যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদানে আটকে হুগলির দু’জন সোনার কারিগর হুগলি, 11 মে: বেশ কয়েকদিন উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানে চলছে সেনা ও আধাসেনার লড়াই ৷ সেই লড়াইয়ে ওই দেশের পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে ৷ ফলে অনেকেই গৃহবন্দি হয়ে রয়েছেন ৷ অনেক ভারতীয় আটকে রয়েছেন সেখানে ৷ সেই ভারতীয়দের মধ্যে হুগলির বেশ কয়েকজন বাসিন্দা রয়েছেন ৷ তাঁরা মূলত সোনার কারিগর ৷ সেই কাজেই কয়েকমাস আগে তাঁরা সেখানে গিয়েছিলেন ৷ এই পরিস্থিতি হুগলিতে ওই সোনা-শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরা উদ্বিগ্ন ৷ তাই তাঁরা চাইছেন দ্রুত সুদান থেকে ফিরিয়ে আনা হোক আমিনুর-রহুলদের ৷
হুগলির হারিট জেটের বাসিন্দা আমিনুর রহমান মণ্ডল ৷ বছর 38 এর এই ব্যক্তি গত 15 ডিসেম্বর সুদানে গিয়েছিলেন ৷ এর আগে সোনার কারিগর হিসেবে তিনি কাজ করেছেন মুম্বই, হায়দরাবাদ-সহ দেশের বেশ কয়েকটি শহরে ৷ কিন্তু সেখানে উপার্জনের পরিমাণ বেশি ৷ তাই তিনি সুদানে যান বলে পরিবারের সদস্য়রা জানিয়েছেন ৷
সুদানে এক বাঙালি সোনা ব্যবসায়ী আরশাদ প্রধানের দোকান রয়েছে । তাঁর ব্যবসায়িক অংশীদার হুগলির বলাগড়ের শিমুলিয়ার বাসিন্দা শেখ রাহুল ৷ তিনি আমিনুর-সহ বেশ কয়েকজনকে কাজের জন্য নিয়ে যান সুদানে । তার পর থেকে তাঁরা সেখানেই রয়েছেন ৷ কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সেখানে থাকা বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে আমিনুরদের জন্য ৷ তাঁরা দেশে ফিরে আসতে চান ৷
যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদান নিয়ে ফেসবুক পোস্ট পরিবারের অভিযোগ, যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদান থেকে আসতে দিচ্ছেন না দোকান মালিক । ফোন কেড়ে নেওয়া হচ্ছে কারিগরদের কাছ থেকে । পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়ছেন ৷ ফলে আমিনুরের বৃদ্ধ বাবা, মা, স্ত্রী ও তিন মেয়ের উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছে ৷ আমিনুরের স্ত্রী হাসিনা মণ্ডল বলেন, ‘‘আমার স্বামী সোনার কাজের জন্য গিয়েছিলেন । আমরা স্বামীকে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হচ্ছে সবসময় । আমার তিন মেয়ে আব্বার জন্য কান্নাকাটি করছে । আমি চাই আমার স্বামী ফিরে আসুক ।’’
আমিনুরের এক আত্মীয় শেখ আব্দুল্লা বলেন, ‘‘যে দোকান মালিকের কাজে গিয়েছিলেন আমিনুর । তাঁদের বাড়িতে আমরা গিয়েছিলাম । কিন্তু আমাদের উপর পালটা হুমকি দেওয়া হচ্ছে । আমিনুরের উপরও সুদানে মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার করা হচ্ছে । আমরা দাদপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে ।’’ পরিবারের তরফে তাই প্রশাসনের কাছে সাহায্যের আবেদন করা হয়েছে ৷
একই পরিস্থিতি হুগলির পান্ডুয়াতেও ৷ সেখানকার গোয়ারা গ্রামের বাসিন্দা শেখ রহুল আমিন-সহ বেশ কয়েকজন সুদানে কাজে গিয়ে আটকে পড়েছেন ৷ তাঁর স্ত্রী আমিনা বিবিও দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন । গত সেপ্টেম্বরে 40 বছরের বয়সী রহুল সুদানে যান ৷ তাঁর পরিবারের দাবি, সুস্থ স্বাভাবিক অবস্থায় তাঁকে ফিরিয়ে আনা হোক ।
আরও পড়ুন:সুদানে এখনও পর্যন্ত 413 জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা