হুগলি , 3 এপ্রিল : হুগলিতে আজ এক যুবকের মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে । বুধবার জ্বর-সর্দি-কাশি সহ একাধিক উপসর্গ নিয়ে ওই যুবককে চুঁচু্ড়া হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভরতি করা হয়্ ৷ আজ ভোরে তাঁর মৃত্যু হয় ৷ স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, ওই যুবক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৷ তবে হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের দাবি , কোরোনাতেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর ৷ কোরোনায় মৃত্যু নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তথ্য গোপন করছেন বলে তাঁর অভিযোগ ৷
কোরোনায় মৃত্যু হয়েছে হুগলির যুবকের, দাবি লকেটের
ধনিয়াখালি হবিবপুর গ্রামের বছর সাতাশের যুবকের মৃত্যু কোরোনাতে হয়েছে ৷ এই দাবি করলেন হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় ৷
ধনিয়াখালির হবিবপুর গ্রামের বছর সাতাশের যুবক 16 মার্চ পটনা থেকে ফেরেন । দিন কয়েক আগে তাঁর জ্বর হয় । 25 মার্চ ধনিয়াখালি গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যান । সেখান থেকে তাঁকে চুঁচু্ড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে পাঠানো হয় । প্রাথমিক চিকিৎসার পর ওই যুবক বাড়ি ফিরে যায় । শ্বাসকষ্ট শুরু হলে বুধবার চুঁচু্ড়া হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে তাঁকে ভরতি করা হয় । আজ ভোরে তাঁর মৃত্যু হয় । হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছেবলে প্রাথমিকভাবে জানায় স্বাস্থ্য দপ্তর । যদিও গততে , যুবকের সোয়াব সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য স্কুল অফ ট্রপিক্যালে পাঠানো হয়েছে । মৃত যুবকের বাবা-মা-কে আপাতত সিঙ্গুর কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে । পরিবারের সদস্যদেরও হোম কোয়ারেন্টাইনে রেখেছে প্রশাসন । তবে ওই যুবকের সোয়াবের রিপোর্ট যতক্ষণ না আসছে , ততক্ষণ কিছু বলতে নারাজ স্বাস্থ্য দপ্তরও।
অন্যদিকে ,সোশাল মিডিয়ায় হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় ধনিয়াখালির যুবকের এই মৃত্যুতে কোরোনা সন্দেহের কথা জানিয়ে আজ একটি পোস্ট করেন । তিনি অভিযোগ করেন , কোরোনা মৃত্যু নিয়ে তথ্য গোপন করছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী । এই মৃত্যু নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে । তিনি লিখেছেন , "ধনিয়াখালি থানার হবিবপুর গ্রামের গোপীনাথপুর 2 নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা 26 - 27 বছরের এক যুবক দিন 14-15 আগে দিল্লি থেকে বাড়ি ফিরেছিলেন । দুই-চার দিন পর থেকে তাঁর জ্বর শুরু হয় । ভেবে নেয় যে স্বাভাবিক সর্দি-জ্বর । কিন্তু, 25 মার্চ তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হয় ৷ তখন ভরতি করা হয় ধনিয়াখালি হাসপাতালে ৷ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোরোনা সন্দেহে পাঠায় চুঁচুড়া হাসপাতালে ৷ কিন্তু চুঁচুড়া থেকে কিছু হয়নি বলে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয় । 29 মার্চ আবার শুরু হয় শ্বাসকষ্ট ৷ একইভাবে নিয়ে যাওয়া হয় ধনিয়াখালি হাসপাতালে । কিন্তু, আবারও তাঁকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয় । 30 মার্চ রাত থেকে শুরু হয় শ্বাসকষ্ট ৷ এত বাড়াবাড়ি হয় যে , ওই ছেলে কথা পর্যন্ত বলতে পারে না , হাঁটতে পারে না ৷ হাসপাতাল ও থানায় জানানো হলেও কোনও সাহায্য পাওয়া যায়নি । পর দিন 31 মার্চ সকালে স্থানীয় একজন চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ 90 শতা্ংশ কোরোনা সংক্রমণ সন্দেহে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে ভরতি করার পরামর্শ দেন । তখন হাসপাতাল ও থানায় বার বার জানিয়েও কোনও সাহায্য পাওয়া যায়নি ৷ মঙ্গলবার সারাদিন এইভাবে চলে যায়। বুধবার 11টা 30 নাগাদ আবার কন্ট্রোল OC-কে জানানো হলে পুলিশ এসেও কোনও ব্যবস্থা না করেই ফিরে যায় । পরে 1 টা 30-এর সময় হাসপাতাল থেকে পুলিশের লোক দিয়ে ছেলেটিকে তুলে নিয়ে যায় । বসিয়ে রাখা হয় ৷ পরে 5টার সময় হাসপাতালে ভরতি নেওয়া হয় । তারপর থেকে ছেলেটির কী চিকিৎসা হচ্ছে কিছুই জানা যায়নি ৷ হাসপাতাল কর্ত়পক্ষের থেকে শুধু বলা হয়েছে কোরোনা হয়নি । কীভাবে জানলেন ? জিজ্ঞাসা করলে জানানো হয়েছে , এক্সরে করে জানা গেছে । আজ সকালে জানা গেছে , ছেলেটি মারা গেছে । প্রথমে বলা হচ্ছিল ছেলেটির নিউমোনিয়া হয়েছিল ৷ এখন জানানো হচ্ছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে । আমাদের সন্দেহ ছেলেটির কোরোনা পরীক্ষা করা হয়নি ৷ 26 - 27 বছরের একটি যুবক নিউমোনিয়ায় মারা গেছে এই তথ্য মেনে নেওয়া যায় না । আমাদের দাবি , ম়তদেহটি এখনও হাসপাতালে আছে ৷ সেটি সঠিকভাবে পরীক্ষা করা হোক । ছেলেটির সঙ্গে অনেকে মেলামেশা করেছেন । তাই এখন 4টি গ্রাম খুব আতঙ্কে আছে । রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন, মৃত্যুর সঠিক তথ্য গোপন করছেন । "