হুগলি, 18 অগস্ট: দেবদেবীর পুজোয় শোলার ফুল ও মালার চাহিদা থাকে সর্বদাই । শারদোৎসবের সময় তা একেবারে তুঙ্গে ওঠে। প্রতিমার সাজ ও চাঁদমালা মণ্ডপে সর্বত্রই লাগে এই শোলার ফুল । এই সমস্ত শোলার কাজ হয়ে থাকে ব্যান্ডেল কেওটা মালাকার পাড়ায় । গোটা পাড়াতেই প্রায় পঞ্চাশ-ষাট পরিবার এই কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল । বর্তমানে কাঁচামালের চাহিদা না থাকায় শোলার কাজ কমেছে (Thermocol Industry is Suffering Due to Lack of Craftsman and raw materials)।
কাঁচা শোলার দাম বেড়েছে অনেকটাই ৷ খাটুনির তুলনায় আয় কম হওয়ায় বর্তমান প্রজন্মও আগ্রহী হচ্ছে না । গুটি কয়েক পরিবার এখন এই কাজ করে । তার উপর রয়েছে কারিগড়ের অভাব । তবে এতকিছুুর মধ্যেও পূর্ব পুরুষের পেশা ধরে রাখতে চাইছে কেউ কেউ । দুর্গাপুজোর সময় সেই কদম ফুলের চাহিদা থাকায় মালাকার পাড়ায় ব্যস্ততা এখন তুঙ্গে । বিভিন্ন রঙের কদম ফুল তৈরিতে ব্যস্ত মালাকাররা ৷
দুর্গাপুজোর আগে কারিগর ও কাঁচামালের অভাবে ধুঁকছে সোলার কদম ফুল শিল্প আরও পড়ুন:সরকারি সাহায্য না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়েই চলে গেলেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত শোলা শিল্পী অনন্ত মালাকার
কাঁচা শোলা রোদে শুকিয়ে মাপ মত কেটে খোসা ছাড়ানো হয় । সাদা শোলা কেটে নানা মাপের ফুল তৈরি হয় । চাহিদা মত রঙ লাগানো হয় তাতে । বাড়ি থেকে পাইকারি বিক্রি হয় এই শোলার ফুল । শোলার দাম অনেকটাই বেড়েছে গত বছরের থেকে তাই ফুলের দামও বাড়াতে হয়েছে কিছুটা । বছরের একটা নির্দিষ্ট সময় শোলা পাওয়া যায় । সেই শোলা কিনে মজুত করে রাখতে হয় । তাই একসঙ্গে অনেক টাকা লগ্নি করতে হয় । ব্যাঙ্ক ঋণ পেলে ব্যবসা চালাতে সুবিধা হয় বলে জানান মালাকাররা ।
এক মহিলা কারিগর ও ব্যবসায়ী পূর্ণিমা মালাকার জানান, বর্তমানে শোলার কদমফুলের চাহিদা ভালোই আছে । যোগান দিয়ে শেষ করা যায় না । অন্য কারিগর দিয়ে কাজ করা হয় । সারা বছরে 40 হাজার টাকার কাঁচামাল তুললে এক লক্ষ টাকার বিক্রি হয় ৷
আরও পড়ুন:শোলা শিল্পে মন্দা, পুজোর মরশুমেও রোজগারে টান চন্দ্রকোণার মালাকারদের
আরেক কারিগর ও ব্যবসায়ী পঙ্কজ মালাকার জানান, পয়লা বৈশাখ থেকে বিভিন্ন পুজোতে এই শোলার কদম ফুলের চাহিদা বাড়ে । এই শোলা বছরে কয়েকমাস মাত্র পাওয়া যায় । বাংলাদেশ থেকে এই শোলা আসে । সেভাবে আর এখানে হয় না । এই ব্যবসায় এখনও লাভ আছে । কিন্তু কাজ শেখার জন্য কেউ আসতে চায় না । আর আগাম টাকার জন্য ঋণের প্রয়োজন । এবিষয়ে দেখলে অনেক উপকার হয় । কাজ করলে বাড়ি থেকেই লোক এসে নিয়ে যায় ।