শ্রীরামপুর, 23 মে : দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ থাকার পর পানিহাটির প্রিন্টিং ব্যবসায়ীর মুণ্ডহীন দেহ উদ্ধার হয় শ্রীরামপুরের একটি জলাশয় থেকে ৷ মৃত ব্যবসায়ীর বাবা-মা প্রথম থেকেই তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনছিলেন ৷ এবার সেই ঘটনার কিনারা করল পুলিশ ৷ গ্রেফতার করা হয়েছে মৃতের স্ত্রী, তার বান্ধবী ও স্বামীকে (three along with victim wife arrested in serampore murder case) ৷
বিয়ের পর 1 মে স্ত্রীকে আনতে শ্বশুরবাড়ি যান শুভজ্যোতি বোস ৷ পরের দিনই বাড়ি ফেরার কথা ছিল তাঁর ৷ কিন্তু তারপর থেকে বাড়ি না ফেরায় 16 দিনের দিন তাঁর পরিবারের তরফে পুলিশে নিখোঁজ ডায়েরি করা হয় ৷ অন্যদিকে 2 মে শ্রীরামপুরে রাজ্যধরপুরে দিল্লি রোডের একটি নর্দমা থেকে গলাকাটা দেহ উদ্ধার করে পুলিশ । দেহের সঙ্গে মাথা না থাকায় চিহ্নিত করতে অসুবিধায় পড়েন পুলিশ আধিকারিকরা ৷ তদন্ত শুরু করে শ্রীরামপুর থানার পুলিশ । প্রথমদিকে পুলিশ কোনও হদিশ না পেলেও, পরে খড়দা থানায় 18 মে শুভজ্যোতির পরিবারের তরফে দায়ের করা নিখোঁজ ডায়েরির সঙ্গে কোনওভাবে মিল খুঁজে পায় পুলিশ ৷ শুভজ্যোতির হাতের ট্যাটু দেখে তাঁর দেহ শনাক্ত করে পরিবার । এরপর ঘটনার তদন্তে নেমে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য ৷
আরও পড়ুন :Body Found in Sreerampur : শ্রীরামপুরে মাথাকাটা দেহ উদ্ধারে চাঞ্চল্য, তদন্ত শুরু পুলিশের
যুবকের নাম শুভজ্যোতি বোস (31) । উত্তর 24 পরগনার পানিহাটির সুভাষ রোডের বাসিন্দা । ইনস্টাগ্রামে পরিচয় হওয়ার পর উত্তরপাড়ার বাসিন্দা চন্দনা চট্টোপাধ্যায় ওরফে পূজার সঙ্গে গত 13 মার্চ বিয়ে হয় শুভজ্যোতির । বিয়ের কয়েকদিন পর পূজা তার বান্ধবীর বাড়ি উত্তরপাড়ায় চলে আসে । তারপর থেকে মাঝে মধ্যেই উত্তরপাড়ায় আসত শুভজ্যোতি । 1 মে কোন্নগরে ডাকা হয় শুভজ্যোতিকে । সেখানে পূজার বান্ধবী শর্মিষ্ঠার স্বামী সুবীর আর শুভজ্যোতি মদ খায় ধারসার কাছে একটি ইটভাটায় । এরপর চপার দিয়ে তাঁর গলা কেটে গঙ্গায় ফেলে দেয় সুবীর । মৃতেদহ প্লাস্টিকে মুড়ে ট্রলি ভ্যানে চাপিয়ে শ্রীরামপুরে দিল্লী রোডের ধারে সেইল কারখানার পাঁচিল ঘেঁষা নর্দমায় ফেলে দেয় ।
পরদিন অর্থাৎ 2 মে শ্রীরামপুর থানার পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে । কিন্তু মুন্ডু না থাকায় ধন্দে পড়ে যান তদন্তকারীরা । আইসি শ্রীরামপুর দিব্যেন্দু দাসের নেতৃত্বে একটি দল গঠন করা হয় । আইসির সঙ্গে এসআই সৌমেন নাথ ও অনিমেষ হাজারি তদন্ত শুরু করেন । খড়দা থানা থেকে খবর পেয়ে শ্রীরামপুর মর্গে এসে ট্যাটু দেখে চিনতে ছেলেকে চিনতে পারেন শুভজ্যোতির বাবা ধ্রুবজ্যোতি বোস ।