়তে শুরু করে। সকলের অতি আনন্দে রাত্রিটা কাটিল। দু-একদিন পরে খবর হইল যে, সেটা খৃষ্টমাসের পূর্বাহ্ন ছিল। সকলেই বলিলেন তা বেশ হইয়াছে। এরপর থেকেই মঠে খৃষ্টমাস পালন শুরু হয়।