উত্তরপাড়া , 24 অগাস্ট : হঠাৎ-ই মাথা যন্ত্রণা, বমি নিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন উত্তরপাড়ার বাসিন্দা পীযূষকান্তি ঘোষাল । কিন্তু তাঁর আর বাড়ি ফিরে আসা হল না । চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, ব্রেন ডেথে মৃত্যু হয়েছে তাঁর । এরপরই পরিবারের তরফে, তাঁর অঙ্গ প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় । পরিবারের বক্তব্য, তাঁদের যা ক্ষতি হওয়ার তো হয়ে গেল । একটাই সান্ত্বনা, অঙ্গদানের মাধ্যমে অন্যের মধ্যে বেঁচে থাকুক পীযূষ ।
উত্তরপাড়া লরেন্স স্ট্রিটের বাসিন্দা পীযূষকান্তি ঘোষাল । পেশায় কম্পিউটার রিপেয়ারিং ব্যবসায়ী । বাড়িতে বাবা, স্ত্রী, ছেলে, দাদা, বউদি রয়েছে । গত বুধবার হঠাৎ মাথার যন্ত্রণা শুরু হয় তাঁর । প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসক দেখানো হয় । এরপর কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয় । সিটি স্ক্যানে ধরা পড়ে যে, তাঁর ব্রেন টিউমার রয়েছে । তিনি কোমায় চলে যান । এরপর শুক্রবার চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, ব্রেন ডেথ হয়েছে তাঁর । পীযূষের অকস্মাৎ মৃত্যুতে ভেঙে পড়ে ঘোষাল পরিবার । এরপরই তাঁরা পীযূষের অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নেন । এরপরে শুরু হয় অঙ্গ গ্রহীতাদের খোঁজ । তাঁর দু'টি কিডনি , ত্বক SSKM হাসপাতালে পাঠানো হয় । তাছাড়া , তাঁর ফুসফুস হায়দরাবাদে অবস্থিত KIMS হাসপাতালের রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপিত হতে চলেছে । এ রাজ্যের ব্রেন ডেথ ঘোষিত কোনও রোগীর ফুসফুস অন্য রোগীর শরীরে এই প্রথম প্রতিস্থাপিত হতে চলেছে ।
পীযূষের বউদি মানসী ঘোষাল বলেন, হঠাৎই মাথার যন্ত্রণা । এখানে CT স্ক্যান করে দেখা যায় টিউমার আছে । কলকাতায় নিয়ে যাওয়া পর টিউমার পাওয়া যায় । তারপর থেকে অজ্ঞান ছিল । আর জ্ঞান ফেরেনি । আমাদের তো যা যাওয়ার গেল । আমরা চাই তাঁর অঙ্গ নিয়ে অন্য কেউ বাঁচুক ।
অঙ্গদানের মধ্যে দিয়ে বেঁচে থাকুক উত্তরপাড়ার পীযূষ - উত্তরপাড়ার পীযুষ ঘোষাল
উত্তরপাড়া লরেন্স স্ট্রিটের বাসিন্দা পীযূষকান্তি ঘোষাল । 22 অগাস্ট রাতে তাঁর ব্রেন ডেথ ঘোষণা হয় । এরপরই পরিবারের তরফে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় । তাদের একটাই বক্তব্য, অঙ্গদানের মাধ্যমে অন্যের মধ্যে বেঁচে থাকুক পীযূষ ।
অঙ্গদানের মধ্যে দিয়ে বেঁচে থাকুক উত্তরপাড়ার পীযুষ
প্রতিবেশী অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "দু-তিন মাস আগে স্পন্ডিলাইটিসের সমস্যা ছিল । বৃহস্পতিবার রাতে সমস্যা বাড়ে । মাথার যন্ত্রণা ও বমি করছিলেন । তারপর থেকেই অবস্থার আরও অবনতি ঘটে । এরপর চিকিৎসকেরা জানায় তাঁর ব্রেন ডেথ হয়েছে । বাড়ি এসে পরিবারের সকলের সঙ্গে আলোচনা করি । স্ত্রী ও তাঁর বাবাও অঙ্গ দানে সম্মতি দেয় । এই অঙ্গদানের মাধ্যমে অনেকের মধ্যে বেঁচে থাকুক পীযূষ । যাতে অন্য মানুষের উপকার হয়, তার জন্য সকলেই চেষ্টা করেছি । "
Last Updated : Aug 24, 2020, 3:35 PM IST